Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Boris Johnson

Britain PM: গান্ধীর চরকা থেকে মন্দিরে সাধুসঙ্গ প্রধানমন্ত্রী বরিসের

আশ্রমের ভিজ়িটর্স বুকে জনসন লেখেন, ‘‘এই অসামান্য মানুষটি কী ভাবে দুনিয়ায় বদল আনতে সত্য ও অহিংসার সহজ নীতিকে কাজে লাগিয়েছিলেন, এখানে এসে তা বুঝতে পেরে সমৃদ্ধ হলাম।’’

চরকায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বৃহস্পতিবার আমদাবাদের সাবরমতী আশ্রমে।

চরকায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বৃহস্পতিবার আমদাবাদের সাবরমতী আশ্রমে। ছবি : পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৪
Share: Save:

চরকায় সুতো কাটছেন বরিস জনসন। আসনপিঁড়ি হয়ে বসেছেন মাটিতে। পাশে এক মহিলা তাঁকে শিখিয়ে দিচ্ছেন, কী ভাবে চালাতে হয় চরকা। যে ছোটখাটো মানুষটির অহিংস আন্দোলন কাঁপিয়ে দিয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে, আজ তাঁরই ঘরে পা দিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। ১৯১৭ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত গুজরাতের এই সাবরমতী আশ্রমই ছিল মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর ঠিকানা।

আজ আমদাবাদ হয়ে দু’দিনের ভারত সফর শুরু করার পরে জনসনের প্রথম গন্তব্যই ছিল মহাত্মা গান্ধীর সাবরমতী আশ্রম। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল এবং আশ্রমের ট্রাস্টি কার্তিকেয় সারাভাই সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান। প্রায় আধ ঘণ্টা আশ্রমে ছিলেন জনসন। গান্ধী যেখানে থাকতেন, সেই ‘হৃদয় কুঞ্জ’, গান্ধীর বিদেশিনি শিষ্যা মীরাবেন (মেডেলিন স্লেড)-এর বাসস্থান ‘মীরা কুটির’ ঘুরে দেখেন তিনি। গান্ধীর মূর্তিতে মালা দেন। চলে যাওয়ার ঠিক আগে বসে পড়েন চরকায়। সাবরমতী আশ্রম প্রিজ়ার্ভেশন অ্যান্ড মেমোরিয়াল ট্রাস্টের তরফে তাঁর হাতে দু’টি বই তুলে দেন বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাইয়ের পুত্র কার্তিকেয়। আর দেওয়া হয় একটি চরকার প্রতিরূপ।

আশ্রমের মুখপাত্র বিরাট কোঠারি বলেন, ‘‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া দু’টি বইয়ের একটি হল, ‘গাইড টু লন্ডন’। এটি গান্ধীর লেখা প্রথম বই, যা কখনও প্রকাশিত হয়নি। লন্ডনে কী ভাবে থাকতে হয়, তা নিয়েই গান্ধী এখানে নিজের মতামত লিখেছিলেন। তাঁর রচনাবলি থেকে লেখাটি সংগ্রহ করে সেটিকে আলাদা বইয়ের চেহারা দিয়েছি আমরা।’’ অন্য বইটি মীরাবেনের আত্মজীবনী— ‘দ্য স্পিরিট’স পিলগ্রিমেজ’। আশ্রমের ভিজ়িটর্স বুকে জনসন লেখেন, ‘‘এই অসামান্য মানুষটি কী ভাবে দুনিয়ায় বদল আনতে সত্য ও অহিংসার সহজ নীতিকে কাজে লাগিয়েছিলেন, এখানে এসে তা বুঝতে পেরে সমৃদ্ধ হলাম।’’

ভারতে পা দিয়েই জনসন টুইট করেছিলেন, ‘‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতে এসে দারুণ লাগছে। একসঙ্গে আমাদের দুই দেশ বিরাট সম্ভাবনা ছুঁতে পারে। আমাদের অংশীদারিত্বেই আসবে চাকরি, বৃদ্ধি, সুযোগ। ভবিষ্যতে এই সহযোগিতা আরও মজবুত করতে চাই।’’ বিমানবন্দরে জনসনকে স্বাগত জানান গুজরাতের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী পটেল-সহ অন্য কয়েক জন মন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্তারা। আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে শুরু করে শহরে জনসনের ঠিকানা পাঁচতারা হোটেলটি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার ধারে গোটা চল্লিশেক মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যখন যাচ্ছে, তখন সেই মঞ্চগুলিতে আঞ্চলিক নাচগান করছিলেন শিল্পীরা। বিমানবন্দর থেকে দফনালা, রিভারফ্রন্ট হয়ে আশ্রম রোডের হোটেলে পৌঁছন জনসন। একটু পরেই যান গান্ধী আশ্রমে। সেখান থেকে আমদাবাদ-লাগোয়া শান্তিগ্রামে আদানি গোষ্ঠীর সদর দফতরে এসে বৈঠকে বসেন শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে।

রাজ্যের শিল্পপতিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পাশাপাশি পাঁচমহলে জেসিবি-র কারখানা, গান্ধীনগরে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি গুজরাত বায়োটেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা— ভারতের প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেই ঠাসা সফরসূচি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর। দিনের শেষে জনসন যান গান্ধীনগরের স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম মন্দিরে। সেখানে গেরুয়াবসন সন্ন্যাসীদের মাঝখানে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে ছবিও তোলান। আগামিকাল দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বসার কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

Boris Johnson Gujarat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy