একই এপিক নম্বরে একাধিক নাম সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাসের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আরও চাপ বড়াতে আগামী মঙ্গলবার তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য আহ্বায়ক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে ১০ জনের সংসদীয় প্রতিনিধি দল দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করবে। কী ভাবে তিন মাসের মধ্যে এই ভোটার তালিকা থেকে ডুপ্লিকেট এপিক নম্বর সরানো হবে, সেই প্রশ্ন তুলবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে কমিশনকে স্মারকলিপি দেবে তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল।
অন্য দিকে রাজ্য বিজেপির একটি প্রতিনিধি দলও মঙ্গলবারই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে আসছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, রাজ্যে তৃণমূল ১৭ লক্ষ ভোটারের নাম দু’টি করে বিধানসভায় ঢুকিয়ে রেখেছে। এখানে ভোটার তালিকা সংশোধনের দায়িত্ব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের। সেই দফতরে রাজ্য সরকার নিজেদের লোককে বসিয়ে রেখেছে। এই অভিযোগ নিয়ে কমিশনের কাছে আসছেন সুকান্ত মজুমদার, সঙ্গে থাকবেন অমিত মালবীয়। তবে এখনও পর্যন্ত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই দলে থাকার কথা নেই।
আগামী সোমবার ডুপ্লিকেট এপিক কার্ডের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যসভা এবং বিধানসভায় একগুচ্ছ নোটিস জমা দিয়েছেন তৃণমূল, আপ, এসপি, উদ্ধবপন্থী শিবসেনার মতো দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত মাসে নেতাজি ইনডোরে প্রথম বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তার পরেই তৃণমূল দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে এবং বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সমন্বয় শুরু করে। কিন্তু কংগ্রেস প্রথমে নোটিস জমা দেয়নি। তৃণমূলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের আলোচনা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মমতার উত্থাপিত বিষয়ে নিজেদের যুক্ত করে আন্দোলনের রাশ তৃণমূলের হাতে তুলে দিতে চাওয়া হয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, আজ বরফ গলতে চলেছে। অর্থাৎ কংগ্রেসও ডুপ্লিকেট এপিক নম্বর নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় নোটিস জমা দেবে। এই সিদ্ধান্ত তারা তৃণমূলকে জানিয়েছে।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক মর্মার্থ সুদূরপ্রসারী। আর এক বছর পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে নয়াদিল্লির রাজনীতিতে তৃণমূলের পদক্ষেপে কংগ্রেসের পা মেলানো একটি বড় ঘটনা যারা রাজ্যে যুযুধান। তা ছাড়া বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধের গোড়াতেই তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের এই সমন্বয় একটি প্রতীক তৈরি করতে পারে অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য, যা বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া-র জন্য সুখবর।
আজ ডেরেক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দেওয়া বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে দু’টি প্রশ্ন আমরা করতে চাইছি— ডুপ্লিকেট নম্বরের কতগুলি
ভোটার কার্ড বাজারে রয়েছে? দ্বিতীয়ত, যদি কমিশন না-ই জানে কতগুলি কার্ড রয়েছে, তারা কী ভাবে বলছে তিন মাসের মধ্যে সব শুধরে দিতে পারবে? এই প্রশ্নগুলি নিয়ে আমরা যাব নির্বাচন কমিশনে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)