গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মাস চারেক আগে আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়ে করজোড়ে বিচারককে বলেছিলেন, ‘‘আর সহ্য করতে পারছি না। এর চেয়ে আমার মৃত্যুই শ্রেয়।’’ শেষ পর্যন্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলায় অভিযুক্ত জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়ালের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল বম্বে হাই কোর্ট।
৭৫ বছরের গয়াল তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে স্ত্রী অনিতার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য তাঁর মুক্তির আর্জিও করেছিলেন আদালতে। তাতে সাড়া দিয়ে দু’মাসের জন্য ‘চিকিৎসাজনিত কারণে’ গয়ালকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, জামিনের শর্ত হিসাবে এক লক্ষ টাকা জমা রাখতে হবে জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতাকে। তা ছাড়া, নিম্ন আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি মুম্বইয়ের বাইরে যেতে পারবেন না।
গত বছরের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতা গয়াল। কানাড়া ব্যাঙ্কের ৫৩৮ কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুম্বইয়ে জেট এয়ারওয়েজ়ের অফিসে বেশ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইন (পিএমএলএ)-এর আওতায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ইডি।
আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, নরেশের প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে। মাঝেমধ্যে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়ে। হাঁটুর সমস্যার জন্য ঠিক মতো দাঁড়াতে পারেন না। আদালতে নরেশ জানান, তাঁর স্বাস্থ্যও সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে জেজে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে নরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন কানাড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয় নরেশ, তাঁর স্ত্রী অনিতা এবং গৌরাঙ্গ শেট্টি নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
অভিযোগে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, জেট এয়ারওয়েজ় (ইন্ডিয়া) লিমিটেডকে (জেআইএল) ৮৪৮.৮৬ কোটি টাকার যে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল তার মধ্যে ৫৩৮.৬২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ব্যাঙ্কের আরও অভিযোগ ছিল যে, জেআইএল নিজেদের অডিটে দেখিয়েছিল যে, তারা তাদের বিভিন্ন সংস্থাকে সীমার বাইরে গিয়ে ১৪০০ কোটিরও বেশি টাকা দিয়েছিল। সিবিআইয়ের এফআইআরে অভিযোগ করা হয়, জেট এয়ারওয়েজ় (ইন্ডিয়া) লিমিটেড (জেআইএল) এর নমুনা চুক্তিতে উল্লেখ করা রয়েছে যে জেনারেল সেলিং এজেন্টদের (জিএসএ) খরচ জিএসএ-র নিজেকেই বহন করতে হবে।
ইডির দাবি, তাদের তদন্তে দেখা গিয়েছে জেট জিএসএ-র নামে ৪০৩ কোটি টাকার যে খরচ দেখিয়েছে তা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত খরচেও জেটের টাকা ব্যবহার করেছেন নরেশ। ২০২৩ সালের মে মাসে নরেশের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছিল সিবিআই এবং আর্থিক তছরুপের মামলা করেছিল ইডি। তারই জেরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy