দীর্ঘ ৪৪ দিন পর অসমের ডিমা হাসাও জেলার পরিত্যক্ত কয়লা খনি থেকে উদ্ধার হল নিখোঁজ পাঁচ শ্রমিকের পচাগলা দেহ। খনিতে আটকে পড়া ন’জনের মধ্যে চার জনের দেহ আগেই উদ্ধার হয়েছিল। এত দিনে পাওয়া গেল বাকিদের দেহও।
অসম সরকার জানিয়েছে, এত দিনে কয়লা খনিতে আটকে থাকা সব শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সে রাজ্যের সরকার। আগেই নিহত চার শ্রমিকের পরিবারের হাতে ওই টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ছ’লক্ষ টাকা করে। তবে এখন ওই শ্রমিকদের দেহ উদ্ধার হওয়ায় তাঁরা আরও চার লক্ষ টাকা করে পাবেন।
ওই দুর্ঘটনার পর নিষিদ্ধ ‘র্যাট হোল মাইনিং’ পদ্ধতিতে খননকাজ নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছিল। ডিমা হাসাওয়ের ওই খনিটি অবৈধ বলেও দাবি করা হচ্ছিল। তবে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, অবৈধ নয়, এটি পরিত্যক্ত খনি। ১২ বছর ধরে খনিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। তিন বছর আগে পর্যন্ত সেটি ছিল অসম খনিজ উন্নয়ন পর্ষদের অধীনে। খনিটি প্রায় ৩১০ ফুট গভীর ছিল। তা ছাড়া, মূল পথটি ভিতরে গিয়ে চারটি ছোট ছোট সুড়ঙ্গে ভাগ হয়ে গিয়েছিল, তার আবার বেশ কিছু শাখা-প্রশাখা ছিল। উদ্ধারকারী দলগুলির কাছে খনির কোনও নীলনকশাও ছিল না। যে কারণে আটকে থাকা শ্রমিকদের খুঁজে বের করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
গত ৬ জানুয়ারি ডিমা হাসাওয়ের উমরাংসোর ৩১০ ফুট গভীর ওই পরিত্যক্ত খনিতে কয়লার খোঁজে নেমেছিলেন শ্রমিকেরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জলপাইগুড়ির এক বাসিন্দাও। কিন্তু আচমকাই ওই খনিতে হু-হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। ভিতরেই আটকে পড়েন ন’জন শ্রমিক। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকাজে নামে নৌবাহিনীর প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল। কিন্তু কাউকেই জীবিত অবস্থায় বাঁচানো যায়নি। ৮ জানুয়ারি তাঁদের মধ্যে এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। গঙ্গাবাহাদুর শ্রেষ্ঠা নামে ওই শ্রমিক নেপাল থেকে এসেছিলেন কাজ করতে। এর তিন দিন পর উদ্ধার হয় আরও তিনটি দেহ। তাঁদের নাম লিগেন মগর (২৭), খুশি মোহন রাই (৫৭) এবং শরৎ গোয়ারি (৩৭)। লিগেন ডিমা হাসাওয়ের কালামাটির, খুশি কোকড়াঝার জেলার ফকিরগ্রাম এবং শরৎ শোণিতপুরের থাইলাপারার বাসিন্দা ছিলেন। এ বার বাকি পাঁচ শ্রমিকের দেহ মিলল।