মহাত্মা গাঁধীর প্রপৌত্র তুষার গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
‘‘হিন্দু রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ার হতাশায় ১৯৪৮ সালে তিনটি গুলি চলেছিল দিল্লিতে। গাঁধীর বুক লক্ষ্য করে। এখন সেই হিন্দু রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্নে বুঁদ হয়েই ফের তিনটি গুলি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনসিআর) এবং জাতীয় জনগণনা পঞ্জি (এনপিআর)।’’— দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে এ ভাবেই আঙুল তুললেন মহাত্মা গাঁধীর প্রপৌত্র তুষার গাঁধী।
বিজেপি এবং ব্রাহ্মণ্যবাদের কট্টর সমালোচক হিসেবে বরাবর পরিচিত তুষারের অভিযোগ, যে সরকার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বার বার দেড়শোতম গাঁধী জয়ন্তী পালনের কথা বলছে, আসলে গাঁধীর চিন্তা-ভাবনা, আদর্শকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে চায় তারা। আঁকড়ে ধরতে চায় ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের নীতি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এই অনুষ্ঠানে ওই তিন প্রকল্পের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন তিনি।
গাঁধী সম্পর্কে মোদী সরকারের দ্বিচারিতার কথা এ দিন বলেছেন সমাজকর্মী মেধা পাটেকরও। তাঁর অভিযোগ, এই সরকার ফুল-মালা দিয়ে গাঁধীর মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানায়। কিন্তু সামাজিক, রাজনৈতিক, আর্থিক— সমস্ত নীতির ক্ষেত্রে হাঁটে ঠিক উল্টো পথে। তুষারের অভিযোগ, দিল্লির গাঁধী স্মৃতি (যেখানে মহাত্মা গাঁধী নিহত হন) থেকে হালে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিখ্যাত ফরাসি ফোটোগ্রাফার অঁরি কার্তিয়ে ব্রেসঁ-র তোলা বাপুর বেশ কিছু ছবি। এবং তা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস দমনে কঠোর হতে হবে, বললেন রাওয়ত
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী করুণা নন্দীর অভিযোগ, সরকারের দাবি মতো এনপিআর জনগণনার অঙ্গ হলে বাবা-মায়ের জন্মস্থান বা মাতৃভাষা জানতে চাওয়া হবে কেন? কেনই বা নতুন নাগরিকত্ব আইনে শরণার্থীকে ঠাঁই দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য হবে ধর্ম? সারা দেশে পড়ুয়া ও আমজনতার এই প্রতিবাদ কার্যত ‘স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ’ বলে তাঁর দাবি।
আরও পড়ুন: সঙ্ঘের সম্মেলনে সিএএ নিয়ে ক্ষোভ
মেধার দাবি, আসল সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতেই সারা দেশকে সিএএ-এনপিআর-এনআরসিতে ব্যস্ত রাখতে চায় মোদী-অমিত শাহের সরকার। মেধার অভিযোগ, কখনও উগ্র জাতীয়তাবাদ তো কখনও এনআরসি, এ সব নিয়ে দেশ উত্তাল হয়। আর সেই ফাঁকে চুপিচুপি জলের দরে পছন্দের শিল্পপতির কাছে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি করে কেন্দ্র। জেএনইউয়ে ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষের উপরে হামলা, জামিয়ার ক্যাম্পাসে পুলিশি তাণ্ডবেরও নিন্দা করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy