অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
মাইক হাতে নিয়েই বললেন, ‘ভারত মাতা কি জয়!’
কিন্তু জনতার স্বর তত জোরালো হয়ে ফিরে এল না। অমিত শাহ এ বারে বললেন, ‘‘ভারত মাতার প্রতি সঙ্কল্প, এত কম স্বর! রাহুলবাবা বিদেশে থাকলেও যেন শুনতে পান, এমন আওয়াজ চাই!’’
কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানের জোধপুরে পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের জড়ো করে অমিত শাহের জনসভা। যাঁদের নাগরিকত্ব দিতেই আইন হয়েছে সম্প্রতি। বিরোধে দেশের নানা প্রান্ত যা নিয়ে উত্তাল। অমিত শাহ কথায় কথায় রাহুল গাঁধীকে আক্রমণ করছেন। ‘রাহুলবাবা’ আইন পড়ে থাকলে সরাসরি বিতর্কে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। আর না পড়লে ইটালীয় ভাষায় অনুবাদ করে দেওয়ার কথাও বলছেন।
কিন্তু এই অমিত শাহই রবিবার থেকে ঘরে ঘরে গিয়ে এই আইন বোঝানোর কাজটি শুরু করছেন। দিল্লির দশটি বাড়িতে যাবেন তিনি। বাকি নেতারা দেশের অন্য শহরে।
কিন্তু কেন? বিজেপি বলছে, কারণ অমিত শাহ নিজেই। এত দিন ধরে বুক বাজিয়ে পর্যায়ক্রম বুঝিয়েছেন— প্রথমে নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), তার পরে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)। এখন দুইয়ের সেই সম্পর্কটি জোর করে ভেঙে দিতে হচ্ছে। বোঝাতে হচ্ছে, সিএএ-র সঙ্গে এনআরসি-র কোনও সম্পর্ক নেই। এখন শুধু সিএএ হয়েছে। সামনে জনগণনা ও জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) হবে। তার সঙ্গেও এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই!
আরও পড়ুন-স্বাধীনতার কোজাগরী শাহিনবাগ, জামিয়ায়
বিজেপির এক নেতা বললেন, ‘‘সমস্যার এখানেই শেষ নয়। চারটি আরও সমস্যা আছে। এক, দেশজুড়ে যে আন্দোলন হচ্ছে, তাতে মুসলিমদের সঙ্গে দলিতরাও যোগ দিচ্ছেন। যে কারণে এখন আরও বেশি করে ভাবতে হচ্ছে, দলিতদের আরও কী করে সমর্থনে টানা যায়। দুই, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ও আধুনিক মনস্করা এখনও নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে স্বর তুলছেন না। তিন, মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা হাতছাড়া ও ঝাড়খণ্ডে হারের পর সামনে দিল্লিতেও পরিস্থিতি অনুকূল নয়। অমিত শাহও বলতে পারছেন না, কত আসন পাবে বিজেপি? চার, এ সবের মধ্যে বিজেপি যতই হিন্দু-মুসলিমের ফায়দা তুলতে চাইছে, রাহুল এই আইনকে ‘গরিব-বিরোধী’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। নোটবন্দির আতঙ্ক ফিরিয়ে এনে বলছেন, ‘এই আইন আরও বিপদ আনবে!’
এই পাঁচ সমস্যা মোকাবিলা করতেই তিন কোটি পরিবারের ঘরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি জেলায় জনসভা, বিশিষ্ট জন ও পেশাদারদের বোঝানো, যুবক ও দলিতদের সঙ্গে নেওয়া, ক্রীড়াবিদ-তারকা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে শামিল করা, আড়াইশো সাংবাদিক বৈঠক, এক লক্ষ পথনাটিকা, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার— এক ব্যাপক অভিযানে নামার নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ। রবিবার ভোটমুখী দিল্লিতে ঘরে ঘরে প্রচার শুরু করবেন বিজেপি সভাপতি। বাকি শহরে অন্য নেতারা। কলকাতায় বাবুল সুপ্রিয়। বাড়ি গিয়ে বোঝানোর পর বলা হবে ‘মিস্ড কল’ দিন একটি বিশেষ নম্বরে, নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে।
এর আগে আজই জোধপুরের সভায় নিশানা করলেন রাহুলকে। বললেন, ‘‘নেহরু-গাঁধী-পটেল-মৌলানা আজাদ থেকে মনমোহন সিংহ হিন্দু-শিখদের আশ্রয়ের কথা বলেছেন। তাঁরা সাম্প্রদায়িক? ভোটব্যাঙ্কের ভয়ে তাঁরা সাহস দেখাননি, ৫৬ ইঞ্চি ছাতির মোদী দেখিয়েছেন।’’ বিজেপি আজ রাজস্থানের গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ইস্তাহারের উল্লেখও করেছে, যেখানে পাকিস্তান থেকে আসা লোকেদের নাগরিকত্ব ও পুনর্বাসন সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
কংগ্রেস অবশ্য রাহুলের বিরুদ্ধে অমিতের আক্রমণেরই জবাব দিয়েছে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা অমিত শাহকে নিশানা করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আপনাকে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাজ দিয়েছেন, বিরোধী নেতাদের গাল দিতে নয়। আপনার শরিক দলগুলি আর নিজেদের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালই সিএএ মানছে না। আপনাকে হিন্দি অনুবাদ পাঠাব?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy