নতুন অবতারে সুকান্ত মজুমদার এবং জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্যাশন মডেল বললেই চোখে ভাসে ঝাঁ-চকচকে হোটেলে আলো ঝলমলে র্যাম্প। আর ‘মডেল’ যদি অন্য পেশার হন, সেটা হয় চলচ্চিত্র জগৎ নয়তো ক্রীড়ার। কিন্তু সময় বদলেছে। র্যাম্প যে কেবল অভিনেতাদের কুক্ষিগত নয়, সুযোগ পেলে রাজনৈতিক নেতারাও সেখানে উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারেন, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এক জন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে, অন্য জন ওই মন্ত্রকেরই প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সম্প্রতি দিল্লির ভারত মণ্ডপমে আয়োজিত অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব ফ্যাশন শোয়ে র্যাম্পে হেঁটেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত। উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা সুকান্ত ‘মডেল’ হিসাবে চমকে দিয়েছেন সকলকে। তাঁর র্যাম্পের হাঁটার ভিডিয়ো পোস্ট করে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জ্যোতিরাদিত্য।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশভূষা, স্টাইলের উদ্যাপন এবং প্রচারের লক্ষ্যে এই প্রথম বার কোনও ফ্যাশন শো ছিল নয়াদিল্লিতে। তাতেই যোগ দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের দুই মন্ত্রী। র্যাম্পে সুকান্তের পরনে ছিল ঘিয়ে রঙের ব্লেজার এবং ছাই রঙের ট্রাউজার্স। গলায় নকশা কাটা কমলা রঙের স্কার্ফ। পায়ে মানানসই জুতো। আর ‘বস’ জ্যোতিরাদিত্য পরেছিলেন ঘিয়ে রঙের উপর কালো-সোনালি নকশার ব্লেজার এবং কালো ট্রাউজার্স। তাঁর গলাতেও ছিল মানানসই স্কার্ফ এবং জুতো। দুই মন্ত্রীকে র্যাম্পে দেখে মনেই হয়নি যে তাঁরা পেশাদার নন।
রাজ্যের নানা সভা-অনুষ্ঠানে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবিতেই দেখা যায় সুকান্তকে। গড়পড়তা বাঙালি পুরুষের মতোই সাধারণ পোশাক পরেন। ফ্যাশন নিয়ে যে বিশেষ মাথা ঘামান, এমন তথ্য ঘনিষ্ঠেরাও দিতে পারেননি। সেই সুকান্তের এমন বেশভূষা এবং র্যাম্পে হাঁটা চমক তো বটেই। তা ছাড়া র্যাম্পে তাঁর ‘ওয়াক’ দেখে মনে হয়নি যে ‘মডেল’ হিসাবে তিনি আনকোরা এবং নতুন। জ্যোতিরাদিত্যকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) জ্যোতিরাদিত্য নিজের এবং সুকান্তের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘উত্তর-পূর্বের প্রত্যেকটি রাজ্যের প্রতিভাবান শিল্পী এবং মডেলরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। এমন একটি অনুষ্ঠানে আমার সহকর্মী সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি সম্মানিত।’’
প্রথম বার র্যাম্পে হাঁটার অভিজ্ঞতা কেমন? আনন্দবাজার অনলাইনকে সুকান্ত বলেন, ‘‘চিরকাল উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি ছিল অবহেলিত এবং বঞ্চিত। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে আট রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার আনলেন। সেই কাজ তিনি নাগাড়ে করে চলেছেন। আমার সৌভাগ্য, আমিও সেই কাজে অংশ নিয়েছি।’’ রাজ্য বিজেপি সভাপতির সংযোজন, ‘‘র্যাম্পে হাঁটা আমার কাজ নয়। তবে মোদীজির উন্নয়নের পথ ধরেই হেঁটেছি। বাংলার জন্য এমন কিছু হলে সেখানেও থাকব।’’
মডেল হিসাবে সুকান্তকে ১০-১০ দিয়েছেন পোশাকশিল্পী তথা বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। প্রচুর র্যাম্প শোয়ে উপস্থিত থেকেছেন তিনি। তবে দুই আনকোরা মন্ত্রী মডেল হিসাবে তাঁকে মুগ্ধ করেছে বলে জানালেন অগ্নি। তাঁর কথায়, ‘‘সুকান্তবাবু এবং জ্যোতিরাদিত্যজি ‘স্মার্টলি’ চেষ্টা করেছেন। তাঁরা এর আগে কোনও র্যাম্পে হেঁটেছেন বলে আমার অন্তত মনে পড়ছে না। আর এই উদ্যোগের পিছনে একটি মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। তাই শুধু ঠিক ভাবে হাঁটলেন কি না, কোমরে ঠিক ভাবে হাত রাখলেন কি না, দাঁড়ানোর ভঙ্গিটা কেমন ছিল, অত গভীরে না গিয়ে দু’জনকেই আমার কুর্নিশ জানাচ্ছি।’’ বস্তুত, উত্তর-পূর্ব ভারতের বস্ত্র শিল্পের প্রচার এবং শিল্পীদের কাজকে সকলের সামনে আনার জন্য ওই ফ্যাশন শো। এ বার থেকে প্রতি বছর এমন একটি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানাচ্ছে সরকারি সূত্র। অষ্টলক্ষ্মী উৎসবে থাকছে গ্রামীণ হাট। যেখানে উত্তর-পূর্বের শিল্পীদের তৈরি নানা জিনিস কিনতে পারবেন দর্শনার্থীরা। থাকছে নাচ-গান-সহ নানা অনুষ্ঠান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy