ফাইল চিত্র।
ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন উত্তরপ্রদেশে। সেই ভোটের প্রস্তুতি কেমন হবে তা ঠিক করতে আজ থেকে মাঠে নেমে পড়লেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগামী দিনে উত্তরপ্রদেশে সরকার ধরে রাখতে কী ভাবে এগোনো হবে তা ঠিক করতে উত্তরপ্রদেশের নেতাদের সঙ্গে আজ একপ্রস্ত বৈঠক হয়। কালও ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। যাতে যোগ দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও।
প্রশ্ন ছিল, উত্তরপ্রদেশে আগামী বিধানসভার মুখ কে হবেন তা নিয়েও। এ নিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশায় ছিলেন দলীয় কর্মীরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চলতি মাসের বেনারস সফরে স্পষ্ট করে দেন, যোগীকে সামনে রেখেই ভোটে লড়বে দল। যোগীকে নিয়ে বাহ্মণ ও তথাকথিত অন্ত্যজ শ্রেণির মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও আপাতত যোগীতেই ভরসা রাখা হবে। ফলে মুখ ঘিরে সংশয় দূর হওয়ায় এ বার সামগ্রিক কৌশল রচনায় মনোযোগ দিয়েছে দল। দেশ জুড়ে চলা কৃষক বিক্ষোভের রেশ পড়েছে উত্তরপ্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায়। কৃষকদের সেই ক্ষোভ কী ভাবে মেটানো হবে, তা নিয়ে এখনও দ্বিধায় দলীয় নেতৃত্ব।
পাঁচ বছরের যোগী শাসনে রাজ্যে বেশ কিছু বিষয়ে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া তীব্র, তা গত কিছু দিন ধরে লখনউয়ের মাটিতে পা দিয়েই বুঝতে পারছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিশেষ কোভিড নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা, করোনায় লাগামছাড়া মৃত্যু, লোকের চাকরি হারানো, কেন্দ্রের রেশন-বন্টন সুষ্ঠু ভাবে না হওয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমা হয়েছে। আগামী দিনগুলিতে তাই সুষ্ঠু প্রশাসন চালানোয় আরও বেশি জোর দেওয়া, সরকারের কাজের সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াকে নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্য বা রেশনে বণ্টনে দুর্নীতি এড়াতে যোগী প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। যে নির্দেশ মেনে আজ রাজ্যের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির জন্য স্বাস্থ্য কার্ডের ঘোষণা করেন যোগী। যারা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বাইরে থেকে গিয়েছেন, মূলত তাদের জন্যই এই প্রকল্প। ওই কার্ড থাকলে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পাবেন রাজ্যের বাসিন্দারা। এ ছাড়া ফেরিওয়ালা ও পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যে তহবিল গড়ে করোনার কারণে কাজ হারানোদের আর্থিক ভাবে সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন যোগী। যে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হতে চলেছে।
সরকারের জনকল্যাণকামী কাজকে সামনে রেখে ভোটারদের মন জয়ের সঙ্গেই দলের সাধারণ কর্মীদের নতুন করে চাঙ্গা করে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে কিংবা করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেক কর্মী বাড়িতে বসে গিয়েছেন। তাদের আবার নতুন করে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। দলের প্রতিটি জেলা পর্যায়ের পদাধিকারীদের বসে যাওয়া কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সমস্যার কথা শুনতে বলা হয়েছে।’’
আজকের বৈঠকে রাজ্য বিজেপির নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, রাজ্যের ৭৫টি জেলাতেই প্রতিটি গ্রাম ও শহরে ১১ সদস্যের বুথ কমিটি রয়েছে। যাদের ইতিমধ্যেই দলের সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরে ঘরে ঘরে প্রচারে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলের একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মী যাকে ‘পন্না প্রমুখ’ বলা হয়ে থাকে, তাদের আলাদা করে গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বকে। বিজেপির ওই পন্না প্রমুখেরাই কোনও একটি এলাকায় ভোটার স্লিপ বিতরণের দায়িত্বে থাকেন। বিজেপি মনে করে, দলের সঙ্গে ভোটারদের যোগাযোগের প্রধান সেতুই হল পন্না প্রমুখেরা। একই সঙ্গে স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে মাথায় রেখে উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি বিধানসভা এলাকার গ্রামগুলিতে সাংসজদের সফর করে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে বলা হয়েছে।
বিজেপি সূত্রের মতে, আগামী ছয় মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের সুফল তুলে ধরতে বারংবার রাজ্য সফরে যাবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ওই তালিকায় রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও দলীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। কেবল অগস্ট মাসেই তিন বার উত্তরপ্রদেশ যাবেন প্রধানমন্ত্রী। ১ অগস্ট রাজ্য ফরেন্সিক ভবনের শিলান্যাস করতে লখনউ যাওয়ার কথা রয়েছে শাহের। আগামী মাসের ৮ ও ৯ অগস্ট উত্তরপ্রদেশে গিয়ে দলের ভোট প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে নড্ডারও। সেখানে জনসভা করারও কথা রয়েছে তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy