ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপি প্রশ্ন তুললেও, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নীতীশ কুমারের উপরেই আস্থা রাখছেন শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, গত শনিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করে আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিহারে এনডিএ জোটের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারই থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেন বিজেপি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান।
সম্প্রতি বেসুরে বাজছিলেন নীতীশ। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে অসযোগিতার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী লালুপ্রসাদের দল আরজেডি-র সঙ্গে। গত বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশের দলের চেয়ে প্রায় দেড় গুণ আসন বেশি পাওয়ায় এ বার গোড়া থেকেই নীতীশের উপরে বিভিন্ন বিষয়ে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এর ফলে চলতি সরকারের একেবারে গোড়া থেকেই মন কষাকষি জারি রয়েছে উভয় শিবিরে। সম্প্রতি ওই তিক্ততা আরও বাড়ে। বিহার মন্ত্রিসভায় বিজেপির কিছু মন্ত্রীর কাজের খতিয়ানে আদৌ খুশি ছিলেন না নীতীশ। ঘরোয়া ভাবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে ওই মন্ত্রীদের পরিবর্তন করার জন্য প্রস্তাব দেন নীতীশ। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, দল ওই পরিবর্তনের পক্ষে নয়। উল্টে নীতীশের দল জেডিইউয়ের মন্ত্রীদের কাজের সমালোচনা করে সরব হয় রাজ্য বিজেপি নেতারা, যা মোটেই ভাল ভাবে নেননি নীতীশ। পাল্টা চাপে ইফতারের অনুষ্ঠানে লালুপ্রসাদের বাড়িতে পৌঁছে যান নীতীশ। যে বার্তা যথেষ্ট ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।
বর্তমানে বিহারে আসন সংখ্যার হিসাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নীতীশের দল। ফলে বিজেপির সমর্থন ছাড়া ওই রাজ্যে সরকার টিকিয়ে রাখা মুশকিল নীতীশের পক্ষে। রাজনীতির অনেকের মতে, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব অসহযোগিতার মনোভাব দেখানোয়, তিনি যে ক্ষুব্ধ সেই বার্তা দিতে আরজেডি শিবিরের সঙ্গে প্রকাশ্যেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর কৌশল নেন নীতীশ। আসন প্রাপ্তির হিসাবে ওই রাজ্যে শীর্ষ রয়েছে আরজেডি। ফলে লালুপ্রসাদের সঙ্গে হাত মেলালে নীতীশের সরকার গড়ার প্রশ্নে যে সমস্যা হবে না, তা বুঝতে পারছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ দিকে সামনেই রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে নতুন করে বিহারে ক্ষমতা থেকে সরে গেলে তার প্রভাব এক দিকে যেমন রাষ্ট্রপতি-উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পড়বে, তেমনি ২০২৪ সালের লোকসভায় বিহারে একা লড়লে দলের ভরাডুবির আশঙ্কা যে রয়েছে তা বুঝতে পারছিলেন শীর্ষ বিজেপি নেতারা। তা ছাড়া সাম্প্রতিক অতীতে মহারাষ্ট্রে ক্ষমতার ভাগাভাগি প্রশ্নে শিবসেনা ও কৃষি নীতির কারণে শিরোমণি অকালি দলের মতো পুরনো শরিক এনডিএ-র সঙ্গ ত্যাগ করেছে। এনডিএ জোটে নতুন করে কোনও ফাটল ধরুক তা কোনও ভাবেই চাইছিলেন না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
তাই আস্থার বার্তা দিতে তড়িঘড়ি অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ ধর্মেন্দ্র প্রধানকে পটনা পাঠায় বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের মতে— বৈঠকে প্রধান জানিয়েছেন, নীতীশের উপরে সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের। রাজ্য নেতৃত্ব ভিন্নমত পোষণ করলেও, বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশ কুমারকেই দেখতে চায়। নীতীশকে আশ্বাস দিয়ে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওই মনোভাব রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের প্রশ্নেও নীতীশের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান। সূত্রের
মতে নীতীশকে বলা হয়েছে, তিনি যদি মনে করেন বিজেপির কোনও মন্ত্রী নিজের কাজের প্রশ্নে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ, তা হলে তিনি তাঁকে সরাতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে বিজেপির কোনও আপত্তি নেই। জেডিইউ সূত্রের মতে, বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থনের আশ্বাস দেন নীতীশ। একই সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্য বৃদ্ধির জন্য প্রধানের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy