Advertisement
E-Paper

মহুয়া-প্রশ্নে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসার কথা সংসদের এথিক্স কমিটির, তার আগে বাগ্‌যুদ্ধ তুঙ্গে দু’পক্ষের

মহুয়ার বিরুদ্ধে অর্থ এবং উপহারের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ এনেছিলেন নিশিকান্ত। সম্প্রতি তিনি জানান, মহুয়া যখন দেশে, তখন তাঁর সংসদীয় লগইন আইডি দুবাই থেকে খুলেছিলেন এক ব্যবসায়ী।

মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে) এবং নিশিকান্ত দুবে।

মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে) এবং নিশিকান্ত দুবে। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২৮
Share
Save

তরজা তুঙ্গে উঠল মহুয়া মৈত্র এবং নিশিকান্ত দুবের মধ্যে। বৃহস্পতিবারই তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসার কথা সংসদের এথিক্স কমিটির। মহুয়ার বিরুদ্ধে সাংসদ পদ অপব্যবহারের অভিযোগ আনা নিশিকান্ত এবং আইনজীবী অনন্ত দেহাদরি— দু’জনকেই ডেকে পাঠানো হয়েছে কমিটির তরফে। তার আগে সমাজমাধ্যমে চরমে পৌঁছল মহুয়া বনাম নিশিকান্তের বাগ্‌যুদ্ধ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টুইট করে নিশিকান্তকে নাম না করে ‘ভুয়ো ডিগ্রিধারী’ বলে তোপ দেগেছিলেন বাংলার কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। পাল্টা টুইটে নিশিকান্ত মহুয়াকে লেখেন, ‘‘ডিগ্রিধারীরা দেশকে বিক্রি করেন। সামান্য অর্থের জন্য নিজেদের বিবেককে বিক্রি করেন!’’ এর পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আরও একটি টুইট করেছিলেন নিশিকান্ত । লিখেছিলেন, ‘‘চোর মচায়ে শোর’’। যা আসলে বাংলা প্রবাদ ‘চোরের মায়ের বড় গলার হিন্দি রূপ। কারও নাম না লিখলেও সেই পোস্টের লক্ষ্য যে মহুয়া তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। তবে সেই তোপ এবং পাল্টা তোপের পর্ব মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই থেমে থাকেনি।

বুধবার সকাল হতে না হতেই এক্স হ্যান্ডলে মহুয়াকে লক্ষ্য করে নতুন পোস্ট করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। ঠিক ৭টা বেজে ৫৭ মিনিটে নিশিকান্ত ওই পোস্ট করেন। তবে এ বার আর ছুড়ে দেওয়া প্রবাদ প্রবচন নয়। আগের সন্ধ্যায় শুরু হওয়া বাগ্‌যুদ্ধের জের টেনে সরাসরি মহুয়াকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে বলেন দুবে। ছুড়ে দেন একের পর এক প্রশ্ন।

নিজের সাংসদ আই ডি শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানিকে ব্যবহার করতে দেওয়ার যে নতুন অভিযোগ উঠেছে মহুয়ার বিরুদ্ধে, সেই বিষয়েই দুবে স্পষ্ট জবাব চান কৃষ্ণনগরের সাংসদের কাছে। এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘আপনাকে জবাব দিতে হবে, আপনার এনআইসি মেল দুবাই থেকে খোলা হয়েছিল কি না। আর আপনি অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন করেছিলেন কি না!’’

মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রথমে হিরানন্দানির থেকে অর্থ এবং উপহারের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ এনেছিলেন নিশিকান্ত। তবে সম্প্রতি তিনি জানান, মহুয়া যখন দেশে অর্থাৎ ভারতে, তখন তাঁর সংসদীয় লগইন আইডি খোলা হয়েছিল দুবাই থেকে। আর তা খুলেছিলেন দুবাইয়ের ওই ব্যবসায়ী হিরানন্দানি। তিনিই মহুয়ার আইডি খুলে প্রশ্ন লিখে দিয়েছিলেন তাঁর সংসদীয় আইডিতে। উল্লেখ্য, এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুতর শাস্তির মুখে পড়তে পারেন মহুয়া। বুধবার সকালে এ বিষয়ে মহুয়াকে প্রশ্ন করার পাশাপাশি আরও কয়েকটি প্রশ্ন জুড়েছেন নিশিকান্ত।

দুবে লেখেন, ‘‘আপনাকে বলতে হবে আপনার বিদেশ যাওয়ার খরচ কে জুগিয়েছিল? আপনি কি কখনও বিদেশ যাওয়ার আগে লোকসভার স্পিকার বা বিদেশ মন্ত্রকের অনুমতি নিয়েছিলেন? বিষয়টি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত বলে মন্তব্য করে মহুয়াকে দুবে পাল্টা তোপ দেগে বলেছেন, ‘‘প্রশ্নটা আসলে আদানি, ভুয়ো ডিগ্রি বা চুরির নয়, আসল বিষয় হল আপনি দেশকে অন্ধকারে রেখে দুর্নীতি করেছেন।’’

নিশিকান্তের অভিযোগ ছিল, মহুয়া যখন ভারতে, তখন তাঁর সংসদীয় আইডিতে দুবাইয়ে বসে লগইন করেছিলেন ব্যবসায়ী হিরানন্দনি। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত বিষয়টি স্বীকারও করে নেন দুবাইয়ের ব্যবসায়ী। দুবের যুক্তি, এতে বিঘ্নিত হয়েছে গোটা দেশের নিরাপত্তা। মঙ্গলবারই একটি চিঠির ছবি পোস্ট করে দুবে জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি এনআইসি (ন্যাশনাল ইনফরমেটিকস সেন্টার)-কে সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনতে অনুরোধ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে নিশিকান্তকে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি এ-ও বলেছেন যে, এ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এনআইসি তদন্তকারীদের দেবে।

এর পরেই মহুয়া নিজের এক্স হ্যান্ডলে গোড্ডা এবং কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তকে নিশানা করে লেখেন, ‘‘কে মিথ্যে বলছেন? কয়েক দিন আগে ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালা বললেন, এনআইসি-র তরফ থেকে দুবাইয়ে লগ ইন করার তথ্য-সহ সব তথ্য তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার অশ্বিনী বৈষ্ণব বলছেন লোকসভা বা এথিক্স কমিটি চাইলে ওই তথ্য দেওয়া হবে। বিজেপি আমাকে আক্রমণ করতেই পারে। কিন্তু আদানি ও গোড্ডা বোধহয় খুব ভাল কৌশল তৈরি করতে পারেন না’’।

বুধবার সকালেও যখন এই তরজা সমানে চলছে, তখন মহুয়া আরও একটি টুইট করেছেন শিল্পগোষ্ঠী আদানির বিরুদ্ধে। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের উল্লেখ করে মহুয়া জানিয়েছেন, ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার ৯ মাস পর আদানিদের শেয়ারের দর ৮৫ শতাংশ। এ থেকেই স্পষ্ট চালাকি করে দীর্ঘদিন মানুষকে বোকা বানানো যায় না।

Mahua Moitra Nishikant Dubey BJP TMC loksabha

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}