Advertisement
E-Paper

‘সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট’! ওয়াকফ মামলা নিয়ে শীর্ষ আদালতের ভূমিকার সমালোচনায় বিজেপির নিশিকান্ত

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হওয়া নিয়ে এ বার সমালোচনা করলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য দেশের প্রধান বিচারপতির দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি।

সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার সমালোচনায় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।

সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার সমালোচনায় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৪৫
Share
Save

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে মামলা হওয়া নিয়ে এ বার সমালোচনা করলেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নিজের ‘সীমা অতিক্রম’ করছে। বিজেপি সাংসদের বক্তব্য, সংবিধান অনুসারে কোনও আইন তৈরির অধিকার রয়েছে সংসদের। সেই আইনের ব্যাখ্যা করার অধিকার রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। ঘটনাচক্রে সম্প্রতি, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছু মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাগুলি শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে বিচারাধীন। ওয়াকফ বিতর্ক ঘিরে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর এক প্রশ্নের জবাবে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য দেশের প্রধান বিচারপতিকেই দায়ী করেন নিশিকান্ত।

বস্তুত, সংশোধিত ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত মামলায় কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সেই অর্থে বিরোধিতা দেখা যায়নি। বিজেপির মাঝারি এবং নিচুতলার নেতারা কেউ কেউ মন্তব্য করলেও প্রথম সারির নেতারা এত দিন পর্যন্ত প্রকাশ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করেননি। নিশিকান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিনিধি নন। তবে সংসদীয় রাজনীতিতে বিজেপির অন্যতম প্রথম সারির মুখ তিনি। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এ বার সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকার সমালোচনা করলেন নিশিকান্ত। তাঁর ওই মন্তব্য সংশোধিত ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত মামলায় সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির তরফে বিচার ব্যবস্থার উপর চাপ তৈরির কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিতর্ক শুরু হয় সমাজমাধ্যমে নিশিকান্তের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে। হিন্দিতে লেখা ওই পোস্টে বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, “সুপ্রিম কোর্টই যদি আইন তৈরি করে, তবে সংসদ ভবন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।” প্রাথমিক ভাবে ওই পোস্টে সংশোধিত ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত কোনও বিষয়ের উল্লেখ ছিল না। ওই পোস্টের প্রেক্ষিতে এএনআই-এর প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক কালের এবং অতীতের বেশ কিছু রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন নিশিকান্ত। উদাহরণ হিসাবে সংবিধানের ৩৭৭ অনুচ্ছেদের কথা তুলে ধরেন তিনি। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদ অনুসারে সমকামিতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিল। পরে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় সমকামিতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদের দাবি, “সংবিধানের ৩৭৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে সমকামিতা একটি বড় অপরাধ ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন এসে এখন কী বলছে? তারাও বলছে বিশ্বে দু’টিই লিঙ্গ রয়েছে— হয় পুরুষ, নয় মহিলা। রূপান্তরকামী বা সমকামীর বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই। খ্রিস্টান, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, জৈন— সব ধর্মেই সমকামিতাকে অপরাধ বলে বিবেচনা করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট হঠাৎ এক দিন বলে দিল, এই অনুচ্ছেদটি আমরা মুছে দিচ্ছি।”

বস্তুত, সম্প্রতি তামিলনাড়ুর বেশ কিছু বিল আটকে থাকা সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্র। আইনসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ের পরে তামিলনাড়ু বিধানসভায় দু’বার পাশ হওয়া ১০টি বিল রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের অনুমোদন ছাড়াই কার্যকরও হয়ে গিয়েছে। শনিবার বিজেপির নিশিকান্তের বক্তব্য উঠে এসেছে সেই অস্বস্তির আভাস। তিনি বলেন, “আমরা (সাংসদেরা) যে আইন তৈরি করি, সেটি নিম্ন আদালত থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত প্রযোজ্য। সংবিধানের ৩৬৮ অনুচ্ছেদ বলছে, সব আইন তৈরির অধিকার রয়েছে সংসদের। আইনের ব্যাখ্যা করার অধিকার রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। অথচ তারা (আদালত) বলছে, তিন মাসের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে বলে দিতে হবে কী করতে হবে। তিন মাসের মধ্যে রাজ্যপালকে বলে দিতে হবে কী করতে হবে।”

ওয়াকফ মামলা এবং শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক এবং অতীত কিছু নির্দেশ প্রসঙ্গে মন্তব্য করার সময়েই বিজেপি সাংসদ বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট নিজের সীমা অতিক্রম করছে। ভারতের সংবিধান যে আইন তৈরি করবে, সেই আইনের ব্যাখ্যা করা সুপ্রিম কোর্টের সীমা। সেই ব্যাখ্যা না-করতে পারলে, সব কিছুর জন্য সুপ্রিম কোর্টে গেলে, সংসদ-বিধানসভার কোনও মানে হয় না। এগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।”

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মামলায় সুপ্রিম কোর্ট গত বুধবার কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। এই আইনের তিনটি বিষয় বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিতে চেয়েছিল প্রধান বিচারপতি খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে শেষ মুহূর্তে সেই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত। পরের দিনই ফের মামলাটি ওঠে শুনানির জন্য। সেখানে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, আপাতত ১৯৯৫ সালের আইনে নথিভুক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনও বদল ঘটানো হবে না। পাশাপাশি, ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা হবে না। কেন্দ্রের কথা শোনার পর সেই মর্মে অন্তর্বর্তী নির্দেশও জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।

WAQF Amendment Act Nishikant Dubey BJP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।