সংসদ ভবনে হুলস্থুল কাণ্ড। ছবি: এক্স।
শূন্য প্রহরের আমিই ছিলাম শেষ বক্তা। একটা বাজতে তখন কয়েক মিনিট বাকি। ফলে সময়ে বক্তব্য শেষ করার চাপও ছিল প্রবল। স্পিকারের দিকে মুখ করে নিজের কেন্দ্র মালদহের কথা বলছি, হঠাৎ ডান দিকে মনে হল কেউ এক জন উপর থেকে লাফ দিয়ে নামল। এক বার তাকিয়েই আবার নিজের বক্তব্য শুরু করি। পিছনে হঠাৎ শুনি শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে। বক্তব্য ভাল করে শুরু করার আগেই দেখি আর এক জন উপর থেকে লাফ দিয়ে নীচে নেমে পড়েছে। বুঝে গেলাম সংসদে হামলার দিনে আজ ফের কিছু একটা বড় মাপের গন্ডগোল হতে চলেছে। তত ক্ষণে ডেপুটি স্পিকার রাজেন্দ্র আগরওয়াল অধিবেশন সাময়িক ভাবে মুলতুবি করে দিয়েছেন। সভার মধ্যে হুলস্থুল কাণ্ড।
বলা থামিয়ে সামনে তাকাতেই দেখি, প্রথম যে ছেলেটি উপর থেকে নেমেছিল, সে সাংসদদের বেঞ্চের উপর দিয়ে লাফাতে লাফাতে স্পিকারের দিকে এগিয়ে চলেছে। আর দ্বিতীয় ছেলেটির সঙ্গে ধস্তাধস্তি চলছে কংগ্রেস সাংসদ গুরজিৎ সিংহ অউজলা। তত ক্ষণে দ্বিতীয় জনের গ্যাস ক্যানিস্টার থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করলেও, তাকে অন্য সাংসদদের সাহায্যে অনায়াসে জমিতে পেড়ে ফেলেন গুরজিৎ।
কিন্তু তখনও লড়ে যাচ্ছে প্রথম ছেলেটি। এক বেঞ্চ থেকে অন্য বেঞ্চে লাফিয়ে লাফিয়ে পালাচ্ছে দেখে চার ধার দিয়ে তাকে ঘিরে ফেলেন সাংসদেরা। তখন এই ছেলেটিও জুতোর ভিতর থেকে গ্যাস ক্যানিস্টার বার করে তা ঝাঁকাতেই সেটি থেকে হলুদ গ্যাস বেরিয়ে এল।
পরে শুনলাম সরকারের বিরোধিতায় নাকি ওই সব কাজ করেছে ওই যুবকেরা। সরকারের কাজের প্রতিবাদ করার অনেক পন্থা রয়েছে। কিন্তু এ ভাবে লোকসভায় লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে প্রতিবাদ জানানোর কি প্রয়োজন রয়েছে? তবে এই ঘটনা অনেক প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে নিরাপত্তাজনিত। ওই হলুদ গ্যাস যদি বিষাক্ত হত, তা হলে কত বড় মাপের বিপদ যে অপেক্ষা করে ছিল, তা বলার নয়।
(ঘটনার সময়ের বক্তা)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy