কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। ফাইল চিত্র।
বিষধর সাপের পাল্টা বিষকন্যা!
কর্নাটকের ভোটে সব কিছু ছাপিয়ে সামনে চলে এল বিষ-রাজনীতি। আর তার সঙ্গেই ঢুকে পড়ল পাকিস্তান-চিন। উন্নয়ন, দুর্নীতি, বেকারত্ব নিয়ে প্রচার আপাতত পিছনের সারিতে।
বৃহস্পতিবার কালবুর্গিতে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিষধর সাপের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। দ্রুত সে জন্য ক্ষমাও চান তিনি। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে ‘বিষকন্যা’ বললেন বিজেপি বিধায়ক বসনগৌড়া পাটিল ইয়তমল। সনিয়া গান্ধীকে ‘চিন এবং পাকিস্তানের চর’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কর্নাটকের কোপ্পালের জনসভায় বসনগৌড়া বলেন, ‘‘সনিয়া গান্ধীর নির্দেশেই কংগ্রেসের নেতারা এমন বলে বেড়াচ্ছেন। উনি বিষকন্যা। পাকিস্তান এবং চিনের এজেন্ট, যারা ভারতকে ধ্বংস করতে চায়।’’ এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস এবং খড়্গেকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘মোদী সারা বিশ্বে ভারতের সুনাম বাড়িয়েছেন। তবু কংগ্রেস এমন কথা বলেছে। এ সব ওরা আগেও বলেছে। কংগ্রেস যত মোদীকে আক্রমণ করবে, ততই চার দিকে কমল (পদ্মফুল) ফুটবে।’’
মোদীর সঙ্গে বিষধর সাপের তুলনার বিষয়টি নিয়ে খড়্গের দুঃখপ্রকাশের পরেও পরিস্থিতি হাতছাড়া করতে চায়নি কর্নাটকের ভোট ময়দানে কিছুটা চাপে থাকা বিজেপি। তারা বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালাতে দলের সব স্তরের নেতা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সবাইকে আসরে নামিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনেও এ নিয়ে নালিশ জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে তারা। বিজেপির দাবি, খড়্গে ওই মন্তব্য করে নির্বাচনী বিধি ভেঙেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল।
খড়্গের ওই মন্তব্যের জেরে কর্নাটকের ভোট ময়দানে কিছুটা চাপে কংগ্রেস। এই কর্নাটকের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে দীর্ঘ দিন ধরে লাগাতার চেষ্টা চালিয়েছে দল। বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করে তাদের ‘৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার’ বলে প্রচার চালাচ্ছেন দলের সব স্তরের নেতারা। পাশাপাশি টিকিট না পেয়ে একাধিক প্রভাবশালী বিজেপি নেতার দলত্যাগ, দল ও সরকারের নানা স্তরে দুর্নীতি, যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগের মতো বিষয়গুলিকে সামনে রেখে প্রচার চালাচ্ছেন রাহুল গান্ধী, সিদ্দারামাইয়া, ডি কে শিবকুমারেরা। খড়্গের মন্তব্য তাঁদের চাপে ফেলেছে। তার উপর বিজেপি এ দিন নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠোকায় দলের নেতাদের একটা অংশ উদ্বিগ্ন। ওই নেতাদের বক্তব্য, এর আগেও মোদী-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা নানা ভাবে সনিয়া গান্ধীকে উদ্দেশ করে মন্তব্য করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালে রাজস্থানে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী নাম না করে সনিয়াকে ‘কংগ্রেসের বিধবা’ বলেছিলেন। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, তা নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগেও কাজ হয়নি। কিন্তু বিজেপি নেতারা অভিযোগ করলেই কমিশন পদক্ষেপ করেছে। এ ক্ষেত্রেও খড়্গের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যার প্রভাব পড়তে পারে প্রচারে। খড়্গের মন্তব্যে তাই দলের একটি অংশ বিরক্তও।
গোটা বিষয়টির মধ্যে মোদী প্রচারে কী সুর তোলেন, তা নিয়েও চিন্তায় কংগ্রেস। খড়্গের মন্তব্যের আগে অবধি তাদের আশঙ্কা ছিল, অমিত শাহ-সহ বিজেপি শীর্ষ নেতাদের পথেই মোদীও মেরুকরণকেই হাতিয়ার করবেন। এখন কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, সব কিছু ছাপিয়ে তাঁর উপরে ব্যক্তিগত আক্রমণকে ‘অস্ত্র’ করেই ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালাবেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy