Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

শূন্য থেকে শুরু করতে চান বড়খলার বিধায়ক

জলবন্দিদের কথা ভেবে এত দিন বিজয় মিছিল করেননি বড়খলার নতুন বিধায়ক কিশোর নাথ। আপাতত জল পুরো নেমে গিয়েছে। তবে নদীর ভাঙন আর বেহাল রাস্তাঘাটের সমস্যা থেকে রেহাই পাননি বিধায়ক নিজেও।

বড়খলায় বিধায়কের বিজয় মিছিল। রবিবার। ছবি: হিমাংশু দে।

বড়খলায় বিধায়কের বিজয় মিছিল। রবিবার। ছবি: হিমাংশু দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৬ ০৩:৪৫
Share: Save:

জলবন্দিদের কথা ভেবে এত দিন বিজয় মিছিল করেননি বড়খলার নতুন বিধায়ক কিশোর নাথ। আপাতত জল পুরো নেমে গিয়েছে। তবে নদীর ভাঙন আর বেহাল রাস্তাঘাটের সমস্যা থেকে রেহাই পাননি বিধায়ক নিজেও।

আজ সকালে তারাপুর শিববাড়ি রোডে নিজের বাড়ি থেকে বের হয় বিজেপি বিধায়ক কিশোর নাথের বিজয়মিছিল। হুডখোলা গাড়িতে সস্ত্রীক বিধায়ক। সামনে-পিছনে দলীয় নেতা-কর্মীরা। কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ অন্যান্য গাড়িতে। মিছিল সোজা চলে যায় শালচাপড়ায়। সেখান থেকে হাতিরহাড়, রাজনগর। আর এগোনো যায়নি। বরাক নদীর ভাঙনের দরুন মানিকপুরগামী রাস্তার অনেকটাই নিশ্চিহ্ন। ফলে গাড়ি ঘোরাতে হয় কিশোরবাবুকে। ফেরেন শ্রীকোণায়। ততক্ষণে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে কর্মীরা এসে মিছিল দীর্ঘতর করছেন। স্থানে স্থানে গাড়ি থামিয়ে মাল্যদান করা হয় নতুন বিধায়ককে। অনেকে নানা দাবি-দাওয়ার কথাও শোনান। সব দেখে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাকে শূন্য থেকে কাজ শুরু করতে হবে।’’ রাস্তাঘাটের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।

মিছিল ইঅ্যান্ডডি কলোনি, মাসিমপুর হয়ে আবার যায় রাজনগরে। নদীভাঙনের দরুন যে অংশে আগে ঢোকা যায়নি, ওই সব এলাকায়ও ঘুরে ঘুরে বিজয়ের আনন্দ ভাগ করেন তিনি। পরে আলতাফ সেতু হয়ে যাত্রাপুর, ভাঙ্গারপার, বাবুরবাজার, চন্দ্রনাথপুর, জারইলতলা, বড়খলা, ডলু, রামপুর বাগান। রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য রাখতে হয় তাঁকে। বিশেষ করে দুধপাতিল, বদরপুর-মাসিমপুর, ভাঙ্গারপার ও হাতিছড়ায় তাঁর সংক্ষিপ্ত বরণ-পর্ব মুহূর্তে জনসভার চেহারা নেয়।

সব জায়গাতেই প্রথম বারের বিধায়ক নাথবাবু বলেন, ‘‘ভোটে দাঁড়িয়েই আমি আমার কর্ম-পরিকল্পনা প্রকাশ করেছি। পুস্তিকা আকারে তা বেরিয়েছিল। এখন একেবারে ধরে-ধরে ওই সব প্রতিশ্রুতি পালনে তৎপর হবো।’’

তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামে গ্রামে এত সমস্যা যে অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা বড় কঠিন। কিন্তু সরকারি কাজকর্মের নিয়মনীতি মেনে কাজ করতে হবে।’’ ফলে বিধায়ক হলেও তাঁর কথায়, ‘‘সমস্ত কাজ একসঙ্গে শুরু হতে পারে না।’’ তবু তিনি তীব্র সমস্যাগুলির ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাইবেন বলে কথা দেন।

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে ‘কাজ-পাগল’ মানুষ বলে মন্তব্য করে কিশোরবাবু বলেন, ‘‘এলাকার সমস্ত সমস্যা নিয়ে শীঘ্র তাঁর সঙ্গে কথা বলব।’’

হাফলং থেকে মাধ্যমিক পাশ কিশোর নাথ জেলার বিজেপি রাজনীতিতে একেবারে নতুন মুখ। টিকিটের দাবি জানানোর সময় থেকে এ নিয়ে নানা কথা চাউর হচ্ছিল। পরবর্তী সময়ে সব দাবিদার একযোগে প্রার্থীকে জেতানোর জন্য কাজ করছেন বলে ভোটের আগে জানিয়েছিলেন কিশোরবাবু। কিন্তু মাত্র ৪২ ভোটে জেতায় নতুন করে সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। কিশোরবাবু নিজে মুখ না-খুললেও তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের অভিযোগ, মনেপ্রাণে সবাই কাজ করলে এমন বিজেপি হাওয়ার মধ্যে মাত্র ৪২ ভোটে জিততে হয় না!

দ্বন্দ্বের চিত্র পরিস্কার ছিল বিজয় মিছিলেও। টিকিটের অন্য দাবিদারদের মিছিলে দেখা যায়নি। তবে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে আবেগ-উন্মাদনার ঘাটতি ছিল না। আবিরে রাঙিয়ে দেন একে অপরকে। বাজি পোড়ান পথে পথে। জয়ধ্বনি ওঠে নরেন্দ্র মোদী, সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে কিশোর নাথেরও।

তবে ফাঁকে ফাঁকেই নতুন বিধায়ককে শোনানো হয় নদীভাঙন ঠেকানো ও রাস্তা নির্মাণের কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

Rally BJP MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy