প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
হিমাচলপ্রদেশে ভোটের সাত দিন আগে ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’দের সামলাতে ব্যস্ত বিজেপি নেতৃত্ব।
প্রতিষ্ঠানবিরোধী-হাওয়ার ভয়ে হিমাচলপ্রদেশের ৬৮ আসনের বিধানসভায় এ বার ডজন খানেক বিজেপি বিধায়ককে টিকিট দেয়নি বিজেপি। এঁরা ছাড়াও টিকিটপ্রত্যাশীদের মধ্যেও আধ ডজন বিজেপি নেতা টিকিট না পাওয়ায় বিদ্রোহের রাস্তা বেছে নিয়েছেন। সব মিলিয়ে রাজ্যের ১৭টি আসনে এ বার বিজেপি বনাম প্রাক্তন বিজেপি প্রার্থীর লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্ব ঘরোয়া ভাবে মেনে নিচ্ছেন, টিকিট বণ্টন নিয়ে মতপার্থক্যেই দলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মনোবল নষ্ট হচ্ছে দলীয় কর্মীদের। সুযোগ বুঝে ওই নেতাদের কংগ্রেস নেতৃত্ব তলে তলে উস্কানি দিচ্ছেন বলেও ঘরোয়া ভাবে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতারা।
ভোট প্রচারের চেয়ে তাই আপাতত বিদ্রোহীদের দমন করতে মন দিয়েছেন ভূমিপুত্র তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। ইতিমধ্যেই ছয় জনকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বিজেপি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, যে ভাবে বিদ্রোহী বিধায়কেরা একজোট হয়ে ভোটে নেমেছেন, তাতে বাড়া ভাতে ছাই পড়ার আশঙ্কা করছেন দলের একাংশ। বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন দলের রাজ্য সহ-সভাপতি কৃপাল পরমার। তিনি নিজে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ফতেপুর থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ, প্রভাবশালী ওই নেতা নিজে দাঁড়ানোর পাশাপাশি মূলত টিকিট না পাওয়া বিধায়কদের নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়াতে উস্কানি দিচ্ছেন।
বিদ্রোহী নেতাদের ক্ষোভের মুখে দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী জয়রাম ঠাকুর। জয়রামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও, পার্শ্ববর্তী নাচান আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন বর্ষীয়ান বিদ্রোহী নেতা জিয়ান চন্দ। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাকেশ জাওয়ালের বিরুদ্ধে সুন্দরনগর আসন থেকে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী রূপ সিংহের ছেলে অভিষেক ঠাকুর। মূলত দলের পরিবারবাদ-বিরোধী নীতির কারণে নাম কাটা যায় অভিষেকের। কিন্তু ওই এলাকায় প্রাক্তন মন্ত্রী রূপ সিংহের প্রভাব থাকায় ওই আসনটি জেতা বিজেপির পক্ষে কঠিন হতে পারে বলেই মনে করছে দল। মান্ডি সদর কেন্দ্রে টিকিট দেওয়া হয়েছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুখরামের ছেলে অনিল শর্মাকে। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ব্রাহ্মণ অধ্যুষিত ওই আসনে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির স্থানীয় ব্রাহ্মণ নেতা প্রবীণ শর্মা।
খোদ জে পি নড্ডা যে বিধানসভা আসনের বাসিন্দা, তাতেও ত্রিলোক জাওয়ালকে দাঁড় করানোর প্রতিবাদে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা সুভাষ শর্মা। কাংড়া আসনে সদ্য কংগ্রেস থেকে যোগ দেওয়া পবন কাজলের টিকিট পাওয়ার প্রতিবাদে দল থেকে বেরিয়ে আসেন বিজেপি নেতা কুলভূষণ চৌধুরী। নির্বাচনে নির্দল হিসাবে লড়ছেন তিনিও। চম্বা আসনে দল প্রথমে ইন্দিরা কপূরকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছিল। তাতে বিধায়ক পবন নায়ার সমর্থকদের নিয়ে দল ছাড়ার হুমকি দিলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পবনের স্ত্রী নীলমকে প্রার্থী করে রাতারাতি। ফলে প্রথমে টিকিট পাওয়া ইন্দিরা এ যাত্রায় নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন। দলের যুক্তি, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ইন্দিরাকে টিকিট দিয়েও তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে রাজ্যের অন্তত পঁচিশ শতাংশ আসনে বিজেপি প্রার্থীর মুখোমুখি বিক্ষুব্ধ নেতারা। ফলে ভোট কাটাকুটির সুযোগে রাজ্যে আসন বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে কংগ্রেসের সামনে। টিকিট বণ্টন ঘিরে যে কোন্দল হবে তা আঁচ করেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাতে টিকিট দেওয়ার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্ব ভেবেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে টিকিট বণ্টন হলে বিদ্রোহের সম্ভাবনা কম হবে। কিন্তু তাতে তেমন কাজ হয়নি দেখে আশঙ্কার মৃদু চোরাস্রোত বইছে দলের অন্দরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy