কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।
সনিয়া গাঁধীর এত দিন অবস্থান ছিল, করোনা-সঙ্কটের সময় রাজনৈতিক আক্রমণে না-গিয়ে মোদী সরকারকে গঠনমূলক পরামর্শ দেবে কংগ্রেস। সেই অবস্থান থেকে সরে এ দিন বিজেপির বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও ঘৃণার ভাইরাস ছড়ানো’-র অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তাঁর মতে, এর ফলে সামাজিক ঐক্যে বড় রকম ধাক্কা লাগছে।
বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের শুরুতে সনিয়ার এই মন্তব্যের পরেই বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে ‘সস্তার রাজনীতি’-র অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু কংগ্রেসের নেতাদের যুক্তি, প্রথমে তবলিগি জামাতের ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপি একটি বিশেষ সম্প্রদায়কেই করোনা ছড়ানোর জন্য দায়ী করে। এর পরে মহারাষ্ট্রের পালঘরে গণপিটুনিতে দুই সাধুর মৃত্যুকে ঘিরেও বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছে। এআইসিসি-তে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, “পালঘর বিজেপির দুর্গ। সাধুদের হত্যার ঘটনায় ১১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তার মধ্যে এক জনও মুসলমান নন। তা সত্ত্বেও এটা সাম্প্রদায়িক বিষয় হয় কী করে!” ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে রাহুল গাঁধী টুইট করে অভিযোগ তোলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জই বলছে লকডাউনের ফলে দিন-আনি-দিন-খাই মানুষ অনাহারের শিকার হবেন। ঘৃণায় কোনও সমস্যার সমাধান হবে না।
সনিয়া প্রথমে শুধুই সরকারকে ‘পরামর্শ দেওয়া’-র নীতি নিলেও রাহুলের চাপে কংগ্রেস গত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ‘গঠনমূলক সমালোচনা’-র নীতিতে সরে আসে। রাহুল অবস্থান নেন, তিনি এখনই মোদী সরকারের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলবেন না। কিন্তু কোথায় গাফিলতি, তা ধরিয়ে দিয়েই পরামর্শ দেবেন। আজ কার্যত রাহুলের অবস্থানেই সরে এসেছেন সনিয়া। তিনি বলেন, “আমাদের যখন এক হয়ে করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করা উচিত, তখন বিজেপি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও ঘৃণার ভাইরাস ছড়াচ্ছে।”
সনিয়ার অভিযোগের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “আমরা সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করছি না। আমরা ওঁদের সস্তার রাজনীতি না করার অনুরোধ করছি।” কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “পালঘরের হিংসাকে কি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি মুখপাত্ররা সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করছেন না?”
সনিয়া, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা থেকে কংগ্রেসের সকলেই আজ লকডাউন পর্বে গরিব মানুষের সমস্যার দিকে সরকারের নজর দেওয়ার প্রয়োজনের কথা বলেছেন। আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী ফের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীদের সেই বৈঠকের সুর বেঁধে দিয়ে বলেন, লকডাউনে সাফল্য মাপা হবে করোনা মোকাবিলার ক্ষমতার নিরিখে। এই কাজে কেন্দ্র ও রাজ্যের সহযোগিতা জরুরি। রাজ্যগুলির হাতে কতখানি অর্থ রয়েছে, তার উপরে করোনা-মোকাবিলার সাফল্য নির্ভর করছে। কেন্দ্র আর্থিক সাহায্য করছে না বলে এখানেই অভিযোগ তুলেছেন অশোক গহলৌত, ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ, ভূপেশ বাঘেল, ভি নারায়ণস্বামীর মতো কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরা। স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সামনেও তাঁরা এ নিয়ে মুখর হবেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy