ভোটের রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্দরে এ বার বিরোধ মেটার ইঙ্গিত। ‘ব্রিদ্রোহী’ সচিন পাইলটের প্রয়াত পিতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজেশ পাইলটের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতৃত্ব মিজোরামের আমজনতার উপর বোমাবর্ষণের যে অভিযোগ তুলেছেন, কঠোর ভাষায় তাঁর নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নেতা প্রয়াত রাজেশ পাইলট ভারতীয় বায়ুসেনার এক বীর পাইলট ছিলেন। দেশের প্রতি তাঁর আত্মত্যাগকে বিজেপি অপমান করেছে। অপমান করেছে ভারতীয় বায়ুসেনাকে।’’
গত ১০ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি বক্তৃতায় জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিংহের জমানায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতি ধারাবাহিক বঞ্চনা এবং অত্যাচার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘‘১৯৬৬ সালের ৫ মার্চ কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার মিজোরামে সাধারণ মানুষের উপর বায়ুসেনার বিমান পাঠিয়ে বোমাবর্ষণ করিয়েছিল।’’ যদিও ইতিহাসবিদের একাংশের দাবি, সে সময় চিনের মদতেপুষ্ট মিজো বিদ্রোহীদের ঘাঁটির উপর হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। ১৯৮৪ সালে পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরে ঘাঁটি গড়া খলিস্তানী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন ব্লু স্টার’কে বৃহস্পতিবার ‘অকাল তখতের উপর হামলা’ বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
মোদীর ওই বক্তৃতার পরে বিজেপির আইটি সেলের নেতা অমিত মালবীয় টুইটারে লেখেন, ‘ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ভারতীয় বায়ুসেনার দুই পাইলট, রাজেশ এবং সুরেশ কলমডী বিমান থেকে মিজোরামের আমজনতার উপর বোমাবর্ষণ করেছিলেন। পরে দু’জনেই কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হন। ইন্দিরা গান্ধী তাঁদের পুরস্কৃত করেছিলেন’। এর পর সচিন সোমবার বলেন, ‘‘বিজেপি আমার বাবার নামে কুৎসা করছে।’’ মঙ্গলবার গহলৌত সরাসরি পাশে দাঁড়ালেন পাইলটের।
আরও পড়ুন:
২০২০ সালে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন পাইলট। সে সময় অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন রাজেশ-পুত্র। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে। তার পর থেকেই দু’নেতার সম্পর্ক শীতল। চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে রাজস্থানে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তাঁর আগে গহলৌতের এই মন্তব্য দূরত্ব কমানোর চেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।