রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। —ফাইল ছবি।
চেনা প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে বেশি চিন্তা, না কি অচেনাকে নিয়ে? দু’জনের মধ্যে কে আগামী পাঁচ বছরে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বেশি বেগ দিতে পারেন? প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা কেরলের ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে লড়ার সিদ্ধান্ত নিতেই সেই জল মাপতে ব্যস্ত বিজেপি নেতৃত্ব। মুখে ‘ওয়েনাড়ের জনগণের সঙ্গে রাহুল গান্ধীর বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘পরিবারতান্ত্রিক গান্ধী পরিবার’— এ জাতীয় অভিযোগ তুলে সরব হলেও লোকসভায় রাহুল-প্রিয়ঙ্কা ও রাজ্যসভায় সনিয়া গান্ধী, সংসদের উভয় কক্ষে গান্ধী পরিবারের এমন ত্রিমুখী উপস্থিতি থাকলে সরকারকে আগামী দিনে চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপি শিবির বলছে, রাহুল গান্ধী তাদের চেনা প্রতিদ্বন্দ্বী। গত প্রায় দু’দশক ধরে সংসদে তাঁকে সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে বিজেপির। কিন্তু সেই তুলনায় প্রিয়ঙ্কা কার্যত অচেনা, বিশেষ করে সংসদীয় রাজনীতিতে। রাহুলের ছেড়ে যাওয়া আসন ওয়েনাড়ে প্রিয়ঙ্কার জিতে যাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় যেমন কংগ্রেসের নেই, তেমনই নেই বিজেপির। ফলে আগামী দিনে ভাইবোনের জুটিকে কোন কৌশলে সামলানো হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ভোটে কংগ্রেসের শক্তি বেড়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারও শরিক-নির্ভর। ফলে প্রিয়ঙ্কা যে নিজের সংসদীয় জীবন আক্রমণাত্মক ভাবেই শুরু করবেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত বিজেপি নেতৃত্ব। তাই ভাইবোনের মধ্যে বিভাজনের বীজ বুনে দেওয়ার কৌশলও বিজেপি নিচ্ছে বলে সূত্রের দাবি। বিজেপির মুখপাত্র শেহজ়াদ পুনাওয়ালা বলেছেন, ‘‘রায়বরেলী কেন্দ্র রেখে দিয়ে রাহুল বুঝিয়ে দিলেন, দলের রাজনৈতিক পরম্পরা ছেলের হাতেই দেখতে চান মা। মেয়ের হাতে নয়।’’ এর পাশাপাশি, রাহুলের ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ তত্ত্ব প্রচারেও নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতারা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রাজীব চন্দ্রশেখরের কথায়, ‘‘রাহুল জানতেন তিনি ওয়েনাড় ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু মনের সেই ইচ্ছা ঘুণাক্ষরে বুঝতে দেননি ওয়েনাড়ের মানুষকে। এখন প্রিয়ঙ্কাকে দাঁড় করিয়ে ওড়েনাড়কে গান্ধী পরিবারের খাসতালুকে পরিণত করার কৌশল নিয়েছেন রাহুল-সনিয়ারা।’’
প্রিয়ঙ্কার লোকসভার উপনির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্তকে ইন্ডিয়া-র নেতারা স্বাগত জানিয়েছেন। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘লোকসভায় প্রিয়ঙ্কার উপস্থিতি সমস্ত বিরোধী দলকে শক্তি জোগাবে।’’ বিজেপিও বুঝতে পারছে, প্রিয়ঙ্কার উপস্থিতিতে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবেন ইন্ডিয়া মঞ্চের মহিলা সাংসদেরা। প্রিয়ঙ্কাকে চাপে রাখতে বিজেপি এমন একটি ভাষ্য তৈরিরও কৌশল নিয়েছে যে, তিনি কেরলের বিতর্কিত দল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিগ লিগ-এর মতো ‘দেশবিরোধী শক্তির’ সমর্থনে জিতে আসতে চলেছেন।
প্রিয়ঙ্কার স্বামী রবার্ট বঢরা আজ বলেন, ‘‘আমি বরাবরই বলেছি, আগে প্রিয়ঙ্কা সংসদে যাবে। তার পরে আমি রাজনীতিতে আসতে পারি।’’ শুনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। তাদের কেরলের রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন বলেন, ‘‘ওয়েনাড়ে বোনের পরে এ বার পলক্কড় থেকে রবার্টকে জিতিয়ে আনুন রাহুল।’’ বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, গান্ধীদের কাছে দলের আগে যে পরিবার, প্রিয়ঙ্কা প্রার্থী হওয়ায় তা ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ নিয়েও গান্ধী পরিবারকে অধিবেশনের গোড়া থেকেই আক্রমণ শানানোর পরিকল্পনা করে রেখেছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy