ফাইল চিত্র।
জনভিত্তিতে টান পড়তে পারে আগামী দিনে, সেই আশঙ্কায় এ বার পসমন্দা মুসলিমদের কাছে টানতে তৎপর হলেন বিজেপি নেতৃত্ব। অতীতে মুসলিমদের মধ্যে শিয়া জনগোষ্ঠীকে কাছে টানার চেষ্টা করেছিল দল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। এ বার তাই মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রান্তিক গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত পসমন্দাদের মন পেতে তৎপর হয়েছেন নরেন্দ্র মোদীরা। বিজেপি নেতাদের দাবি, উন্নয়নের সুফল পেলে মুসলিম সমাজও যে বিজেপিকে সমর্থন করতে পারে তা উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনেই দেখা গিয়েছে।
কিন্তু কেন পসমন্দা মুসলিম? বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, বর্তমানে দেশের মুসলিম সমাজের প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশই হলেন পসমন্দা মুসলিম। যাঁরা অতীতে হিন্দু ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এঁদের একাংশ কোথাও হিন্দু সমাজের গোঁড়ামি কোথাও আবার মুসলিম শাসকের ভয়ে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের মতে, এঁরা মুসলিম হলেও এঁদের মধ্যে এখনও হিন্দু জীবনশৈলীর প্রভাব রয়ে গিয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘মথুরা বা অযোধ্যায় যাঁরা ফুলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাঁদের একটি বড় অংশ মুসলিম। কিন্ত তা সত্ত্বেও পুরুষানুক্রমে এঁরা এখনও মন্দিরের ফুলের জোগান দিয়ে থাকেন। আমাদের লক্ষ্য এমন মুসলিমদের কাছে টানা।’’
মূলত উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গের বড় অংশ জুড়ে থাকা এই মুসলিমদের কাছে টানাই পাখির চোখ করেছে দল। স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে যে কুড়ি কোটি দেশবাসীর বাড়িতে তেরঙা পতাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল তাঁদের মধ্যে পসমন্দা মুসলিমদের কাছে পৌঁছনোর জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে দল। লক্ষ্য জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে বিজেপির জন্য পসমন্দাদের মধ্যে দলীয় জনভিত্তি তৈরি করা। তা ছাড়া সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের রামপুর ও আজমগড়ে লোকসভা উপনির্বাচনের জয় থেকেই স্পষ্ট মুসলিম অধ্যুষিত ওই এলাকাগুলিতে সংখ্যালঘু সমর্থন না পেলে কোনওভাবেই জেতা সম্ভব ছিল না বিজেপি প্রার্থীর। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘ওই দুই উপনির্বাচন থেকে স্পষ্ট মানুষের কাছে যদি সরকারের জনকল্যাণকামী প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় সে ক্ষেত্রে মুসলিম সমাজও আমাদের সমর্থন করবে। যেমন করেছে ওই দুই কেন্দ্রে।’’ সেই কারণে হায়দরাবাদে জাতীয় কর্মসমিতির সমাপ্তি ভাষণে মোদী উজ্জ্বলা যোজনা, পরিশ্রুত পানীয় জল, স্বাস্থ্য, আবাস, অন্ন যোজনার মতো প্রকল্পগুলির ফায়দা যাতে হিন্দুদের মতোই অন্য সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির সদস্যেরা পান তার উপরে বিশেষ করে নজর দিতে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজনীতির অনেকেই মনে করছেন, মোদী এত দিন যে সবকা সাথ, সবকা বিকাশের স্লোগান দিতেন তা এ বার বাস্তবে রূপায়িত করতে বদ্ধপরিকর তিনি। কারণ মোদী তথা বিজেপি নেতৃত্ব ভাল করেই বুঝতে পারছেন, আগামী দিনে মুসলিম সমাজ ও দক্ষিণ ভারতে দলের বিস্তার না হলে কেবল উত্তর ও পশ্চিম ভারতের সমর্থনের জোরে বেশি দিন কেন্দ্রে শাসন করা সম্ভব নয়। সে কারণেই এক দিকে দক্ষিণ ভারত ও অন্য দিকে জনকল্যাণ প্রকল্পের মাধ্যমেমুসলিম সমাজের মধ্যে নিজেদের জনভিত্তি বাড়াতে তৎপর হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy