—প্রতীকী ছবি।
উত্তরপ্রদেশে দলের খারাপ ফল খুঁজতে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গড়ল বিজেপি। প্রায় ৬০ সদস্যের ওই দলটি শহর, গ্রামের অলিগলিতে ঘুরে কেন মানুষ বিজেপি থেকে মুখ সরিয়ে নিলেন, তা খতিয়ে দেখবেন। যার ভিত্তিতে ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কৌশল ঠিক করবে দল।
লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশ থেকে মাত্র ৩৩টি আসন জিতেছে বিজেপি, গত বারের তুলনায় ২৯টি কম। ভোট পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে বিজেপি যেখানে উত্তরপ্রদেশে ৪৯.৬% ভোট পেয়েছিল তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪১.৪%-এ। সামগ্রিক প্রাপ্ত ভোটের বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ২০১৯ সালে রাজ্যের ৮.৮ কোটি ভোটারের মধ্যে ৪.৩ কোটি মানুষ পদ্মকে বেছে নিয়েছিলেন। এ বার সামগ্রিক ভোট বেড়ে ৮.৮ কোটি হলেও, দল ভোট পেয়েছে মাত্র ৩.৮ কোটি ভোটারের।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও উত্তরপ্রদেশে খারাপ ফলের কারণের প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য বিজেপিকে পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যে সাংসদেরা বিজেপির টিকিটে টানা দু’বার জিতে এসেছিলেন, তাঁদের যে মানুষ এ বার দেখতে চাইছিলেন না, তা বুঝতে পারেনি দল। মূলত টানা দশ বছর সরকারে থাকার সুবাদে ওই সাংসদদের অহংকারী মনোভাব তৈরি হয়েছিল যা তাঁদের বা দলের হারের অন্যতম কারণ। মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন বিজেপি সাংসদেরা। প্রার্থীদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ দেখে কর্মীরাও প্রচারের ঝুঁকি না নিয়ে বসে যান।
রাজ্য নেতৃত্ব এ ধরনের প্রায় তিন ডজন সাংসদকে সরানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন। অধিকাংশ নতুন মুখকে টিকিট দেওয়ার যে পরামর্শ রাজ্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তা উপেক্ষিত হয়। হারের পরে সেই বিষয়টি এখন স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির কেন্দ্রীয় এক নেতার কথায়, ‘‘মুখ পাল্টালে হয়তো ফল অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু এখন ভেবে আর কী লাভ!’’ একাধিক কেন্দ্রে লোকসভা প্রার্থী এবং সেই কেন্দ্রের আওতায় থাকা বিধায়ক-নেতা কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় ছিল না, যা কাজে লাগান বিরোধীরা। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, বহু কেন্দ্রে কর্মীর অভাবে বাড়ি-বাড়ি ভোটার স্লিপ পর্যন্ত দেওয়া যায়নি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতীতের নির্বাচনগুলিতে প্রচারের মূল বিষয় তৈরি করে দিত বিজেপি-ই। এবারে সেই নীতি বুমেরাং হয়েছে। বিশেষ করে বিজেপি ৪০০ আসন পেলে সংবিধান পরিবর্তন করে সংরক্ষণ তুলে দেবে বলে বিরোধীরা যে প্রচার করেন, তার পাল্টা জবাব দিতে ব্যর্থ হন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। দেখা গিয়েছে, সংবিধান পরিবর্তনের ভয়ে দলিতেরা সমাজবাদী পার্টিকে উত্তরপ্রদেশে ঢেলে ভোট দিয়েছেন। দলের এক নেতার বিশ্লেষণ, এ বারে বিএসপির প্রায় পাঁচ শতাংশ দলিত ভোট পেয়েছেন সমাজবাদী প্রার্থীরা। যা খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে।
তা ছাড়া, প্রচারে বিজেপি যখন হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতির উপরে জোর দিয়েছে, তখন বিরোধীরা স্থানীয় সমস্যাকে অনেক বেশি সামনে এসেছেন। কোথাও অগ্নিবীর, কোথাও কৃষক সমস্যা নিয়ে ধারাবাহিক প্রচার চালিয়েছেন তাঁরা। রাজ্যে ও কেন্দ্রে ‘ডাবল ইঞ্জিনের’ সরকার হওয়ায় যাবতীয় সমস্যার ক্ষেত্রে বিজেপির দিকে আঙুল উঠেছে। যার কোনও জুৎসই জবাব দিতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy