আগামী বছরে হতে যাওয়া তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচনে এডিএমকের সঙ্গে জোট গড়ে লড়বে বিজেপি। একথা আজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে এডিএমকে-র সঙ্গে জোট ভেঙে গিয়েছিল বিজেপির। নতুন করে ওই জোট গড়ার কথা আজ জানান শাহ। তিনি জানিয়েছেন, জোট শরিক এডিএমকে-র নেতা ই পলানীস্বামীই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চলেছেন। পাশাপাশি, ওই রাজ্যে কে আন্নামালাইয়ের পরিবর্তে এন নগেন্দ্রনকে দলের সভাপতি হিসেবে বেছে নিয়েছে বিজেপি। আন্নামালাইকে জাতীয় স্তরে সংগঠনের কাজে নিয়ে আসার কথা ভাবা হয়েছে।
তামিলনাড়ুতে জোট গড়ার পরেই এক্স হ্যান্ডলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘এডিএমকে এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি খুবই খুশি। আমরা এনডিএ-র সদস্যরা মিলে তামিলনাড়ুকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব। তামিলনাড়ুতে আমরা এমন সরকার গড়ব যা এমজিআর ও জয়ললিতাজির স্বপ্নকে পূরণ করবে।’ তামিলনাড়ুতে দুর্নীতিগ্রস্ত ডিএমকে সরকারকে উৎখাত করারও ডাক দিয়েছেন মোদী।
আসন্ন নির্বাচনে শাসক দল ডিএমকে-কে হারাতে কয়েক মাস ধরেই জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল এডিএমকে ও বিজেপি। কিন্তু ওই জোট গঠনের প্রশ্নে অন্যতম বাধা ছিলেন সদ্য প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই। তিনি প্রদেশ বিজেপির সভাপতি থাকলে এডিএমকে জোটে যাবে না বলে জানিয়ে দেন পলানীস্বামীরা। তাঁদের যুক্তি, এডিএমকে নেতা জয়ললিতা, এম জি রামচন্দ্রন সম্পর্কে আন্নামালাইয়ের কটূ মন্তব্যের কারণেই এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল দল। তাই যতদিন আন্নামালাই সভাপতি পদে থাকবেন ততদিন এডিএমকের পক্ষে এনডিএ-তে ফেরা সম্ভব নয়।
পলানীস্বামীদের অনড় অবস্থান দেখে দলীয় স্বার্থে পদত্যাগ করতে বলা হয় আন্নামালাইকে। পরিবর্তে এন নগেন্দ্রনকে প্রদেশ সভাপতি হিসেবে বেছে নিয়েছে বিজেপি। ২০১৭ সালে বিজেপিতে যোগদানের আগে এডিএমকেতেই ছিলেন নগেন্দ্রন। ফলে তিনি সভাপতি হওয়ায় পুরনো দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে সমস্যা হবে না বলেই আশা করছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দশ বছর ধরে সদস্য না থাকলে কোনও রাজ্যের বিজেপি সভাপতি হওয়া যায় না। কিন্তু নগেন্দ্রনকে সভাপতি করতে আগ্রহী দল এ যাত্রায় সেই নিয়মকে অগ্রাহ্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। নগেন্দ্রন তামিলানাড়ুর প্রভাবশালী থেবর সম্প্রদায়ের নেতা। তাঁকে সামনে রেখে দক্ষিণের জেলাগুলিতে গেরুয়া প্রভাব বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি।
গত মাসে দিল্লি এসে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন পলানীস্বামী। তার পর থেকেই জোটের জল্পনা শুরু। আজ চেন্নাই সফরে গিয়ে শাহ বলেন, ‘‘এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এডিএমকে। ফলে ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় স্তরের নির্বাচন নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ও রাজ্য পর্যায়ের নির্বাচন পলানীস্বামীর নেতৃত্বে লড়বে দু’দলের জোট।’’ বিধানসভা নির্বাচনে জিতলে পলানীস্বামী মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলেও জানিয়েছেন শাহ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)