প্রতীকী ছবি।
উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককেই পাখির চোখ করে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা নিল বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব গত কাল তুলে দেওয়া হয়েছে দলের ওবিসি মুখ ধর্মেন্দ্র প্রধানের হাতে। পরবর্তী পদক্ষেপে রাজ্যের ওবিসি নেতৃত্বের মধ্যে যে ক্ষোভ রয়েছে, তা দূর করতে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর অযোধ্যায় বৈঠক ডেকেছে দল। দলের ওবিসি মোর্চার বৈঠকে বিজেপির ওবিসি নেতারা ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিজেপি সূত্রের মতে, পরিকল্পিত ভাবে ওই বৈঠকের জন্য অযোধ্যাকে বেছে নিয়েছে দল। ‘রাম জন্মভূমি’র ওই শহরে বৈঠক করে এক দিকে যেমন ওবিসি সমাজ, তেমনই হিন্দু উচ্চবর্ণ— বিশেষ করে ব্রাহ্মণ সমাজকে বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়েছে দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, এ হল দলের মণ্ডল-কমণ্ডল রাজনীতি।
উত্তরপ্রদেশে অর্ধেকের বেশি ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে এই ভোট বিজেপিকে প্রবল সমর্থন জুগিয়ে এসেছে। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথের সাড়ে চার বছরের শাসনে ওবিসি-দের একাংশ বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ওবিসি নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে ওবিসি সমাজের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার যে সম্প্রসারণ হয়, তাতে উত্তরপ্রদেশের নতুন প্রতিনিধিরা এক জন বাদে সকলেই ছিলেন ওবিসি। এ ছাড়া ওবিসিদের সমর্থন নিশ্চিত করতে সংসদের গত অধিবেশনে নানা পদক্ষেপ নেয় মোদী সরকার। এর মধ্যে রাজ্যের হাতে ওবিসি তালিকা তৈরির ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য সংবিধান সংশোধন ছাড়াও মেডিক্যাল পরীক্ষায় ওবিসিদের জন্য ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণ রয়েছে। বিজেপির ওবিসি মোর্চার জাতীয় সভাপতি এল লক্ষ্মণের কথায় “নরেন্দ্র মোদী সরকার সাম্প্রতিক সময়ে ওবিসি সমাজের পাশে যে ভাবে দাঁড়িয়েছেন, তা অন্য কোনও সরকার করেনি।” বৈঠকের প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী যোগ দেবেন। এর পরে অক্টোবরে ওবিসি মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হতে চলেছে। তা ছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ওবিসি সম্মেলন করার পরিকল্পনা নিয়েছে দল।” সূত্রের মতে, বৈঠকে ওবিসি সমাজের উন্নয়নে একাধিক জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি তৈরি করা নিয়েও আলোচনা হবে, যা আগামী দিনে ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ।
বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের যা পরিস্থিতি, তাতে ব্রাহ্মণ ভোট ক্ষুব্ধ আদিত্যনাথের শাসনে। ক্ষুব্ধ দলিত সমাজ। ফের ব্রাহ্মণ ও দলিত ভোটকে একত্রিত করে ক্ষমতায় ফেরার পরিকল্পনা করছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। অন্য দিকে যাদব ভোটব্যাঙ্ককে ফের পাশে পেতে তৎপর এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। কৃষক আন্দোলনের কারণে বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়েছে জাঠ সমাজের একাংশ। ফলে বিজেপি নেতারা খুব ভাল করেই বুঝতে পারছেন, লখনউয়ের তখ্ত ধরে রাখতে ওবিসি ভোট কতটা জরুরি। মোদী সরকার যে ওবিসি সমাজের পাশে রয়েছে, সেই বার্তা দিতেই রাজ্যের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক করা হয়েছে ওবিসি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধানকে। দলের অন্য রাজ্যের ওবিসি নেতাদের প্রচারে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। পাশাপাশি ক্ষুব্ধ ব্রাহ্মণ ভোট বিএসপিতে যাওয়া রুখতে তৎপর হয়েছে বিজেপি। বৈঠকের কেন্দ্র হিসাবে অযোধ্যাকে বেছে নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে রাম মন্দির বিজেপির প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে। তাই অযোধ্যায় ১৮ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে এক দিকে যেমন ওবিসি সমাজ, তেমনই ব্রাহ্মণদেরও পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়ে এগোতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy