দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
আবগারি দুর্নীতিতে আদালত আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংহের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ার পরে আপ-কে আক্রমণ শানাতে আসরে নেমেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ওই মামলায় ছাড় পাবেন না আপ-প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালও। একই সঙ্গে বিজেপির দাবি, যে আপ এক সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেছিল, তারাই এখন দুর্নীতিকে ধামাচাপা দিতে চাইছে। আপ প্রমাণ করে দিয়েছে, ভারতের মতো দেশে পরীক্ষামূলক রাজনীতির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। যার পাল্টা কেজরীওয়াল দাবি করেছেন, তদন্তকারী সংস্থার হাতে আসলে কোনও প্রমাণ নেই। প্রমাণের অভাবে আগামী দিনে ওই মামলা বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে।
গত কালই আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিতে গিয়ে আদালত জানিয়েছিল, ওই গ্রেফতারি অযৌক্তিক নয়। বিশেষ করে আবগারি দুর্নীতিতে অর্থের লেনদেন কী ভাবে হয়েছে, তা জানতে ওই সাংসদকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন।
আদালতের ওই পর্যবেক্ষণকে হাতিয়ার করে আজ আপ নেতৃত্বকে আক্রমণ শানিয়ে রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ‘‘আদালত বুঝতে পেরেছে, আবগারি দুর্নীতিতে অর্থের লেনদেন হয়েছে। সেই কারণেই সঞ্জয় সিংহকে ইডি-র হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেছেন আদালত।’’ সুধাংশুর দাবি, গোটা দল আবগারি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের নাম না করে সুধাংশু বলেন, ‘‘দলের কোনও শীর্ষ নেতা আবগারি দুর্নীতি থেকে বাঁচতে পারবেন না।’’
আবগারি দুর্নীতিতে প্রথমে মণীশ সিসৌদিয়া ও তার পরে গত বুধবার ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। আজ বিজেপি নেতৃত্বের ইঙ্গিত, ওই মামলায় ছাড় পাবেন না অরবিন্দ কেজরীওয়ালও। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হবেন তিনিও। এই আবহে আজ মুষড়ে পড়া আপ কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করতে কেজরী বলেন, ‘‘ওঁরা (ইডি) এত তদন্ত করল, কিছু কি বেরিয়ে এসেছে? গত কাল সুপ্রিম কোর্ট কী বলেছে, তা সকলেই শুনেছেন। বলেছে, গোটা আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ ভুয়ো। একটি পয়সারও লেনদেন হয়নি। বিচারক প্রমাণ চাইলেও তা দিতে ব্যর্থ হন তদন্তকারী সংস্থা। ক’দিনের মধ্যেই আবগারি দুর্নীতির তদন্ত বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন কোনও তদন্ত শুরু হবে। ওঁদের লক্ষ্যই হল মানুষকে তদন্তের জালে জড়িয়ে রাখা।’’
কেজরীওয়াল আবগারি দুর্নীতিতে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ খারিজ করলেও ইডি গত কাল আদালতে চার্জশিটে জানিয়েছে, আবগারি দুর্নীতিতে মূল অভিযুক্ত তথা বর্তমানে রাজসাক্ষী দীনেশ আরোরা দু’দফায় সঞ্জয়ের বাড়িতে গিয়ে দু’কোটি টাকা পৌঁছে দিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি সঞ্জয়ের রাজনৈতিক সচিব বিবেক ত্যাগীকে যে অরোরা ব্যবসার অংশীদার করেছে, সেই তথ্যও আদালতে পেশ করে ইডি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, গোড়া থেকেই ওই দুর্নীতিতে জেলে বন্দি মণীশ সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন দীনেশ। মণীশের মাধ্যমেই সঞ্জয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় দীনেশের। চার্জশিটে ইডি অভিযোগ তুলেছে, আবগারি নীতি বানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন সঞ্জয়। অভিযোগ, যা মূলত নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক মদ উৎপাদনকারী সংস্থা, পাইকারি ও খুচরো বিক্রেতাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই বানানো হয়েছিল। পরে সিবিআই তদন্ত শুরু হলে যা বাতিল করে দেয় কেজরীওয়াল সরকার। যদিও তদন্তকারী সংস্থার তোলা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে সঞ্জয় সিংহের আইনজীবী মোহিত মাথুর বলেন, ‘‘দীনেশ আরোরা একজন প্রধান সাক্ষী। তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা এতটাই অবিশ্বাস্য যে, মূল অভিযুক্ত হয়েও সে রাজসাক্ষী। হঠাৎ করে নিজেকে বাঁচাতে সে কিছু নাম বলতে শুরু করে, আর সেই নামের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় সিংহকে।’’ উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালত জানায়, টাকার লেনদেন বোঝার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে হেফাজতে রেখে (সঞ্জয় সিংহকে) জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy