আস্থা-জয় নীতীশ-তেজস্বী সরকারের। ফাইল চিত্র।
শক্তিপরীক্ষায় পাশ করলেন বিহারের নয়া মহাগঠবন্ধন (মহাজোট) সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সোমবার বিহার বিধানসভায় আস্থাভোটে জয়ী হয় আরজেডি-জেডি(ইউ)-কংগ্রেস-হাম-বাম জোটের । জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২২ ভোট। বিরোধী দল বিজেপি আস্থা-বির্তকে অংশ নিলেও নীতীশের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা’র অভিযোগ তুলে ভোটাভুটির আগে সভা থেকে ওয়াকআউট করে।
বুধবার বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই নাটকীয় ভাবে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন স্পিকার বিজয়কুমার সিন্হা। দু’সপ্তাহ আগে বিহারে ক্ষমতার পালাবদলের পরেই স্পিকার পদ থেকে বিজেপি বিধায়ক বিজয়ের ইস্তফার দাবি তুলেছিলেন মহাজোটের বিধায়কেরা। কিন্তু সে সময় তা খারিজ করে দিয়েছিলেন তিনি। পদে থাকার সুবাদে বিজেপির এই বিধায়ক আস্থাভোট বানচাল করতে পারেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল মহাগঠবন্ধন সরকারের তরফে।
বুধবার বিহার বিধানসভার অধিবেশন শুরুর পরে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করে বিজয় বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। স্পিকার পদের মর্যাদা ও গরিমা রক্ষার স্বার্থে আমি তাই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ এর পরেই বিরোধী বিজেপি শিবিরের বিধায়কদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যে বেলা ২টো পর্যন্ত সভা মুলতুবির ঘোষণা করেন তিনি।
বিজয়ের অনুপস্থিতিতে আস্থাভোট পরিচালনা করেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা জেডি(ইউ) বিধায়ক মহেশ্বর হজারী। প্রসঙ্গত, সাধারণ ভাবে কোনও রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পর সংশ্লিষ্ট আইনসভার স্পিকার ইস্তফা দেওয়াই দস্তুর। সাম্প্রতিক অতীতে কর্নাটকে এমনটা দেখা গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের পরও বিরোধী দলের বিধায়কের স্পিকার পদ আঁকড়ে থাকার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। এই পরিস্থিতিতে বিজয়ের বিরুদ্ধে আগেই অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন আরজেডি-জেডি(ইউ)-কংগ্রেস-হাম-বাম জোটের বিধায়কেরা। কিন্তু তিনি ইস্তফা দেওয়া সেই প্রস্তাব সভায় উত্থাপনের প্রয়োজন হয়নি।
বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পরে গত ১০ অগস্ট বিহারের নয়া সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদে ফের শপথ নিয়েছিলেন জেডি(ইউ) প্রধান নীতীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। সেই সরকারের আস্থাভোট ছিল বুধবার। পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেবে আস্থাভোটে নীতীশের জয় ছিল নিশ্চিত। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় একটি আসন বর্তমানে খালি রয়েছে। গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ১২২ জন বিধায়কের সমর্থন। রাজ্যপালের কাছে নীতীশ দাবি করেছিলেন, সরকারের পাশে রয়েছেন ১৬৪ জন। অন্য দিকে, দু’সপ্তাহ আগে বিরোধী দলে পরিণত বিজেপির রয়েছে ৭৭ জন বিধায়ক।
অর্থাৎ গত দু’বছর সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালানো নীতীশ এ বার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালাতে পারবেন। আরজেডির ৭৯, জেডি(ইউ)-র ৪৫, কংগ্রেসের ১৯ এবং ১৬ জন বাম বিধায়কের পাশাপাশি হাম-এর চার জন রয়েছেন নীতীশের পাশে। রয়েছেন এক মাত্র নির্দল বিধায়ক তথা নীতীশ মন্ত্রিসভার সদস্য সুমিত সিংহও। হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (এআইএমআইএম বা মিম)-এর এক মাত্র বিধায়ক নীতীশকে সমর্থন না করলেও বিজেপির দিকে যাওয়ার সম্ভবনা ছিল না তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy