Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

বিজেপি কর্মীদের হত্যা করে নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা সম্ভব নয়: মোদী

এ দিনে বক্তৃতার গোড়াতেই নাম না-করে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন মোদী।

দলের সদর দফতরে বক্তৃতার আগে নরেন্দ্র মোদী। পিটিআই

দলের সদর দফতরে বক্তৃতার আগে নরেন্দ্র মোদী। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

বিজেপি-কে রুখতে কিছু রাজ্যে দলীয় কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিহারে বিধানসভা ভোটে জয়ের জন্য সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে আজ দিল্লিতে দলের সদর দফতরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ভাবে বিজেপির মোকাবিলা করতে না-পেরে কিছু লোক বিজেপি কর্মীদের হত্যা করার পথ বেছে নিচ্ছে। তাদের বুঝতে হবে, হত্যালীলা চালিয়ে কখনও ভোটে জেতা যায় না।’’

মোদীর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। বিহারে সাফল্যের পরে এ বার মোদী-অমিত শাহ জুটির লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে বলে দলের রাজ্য নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরেই সরব। একের পর এক দলীয় কর্মীর হত্যার পিছনে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে একাধিক বার অভিযোগও জানিয়েছেন তাঁরা। দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়দের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ত্রাসের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। প্রশাসনের মদতে শাসক শিবিরের হামলায় রাজ্যে একশোর বেশি বিজেপি কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া কেরলেও গত কয়েক বছরে দলীয় কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ তুলে সরব বিজেপি। কেরলেও আগামী বছর বিধানসভা ভোট। বিজেপি সূত্রের মতে, ওই দুই রাজ্যেই একের পর এক বিজেপি কর্মীর হত্যার ঘটনা সামনে আসায় আজ মুখ খুলতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিজেপি কর্মীদের হত্যা করে নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা সম্ভব নয়। আমি এমন ব্যক্তিদের হুঁশিয়ারি দেব না। সেই কাজ জনতা করবেই। আমি কেবল তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, গণতন্ত্রে জয়-পরাজয় হয়েই থাকে। কিন্তু মৃত্যুর খেলা গণতন্ত্রে চলতে পারে না। মৃত্যুর খেলা খেলে কেউ ভোট পেতে পারে না।’’

আরও পডুন: প্যাংগংয়ে শান্তি ফেরাতে ঐকমত্যে ভারত-চিন, সেনা পিছনোর যৌথ নজরদারি আকাশপথে​

বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, দলীয় দফতর থেকে বললেও আসলে দেশের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবেই পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল সরকারকে সাবধানবাণী শুনিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে দুই রাজ্যেই যে বিজেপি সক্রিয় হবে, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।

কোভিড পরিস্থিতিতে বিহারেই ছিল দেশের প্রথম নির্বাচন। এর আগে হরিয়ানায় কোনও মতে জয় পেয়েছিল বিজেপি। আর মহারাষ্ট্রে সব চেয়ে বড় দল হয়েও সরকার গড়তে পারেননি অমিত শাহেরা। বিহারেও জয় এসেছে কান ঘেঁষে। ফলে দলীয় কর্মীরা খানিকটা আশাহত হয়ে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা বিজেপি নেতৃত্বের। আগামী বছর ছয় রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে তাঁদের চাঙ্গা রাখতেই বড় করে বিজয়োৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

আজ দুপুর থেকেই দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় ভবনে ভিড় জমাতে শুরু করেন বিজেপি সমর্থকেরা। পাঁচটার পর একে একে এসে আসেন কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা। সন্ধে ৭.১০ মিনিটে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। এ দিনে বক্তৃতার গোড়াতেই নাম না-করে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন মোদী। তিনি বলেন, “পরিবারভিত্তিক দলগুলি গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় বিপদ। একটি জাতীয় দলও এর শিকার। কিছু লোকের ধারণা, দল তাঁর পারিবারিক সম্পত্তি। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে, সততার সঙ্গে কাজ করলে, দেশের জন্য কাজ করলে তবেই আজকের দিনে ক্ষমতায় থাকা সম্ভব। বিহারের ফলই তার প্রমাণ।’’

বিহারে এনডিএ এবং বিরোধী মহাগঠবন্ধনের ভোটের ফারাক খুবই সামান্য। মোদীর দাবি, মূলত ‘নীরব’ মহিলা ভোটারেরাই এনডিএ-র পিছনে দাঁড়িয়ে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন। সমীক্ষা বলছে, বিহারে এ বার পুরুষদের থেকে ৫ শতাংশ বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন। যার বেশির ভাগটাই গিয়েছে এনডিএ-র ঝুলিতে। আজ তাই মহিলাদের বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন মোদী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE