বিহারের দশমের বোর্ড পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর প্রথম হয়েছে রঞ্জন বর্মা। ৫০০-র মধ্যে সে পেয়েছে ৪৮৯। ঘটনাচক্রে, তার ভাই রঞ্জিতও ভাল ফল করেছে। সে পেয়েছে ৪৭৭। কৃষকসন্তান রঞ্জন এবং রঞ্জিত। কিন্তু বছর দেড়েক আগে বাবাকে হারিয়েছে ওরা। তার পর থেকেই সংসারের বোঝা নেমে আসে রঞ্জনের উপর। কিন্তু সেই বোঝা সামলে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল রঞ্জন। মায়ের একটি কথাই তাঁকে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। সে কথা বলতে বলতে চোখ থেকে জলের ধারা নেমে আসে রঞ্জনের।
এক সংবাদমাধ্যমকে রঞ্জন বলে, ‘‘মা বলেছিল, বাবু, পরীক্ষায় তুই রাজ্যের মধ্যে প্রথম হতে পারবি না? তা হলে আমিও টিভিতে তোর সাফল্যের কথা বলতে পারতাম!’’ আর এই কথাটাই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। রঞ্জন জানায়, যত ক্ষণ সে পড়ত, মা জেগে থাকতেন। অনলাইনে কী পড়াচ্ছে তা-ও নজর রাখতেন।
আরও পড়ুন:
পুত্রের সাফল্যে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রঞ্জনের মা। তিনি বলেন, ‘‘খুব আনন্দ হচ্ছে। আজ এই দিন দেখার জন্যই অপেক্ষা করে ছিলাম। রঞ্জনের বাবা বেঁচে থাকলে অত্যন্ত খুশি হতেন।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, রঞ্জনের বাবা দেড় বছর আগে মারা গিয়েছেন। তার পর থেকেই পরিবারে আর্থিক অনটন নেমে আসে। সংসার টানতে হাল ধরে রঞ্জন। ক্ষেতে কাজ করত। সঙ্গে বইও নিয়ে যেত। কাজে ফাঁকে যতটুকু ফুরসত পেত, সেই সময়েই পড়াশোনা করত। তার পর বাড়ি ফিরে রাত জেগে চলত পড়াশোনা। পাড়ার ছেলে রাজ্যে প্রথম হওয়া খুশি পড়শিরাও। তাঁরা জনিয়েছেন, অনেক অনটনের মধ্যে যে ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছিল রঞ্জন, তার মূল্য পেয়েছে সে।
রঞ্জনের ভাই রঞ্জিত ভোজপুর জেলায় প্রথম হয়েছে। দুই ভাইয়ের ইচ্ছা তাঁরা আইএএস হতে চান।