বাঁ দিক থেকে, সিপিমের বিজয়ী প্রার্থী অজয় কুমার, সিপিএমের সত্যেন্দ্র যাদব, জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এবং লিবারেশনের প্রার্থী সন্দীপ সৌরভ।
ভোটের বাক্স খুললেই রক্তক্ষরণ! সাম্প্রতিক কালের প্রায় সব নির্বাচনে বামেদের জন্য এই চেনা ছবি বদলে গেল বিহারে। মহাজোটের মধ্যে সাফল্যের হারে সব চেয়ে এগিয়ে বামেরাই। গত দু’দশকের মধ্যে বাংলা, কেরল ও ত্রিপুরার বাইরে কোনও রাজ্যে এই প্রথম ভোটে এমন ফসল তুলতে পারল তারা।
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ঘোষণা হয়নি। তবে রাত পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, বামেরা এগিয়ে ১৮টি আসনে। এর মধ্যে সব চেয়ে চমকপ্রদ ফল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের। তারা এগিয়ে ১২টিতে। সিপিএম এবং সিপিআই এগিয়ে তিনটি করে আসনে। ভরতপুরে সিপিএমের অজয় কুমার, মানঝিতে সত্যেন্দ্র যাদব বা বলরামপুরে লিবারেশনের মেহবুব আলমের মতো প্রার্থীদের জয় নিশ্চিতও হয়ে গিয়েছে।
মহাজোটের মধ্যে ২৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বামেদের এমন ফল তাদের আবার চর্চায় ফিরিয়ে এনেছে। কংগ্রেস যেখানে ৭০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ২০টিতে এগিয়ে, সেখানে বামেদের সাফল্যের হার নজর কাড়ছে। বিহার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক অবধেশ কুমার সিংহ যে কারণে দাবি করছেন, ‘‘মহাজোটের মধ্যে বামেরা যদি আরও বেশি আসনে লড়ার সুযোগ পেত, ফল আরও ভাল হত।’’
আরও পডুন: তেজস্বীর তেজ, তবু ‘জঙ্গলে’ বিধি বামই
পাশের রাজ্যে এমন ফলাফলে উজ্জীবিত বাংলার বাম নেতৃত্বও। সংগঠন ও সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করার পাশাপাশি এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন-রফার ক্ষেত্রেও এই ফল তাঁদের বাড়তি জোর এনে দেবে বলে বাম নেতৃত্বের ধারণা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বিশ্লেষণ, ‘‘গত বছর লোকসভা ভোটের হিসেবে বিহারে এনডিএ এগিয়েছিল ২২৩টি বিধানসভা আসনে। সেটা এক ধাক্কায় শ’খানেক কমে গিয়েছে। মহাজোটের দলগুলি এগিয়েছিল ১৫টি বিধানসভা আসনে। সেটা অনেক বেড়েছে। মানুষের রুটি-রুজির দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে লড়াই করেই ভাল ফল পেয়েছে বামপন্থীরা।’’
আরও পডুন: বিহারের জয় মোদীর কৃতিত্ব, বলছে বিজেপি
একই সুর লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যেরও। তাঁর মতে, ‘‘সাধারণ, গরিব মানুষের সঙ্গে মাটি কামড়ে আমরা বিহারে লড়াই করেছি। সেই সঙ্গেই তরুণ প্রজন্ম, কৃষক ও শ্রমিক অংশ থেকে আসা আমাদের প্রার্থীরাও মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন।’’ পুরনো অবিভক্ত বিহারে নকশালপন্থী তথা বামেদের কিছু প্রভাব ছিল। জাত-পাত নির্ভর রাজনীতির বাঁকে শ্রেণি লড়াই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে তার পরে। করোনা এবং লকডাউনের সময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন খানিকটা হলেও আবার মানুষের বিশ্বাস তাঁদের দিকে টানতে পেরেছে বলে বাম নেতারা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy