Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bihar Election 2020

জঙ্গল-রাজ কার আমলে, বিহার ভোটে তরজা

কংগ্রেসের অভিযোগ, আইনের শাসন ভেঙে পড়ার অভিযোগ তুলে লালু-রাবড়ীর দেড় দশককে বার বার ‘জঙ্গল রাজ’ বলে দাগিয়ে দিচ্ছেন মোদী এবং তাঁর দল। অথচ নীতীশের শাসনে বিহারে অপরাধ বেড়েছে১৫০ শতাংশ!

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

লালু প্রসাদ-রাবড়ী দেবীর পনেরো বছর বনাম নীতীশ কুমারের পনেরো। বিহারের বুকে কোন দেড় দশক আসল ‘জঙ্গল-রাজ’, সেই তরজায় সরগরম ওই রাজ্যে শেষ বেলার ভোট প্রচারও।

বুধবার দিল্লি থেকে এক গুচ্ছ টুইটে নরেন্দ্র মোদীর দাবি, বিহার বরাবরই গণতন্ত্রের মূল মন্ত্রে আস্থাশীল। ওই রাজ্যের মানুষ জানেন, আইনের শাসন থেকে শুরু করে রোজগারের বন্দোবস্ত- উন্নয়নমুখী সমস্ত কিছু সম্ভব পটনায় এনডিএ জোট ক্ষমতায় ফিরলে। ইঙ্গিত, রাজ্যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থেই মহাজোটের হাত ধরে ‘জঙ্গল রাজ’ ফিরিয়ে আনার বদলে ফের এক বার নীতীশের ‘সুশাসনে’ আস্থা রাখবেন তাঁরা। কিন্তু এ দিন বিহারের মাটিতে একাধিক সভা করা কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কটাক্ষ, বিহারের নতুন প্রজন্ম এ বার এতটাই রেগে যে, ‘ভোট-মেশিনে (ইভিএম) কারসাজি করলেও’ পার পাবে না বিজেপি-জেডিইউ। কংগ্রেসের অভিযোগ, আইনের শাসন ভেঙে পড়ার অভিযোগ তুলে লালু-রাবড়ীর দেড় দশককে বার বার ‘জঙ্গল রাজ’ বলে দাগিয়ে দিচ্ছেন মোদী এবং তাঁর দল। অথচ নীতীশের শাসনে বিহারে অপরাধ বেড়েছে১৫০ শতাংশ!

গত কাল বিহারে এসে মোদী বলেছিলেন, “যে বিহারের ভোটে এক সময়ে শুধু প্রাণহানি, রক্তারক্তির খবর আসত, সেখানে করোনা-কালেও ভোট হচ্ছে নির্বিঘ্নে।…ভুলে যাবেন না, তখন এমন শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা ভাবাই যেত না। বুথ লুট করে, ভয় দেখিয়ে ভোটদানের অধিকার থেকেই বঞ্চিত করা হত সাধারণ মানুষকে।” রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই টুইটে ফের গণতন্ত্রের কথা তুলেছেন তিনি। এর আগে প্রত্যেক জনসভায় নিয়ম করে মনে করিয়েছেন মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদবের বাবা-মায়ের আমলে খুন, অপহরণ, মহিলাদের নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদির বাড়বাড়ন্তের কথা।

কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার পাল্টা প্রশ্ন, “ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরোর যে পরিসংখ্যান মোদী সরকার প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, নীতীশ-জমানায় ২০০৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিহারে অপরাধ বেড়েছে ১৫০%। বছরে ১.০৭ লক্ষ থেকে ২.৭ লক্ষ। মোট খুন হয়েছেন ৪৪ হাজার জন। দৈনিক অপরাধের সংখ্যা ৭৩৭টি। মহিলাদের উপরে অত্যাচার, শিশু অপহরণের ঘটনাও আকাশছোঁয়া। তা হলে সত্যিকারের জঙ্গল-রাজ কোনটি?” কংগ্রেসের মতে, অপরাধের সংখ্যা বিচারে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের দখলে। দু’জায়গাতেই মসনদে বিজেপি কিংবা তার জোট সরকার। এর পরে জঙ্গল-রাজের অভিযোগের আঙুল প্রধানমন্ত্রী অন্য কারও দিকে তোলেন কী ভাবে?

আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে রেকর্ড সুস্থ, ৯ শতাংশের নীচে সংক্রমণের হার​

আরও পড়ুন: মাথাব্যথা ভিড় নিয়েই, কোন রুটে কত লোকাল দরকার, বৈঠকে রেল-রাজ্য

টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকার কারণে সরকার-বিরোধী ক্ষোভের চোরাস্রোত এবং লকডাউনে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জমে থাকা রাগ যে ব্যালট-যুদ্ধে বেগ দেবে, তা জানেন মোদী। সেই কারণে আগে প্রচারে এবং এ দিন টুইটে আগামী দিনে বিহারের মাটিতেই কাজের সুযোগ তৈরির স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। তেজস্বীর ১০ লক্ষ সরকারি চাকরির সুযোগ তৈরির দাবির মুখে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে তাঁর দাবি, বিহারে বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্পে কেন্দ্র যে বিপুল টাকা ঢেলেছে, তাতে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে যথেষ্ট। বলেছেন, “বিহারের গরিব মানুষ জানেন যে, তাঁদের ভালর জন্য দিল্লিতে নিরন্তর কাজ করছেন তাঁদের সেবক।”

কিন্তু রাহুলের মতে, এখন এই কথায় চিঁড়ে ভেজা শক্ত। এ দিন প্রচারে নামার আগেই এক টুইটে পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষোভ উস্কে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন তিনি। ভিডিয়ো-বার্তায় দেখিয়েছেন, কী ভাবে লকডাউনের সময়ে অশেষ দুর্গতির মুখে পড়তে হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। রাহুলের দাবি, “তখন ক্ষমতায় না-থেকেও ওই শ্রমিকদের জন্য যথাসাধ্য করার চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস।” সেই সঙ্গে জনসভায় তাঁর মন্তব্য, “ইভিএম আসলে মোদী ভোটিং মেশিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ বার বিহারের নতুন প্রজন্ম এতটাই রেগে যে, ক্ষমতায় আসছে মহাজোট।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy