নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
এক ঝটকায় জম্মু-কাশ্মীরের মানচিত্র ও মর্যাদা বদলে দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তার পর ভূস্বর্গের যে পরিস্থিতি, তা বদলের প্রশ্নে তাড়াহুড়ো করতে রাজি নন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় তিনি জানালেন, উপত্যকায় বদল হবে ‘ধীরে ধীরে।’
অলিতে-গলিতে সেনা মোতায়েন করে, রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি রেখে যে পরিস্থিতি এখন কাশ্মীরে তৈরি হয়েছে, তা বদল করাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কী ভাবে সরকার সেই সমস্যার মোকাবিলা করবে, মোদীর কাছ থেকে সেই পথনির্দেশই প্রত্যাশা করেছিল গোটা দেশ। মোদী বললেন, জম্মু-কাশ্মীরে ভোট হবে, মানুষ নিজের বিধায়ক-মুখ্যমন্ত্রী পাবেন। ইদে বাড়ি ফেরার সুযোগ পাবেন প্রবাসী কাশ্মীরিরা। রোজগার হবে। হবে উন্নয়নও। আসবে বিনিয়োগ। সর্বোপরি রাজ্যের মর্যাদাও আবার ফিরে পাবে জম্মু-কাশ্মীর।
প্রায় চল্লিশ মিনিটের বক্তৃতায় মূল আবেদনটি ছিল জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ যদি পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, তা হলে বদলে ‘যেতে পারে’ ভূস্বর্গের চেহারা। সেই বদল ঘটাতে বিরোধীদেরও পাশে থাকার আহ্বান জানান মোদী।
আজ প্রথমেই উপত্যকার পুলিশের উদ্দেশে বার্তা দেন মোদী। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে পুলিশের মধ্যে বিক্ষোভ, এমনকি সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার আশঙ্কা ছিল বলে গোয়েন্দারা রিপোর্ট দিয়েছিলেন অমিত শাহকে। সরকারি ভাবে অস্বীকার করলেও, সংসদে বিল পেশের আগে উপত্যকার স্পর্শকাতর থানাগুলির দায়িত্ব তাই আধাসেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু আধাসেনা সরে গেলে উপত্যকা ফের সামলাবে কাশ্মীর পুলিশই। তাই শুরুতেই পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশে মোদী বলেন, অন্য কেন্দ্রশাসিত এলাকার মতোই আর্থিক সুবিধা পাবেন তাঁরা। এলটিসি থেকে শুরু করে সন্তানদের শিক্ষাখাতে টাকা দেওয়া হবে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উপত্যকায় ভোট করার আশ্বাস দিয়েছেন বটে, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেননি মোদী। অথচ, বিল পেশের আগে সরকারই জানিয়েছিল, তারা ভোট করাতে প্রস্তুত। কিন্তু বিরোধীদের মতে, এখন ভোট করাতে দু’বার ভাবতে হবে কেন্দ্রকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবদুল্লা ও মুফতি পরিবারের প্রতি উপত্যকার মানুষের সহানুভূতি বেড়ে যাবে কি না, সেই প্রশ্নও রয়েছে। মোদী এ দিন তাই ‘নতুন কাশ্মীর’-এর নির্বাচনে পরিবারতন্ত্রকে ছুড়ে ফেলার আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী-বিধায়কদের বেছে নেওয়া হবে নতুন প্রজন্ম থেকে। যাঁদের হাত ধরে গড়ে উঠবে নতুন কাশ্মীর।’’
উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী আজ সাবধান করে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের বর্ধিত রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে। এর প্রভাব কী ভাবে কমানো যায়, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মোদী। এ যাবৎ বিশেষ মর্যাদার কারণে আর্থিক সুবিধা পেয়ে এসেছে কাশ্মীর। আগামী দিনে রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে উপত্যকার মানুষ করের কড়া দাওয়াইয়ের স্বাদ পেতে পারেন বলে আশঙ্কা অনেকের। তবে মোদীর দাবি, সরকারের সিদ্ধান্তে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে।
এ দিনের বক্তৃতায় দু’বার পাকিস্তানের নাম নেন মোদী। বলেন, অনুচ্ছেদ ৩৭০-এর কারণে পাকিস্তান উপত্যকায় সন্ত্রাসে মদত দিয়ে এসেছে। উস্কানি দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদে। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু মুষ্টিমেয় লোক পরিস্থিতি খারাপ করতে সক্রিয়।’’ তাদের সামলাতে স্থানীয়দের উপরেই ভরসা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy