Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bifurcation of J&K

কাশ্মীরি ভাইবোনেরা, দেশ তোমাদের পাশে, আশ্বাস মোদীর

আজই কাশ্মীরের প্রতি মোদীর আশ্বাস, ‘‘জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখের ভাইবোনেদের আমি স্পষ্ট করে আশ্বস্ত করতে চাই, তাঁদের উন্নয়ন তাঁদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েই হবে।’’

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৩৮
Share: Save:

গত সপ্তাহে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের লক্ষ্যেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার, দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারের আসার ৭৫ দিন পূর্ণ করা উপলক্ষে সাক্ষাৎকারেও নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের বেশির ভাগ অংশ জুড়ে রইল কাশ্মীর। কাশ্মীরি ‘ভাইবোনেদের’ উন্নত ভবিষ্যতের জন্য সরকারের দায়বদ্ধতার কথা বলে প্রধানমন্ত্রী কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে থাকা উপত্যকাবাসীর আস্থা ফেরাতে চাইলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় সরকার মেনেছে যে, শুক্রবার নমাজের পরে অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল শ্রীনগরে। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার জুড়ে কাশ্মীরকে ভরসা দেওয়ার প্রয়াস দেখা গিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, উপত্যকার মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আজকের বার্তাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, জনমনে আস্থার ঘাটতি তাঁরা অনুভব করেছেন। ১৫ অগস্টের পরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর কাজ শুরু করা যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। কাল ইদে দিল্লির মাটি থেকেই কাশ্মীরি ছাত্রছাত্রীদের আর্তি ছিল, দয়া করে বাড়ির সঙ্গে কথা বলার রাস্তাটা অন্তত খুলে দিন!

আজই কাশ্মীরের প্রতি মোদীর আশ্বাস, ‘‘জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখের ভাইবোনেদের আমি স্পষ্ট করে আশ্বস্ত করতে চাই, তাঁদের উন্নয়ন তাঁদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েই হবে।’’ প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে আলোচনাও এ দিনই শুরু করেছে সরকার। সাক্ষাৎকারে মোদী অবশ্য সে প্রসঙ্গ তোলেননি।

মোদী আজ দাবি করেন, সরকার ‘স্পষ্ট নীতি এবং সঠিক দিশা’য় চালিত হচ্ছে। চন্দ্রযান থেকে তিন তালাক আইন, তারই অঙ্গ। কাশ্মীর নীতিও। ৩৭০ রদ করার বিরোধিতা যাঁরাই করছেন, তাঁরা কায়েমি স্বার্থ, পরিবারতন্ত্র, জঙ্গিবাদ এবং ‘বিশেষ কিছু বিরোধী বন্ধু’র সমর্থক বলে অভিযোগ করেছেন মোদী। দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের স্লোগানকেই ফের উস্কে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা (কাশ্মীর প্রশ্ন) রাজনীতি নয়, জাতির বিষয়। দেশবাসী দেখতে পাচ্ছেন, কী ভাবে প্রয়োজনীয় এবং কঠোর সিদ্ধান্ত এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। আগে এটাই অসম্ভব বলে মনে করা হত।’’ এখানেই না থেমে তিনি বিরোধী মাত্রেই কার্যত মাওবাদী আর জঙ্গিদের সমার্থক বলে দেগে দেন। মোদীর কথায়, ‘‘বিরোধীদের হৃদয় মাওবাদী আর জঙ্গিদের জন্য স্পন্দিত হয়। তারা সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া কিছুই করে না।’’

৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পরে যে ভাবে কাশ্মীরে জমি-বাড়ি কেনা বা কাশ্মীর থেকে বৌ আনার সম্ভাবনা নিয়ে মশকরা শাসক নেতানেত্রী থেকে শুরু করে গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের মুখে শোনা যাচ্ছে, সেটাও কাশ্মীরের জনমনে ভাল বার্তা দিচ্ছে না বলে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেরই মত। মোদী কিন্তু এ দিন বলেছেন, ‘‘প্রতিটি ভারতীয় জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের পাশে রয়েছে।’’ এ কথা বলে তিনি বেফাঁস কথার ক্ষত নিরাময়ের চেষ্টা করলেন বলেও মনে করা হচ্ছে।

অনেকটা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেরই প্রতিধ্বনি করে মোদী আজ কাশ্মীরে আশু উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। ৩৭০-ই কাশ্মীরের উন্নয়নকে শিকলে বেঁধে রেখেছিল বলে দাবি করে তিনি বলেন, এ বার বিপিও থেকে স্টার্টআপ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ থেকে পর্যটন, নানা ধরনের লগ্নির সম্ভাবনা খুলে যাবে। মুকেশ অম্বানী আগের দিনই এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

৩৭০ রদ করা গণতন্ত্রের বিরোধী বলে যাঁরা সরব হয়েছেন, তাঁদের প্রতি মোদীর পাল্টা দাবি, গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই বরং ৩৭০ বিলোপ করা হয়েছে। কাশ্মীরের মানুষও গণতন্ত্র চান। শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল অংশগ্রহণই তার প্রমাণ। কাশ্মীরকে এত কাল যাঁরা শাসন করে আসছিলেন, তাঁরাই নতুন নেতৃত্বকে এগিয়ে আসতে দেননি, গণতন্ত্রীকরণ তাঁরাই চাননি বলে অভিযোগ মোদীর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE