Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bhima-Koregaon

ভীমা-কোরেগাঁও হিংসায় গ্রেফতার ৮৩ বছরের মিশনারি স্টান স্বামী

আদিবাসী অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী স্টানের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু করেছে এনআইএ।

স্টান স্বামী— ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

স্টান স্বামী— ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ১১:৫৯
Share: Save:

গ্রেফতারির আশঙ্কা করেছিলেন কিছুদিন আগেই। মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁও হিংসার ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পরেই মানবাধিকার সংগঠন ‘পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ’-এর কাছে চিঠি লিখে সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা মিলেও গেল। ঝাড়খণ্ডের ৮৩ বছরের জেসুইট মিশনারি স্টান স্বামীকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে এনআইএ।

সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে মাওবাদী যোগের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে আসা এনআইএ-র একটি দল স্বামীকে তাঁর রাঁচির বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁরা বাড়িতে মিনিট কুড়ি ধরে তল্লাশিও চালান। এই নিয়ে ভীমা-কোরেগাঁও হিংসায় ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হল।

ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ শুক্রবার স্বামীর গ্রেফতারি নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেন। তাঁর টুইট, ‘‘স্টান স্বামী আজীবন আদিবাসীদের অধিকারের লড়াই করেছেন। সেই কারণেই নরেন্দ্র মোদী সরকার নিপীড়ন করে তাঁর মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ, এই সরকারের আমলে আদিবাসীদের জীবন ও জীবিকার চেয়ে খনি সংস্থাগুলির মুনাফা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’

আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণও স্বামীর গ্রেফতারির জন্য এ দিন মোদী সরকারকে দুষে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘বিজেপি সরকারের আমলে এনআইএ-র হিংসা সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’

তৃতীয় ইঙ্গ-মরাঠা যুদ্ধে পেশোয়াদের চূড়ান্ত পরাজয় উপলক্ষে প্রতি বছর ১ জানুয়ারি ভীমা-কোরেগাঁওয়ে জয় স্তম্ভে দলিত মানুষ জড়ো হন। ১৮১৮ সালে এই দিনেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পেশোয়া শক্তিকে পরাজিত করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে সাহায্য করেছিল দলিত ‘মাহার’ জনগোষ্ঠী। তাই ওই দিনটিকে তাঁরা ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করেন তখন থেকেই। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর দলিতদের ‘এলগার পরিষদ’-এর এই অনুষ্ঠানের পর দিনই হিংসা ছড়িয়েছিল পুণে জেলার ভীমা-কোরেগাঁও এলাকায়। ২০১৮-র ১ এবং ২ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় দলিত-মরাঠা সংঘর্ষ হয়।


হিংসার তদন্তে নেমে সমাজকর্মী গৌতম নওলখা, ভারাভারা রাও, অরুণ ফেরেরা, রোনা উইলসন, ভারনন গঞ্জালভেস ও সুধা ভরদ্বাজ-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। বিজেপির তরফে তাঁদের ‘শহুরে নকশাল’ বলেও চিহ্নিত করে দেওয়া হয়।

যদিও বিরোধীদের দাবি, সরকার বিরোধী অবস্থানের জন্যই ওই সমাজকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। গত নভেম্বরে মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকার গড়ার পরে ভীমা-কোরেগাঁও হিংসায় অভিযুক্তদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের তৎপরতা শুরু হয়। এর পরেই তড়িঘড়ি তদন্তের ভার দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ-কে।

আরও পড়ুন: জলকামান ছুঁতে পারল না দিলীপকে, ১ ঘণ্টার কর্মসূচি হল ‘রীতি’ মেনেই

গত এপ্রিলে ভীমা কোরেগাঁও মামলায় শিক্ষাবিদ আনন্দ তেলতুম্বডে এবং সমাজকর্মী গৌতম নওলাখাকে গ্রেফতার করে এনআইএ। জুলাই মাসে প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় স্টান স্বামীকে। তার আগে গত বছর জুন মাসে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল তাঁকে।

আরও পড়ুন: রামবিলাসের জীবনাবসান

‘পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ’ এদিন জানিয়েছে, স্বামীকে দু’দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরে ফের মুম্বইয়ের এনআইএ দফতরে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু বয়স এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি মুম্বইয়ে যেতে চাননি। চিঠিতে স্বামী লিখেছেন, ‘‘পুলিশ এবং এনআইএ-র সামনে প্রতিবারই দৃঢ় ভাবে মাওবাদী সংস্রবের কথা আমি আমি অস্বীকার করেছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy