লোকসভার প্রোটেম স্পিকার ভর্তৃহরি মহতাব। ছবি: সংগৃহীত।
নতুন লোকসভার স্পিকার কে হবেন, তা নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি দূরে থাক, প্রোটেম স্পিকার নিয়েই দুই শিবিরের ধুন্ধুমার লেগে গেল।
কংগ্রেসের কেরলের সাংসদ কে সুরেশের বদলে রাষ্ট্রপতি ওড়িশার বিজেপি সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাবকে লোকসভার প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করায় কংগ্রেস অভিযোগ তুলল, দলিত বলেই সুরেশকে প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করা হয়নি। এতে মোদী সরকারের দলিত বিরোধী মনোভাব ফের স্পষ্ট। কেরলের রাজনীতিতে কংগ্রেস-বামের লড়াই থাকলেও এ বিষয়ে সরব কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও।
উল্টো দিকে, মোদী সরকারের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস ভোটে হেরে গেলেও তা মানতে পারছে না। তাই প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ নিয়ে হইচই করছে। স্পিকার নিয়োগের ক্ষেত্রে ঐকমত্য তৈরি করতে মোদী সরকার বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলবে—এমন কোনও আশ্বাস তিনি দিতে চাননি। সাংবিধানিক দায় থাকলেও গত পাঁচ বছর লোকসভায় কোনও ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ করা হয়নি। সাধারণত বিরোধী শিবিরকে ডেপুটি স্পিকারের পদ ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বারের লোকসভায় বিরোধীদের শক্তি বাড়লেও তাঁদের ডেপুটি স্পিকারের পদ ছেড়ে দেওয়া হবে, এমন কোনও আশ্বাসও রিজিজু দিতে চাননি।
লোকসভা ভোটের পরে নতুন সাংসদদের শপথগ্রহণের জন্য লোকসভার প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করা হয়। তারপরে লোকসভার স্পিকারের জন্য নির্বাচন হয়। প্রথা অনুযায়ী, সবথেকে বেশি বারের সাংসদকেই প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করা হয়। সেই হিসেবে আট বারের সাংসদ সুরেশকেই প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করা হবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতি সাত বারের সাংসদ ভর্তৃহরিকে প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করেন। তিনি ভোটের আগে বিজু জনতা দল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ অভিযোগ তোলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী এখন আর ‘শ্রী ৪০০’ নন, ‘শ্রী ২৪০’। বিজেপিকে তা বুঝতে হবে। বিজেপি দলিত-বিরোধী। তাই সংবিধান বদলাতে চেয়েছিল। এখন দলিতকে বঞ্চিত করে মহতাবকে প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করে ওরা সংবিধানের অপমান করেছে।’’ কেরলের বাম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের প্রশ্ন, কেন গত বছর বিরোধীদের কাউকে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে নিয়োগ করা হয়নি? সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার অভিযোগ, মোদী সরকার বিরোধীদের প্রোটেম স্পিকারের পদেও দেখতে চায় না।
সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী রিজিজু কংগ্রেসকে পাল্টা নিশানা করে বলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ‘ফাদার অব দ্য হাউস’ প্রথা মেনে যিনি একটানা সবথেকে বেশিবারের সাংসদ, তাঁকেই প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করা হয়েছে। সুরেশ একটানা আট বার সাংসদ হননি। মহতাব টানা সাত বার সাংসদ হয়েছেন। কংগ্রেস ২০০৪-এ এবং তার আগে এমন প্রথা ভেঙেছে বলে রিজিজুর অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy