দিল্লির পটপরগঞ্জে পূর্বাচল পূজা সমিতির প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।
ভোট বড় বালাই। পাশের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে বছর ঘুরলেই ভোট। তাই দুর্গাপুজো করতে না দিলে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত হতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে ভোটের বাক্সে। সেই কারণে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও মাস খানেক আগেই দুর্গাপুজোর ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্ত দিল্লিতে সেই ছাড়পত্র জোগাড় করতে কালঘাম ছুটে গিয়েছে স্থানীয় বাঙালিদের। একে করোনা নিয়ে কড়াকড়ি, তায় মহালয়ার পরে কার্যত ছাড়পত্র মেলায় কার্যত নমোনমো করেই পুজো সারতে হচ্ছে রাজধানীর বাঙালির।
এ বছর আশি বছরে পা দিয়ছে করোলবাগ পুজো সমিতি। বড় করে পুজো করার পরিকল্পনা করলেও করোনার কারণে কমে গিয়েছে জৌলুস। সরকার মৌখিক অনুমতি দিলেও ওই পুজো সমিতির অন্যতম কর্তা দীপক ভৌমিক দ্বিতীয়ার দিন পর্যন্ত জানতেন না এ বারে পুজো হবে কি না। শেষবেলায় পাওয়া ছাড়পত্রের কারণে কার্যত ঘট পুজো করেই পুজো সারছে দিল্লির অনেক পুজো কমিটিই। অথবা কমে গিয়েছে মূর্তির দৈর্ঘ্য। পূর্ব দিল্লির পটপরগঞ্জের পূর্বাঞ্চল পুজো কমিটি আবার পার্ক থেকে পুজো সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় কমিউনিটি হলে। সেখানেই পাঁচ দিন পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুজোর কলকাতাকে কিছুটা হলেও খুঁজে পাওয়া যায় দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে। বাঙালি অধ্যুষিত ওই এলাকায় অন্তত ডজন খানেক পুজো ঘুরে ঘুরে দেখে থাকেন দর্শনার্থীরা। এ বারে সেই পুজোর সংখ্যা নেমে এসেছে দু’টি বা তিনটিতে। চিত্তরঞ্জন পার্কের পকেট ফোর্টির পুজো নমো নমো করেই হচ্ছে। ছোট প্যান্ডেলেই ছোট মূর্তি। রাত বাড়লেই বন্ধ করা হচ্ছে মণ্ডপে প্রবেশ। পকেট ফোর্টি ছাড়া ডি-ব্লকে মূর্তি পুজো হলেও চিত্তরঞ্জন পার্কের বি ব্লক, ই-ব্লক, কোঅপারেটিভ, মেলা গ্রাউন্ডের উদ্যোক্তারা এ বার ঘট পুজোকেই বেছে নিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক দিন ঘট পুজো করে এ যাত্রা উতরে দেবেন বলে স্থির করেছেন। মেলা গ্রাউন্ডের পুজোর সঙ্গে যুক্ত এক জনের কথায়, “আগামী বছর সব ঠিক থাকলে আবার বড় করে পুজো হবে।’’ তবে কিছুটা হলেও চিত্তরঞ্জন পার্কে পুজোর মেজাজ ধরে রেখেছে কালীমন্দির সোসাইটি। পুজোকর্তা প্রদীপ সমাদ্দার বলেন, ‘‘দর্শনার্থীদের জন্য সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছটা পর্যন্ত খুলে রাখা হচ্ছে মন্দির। থাকছে ভোগের ব্যবস্থা।’’ দিল্লি সরকার নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ভিড়ের ভিডিয়ো পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে পুজো কমিটিগুলিকে। বিধি না মানলে যে কোনও সময়ে পুজো বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি রয়েছে।
দিল্লির বাইরে কিন্তু চিত্রটি সম্পূর্ণ আলাদা। করোনার কারণে পুজো ছোট করে হলেও প্রশাসনের ঝামেলা নেই। পুজো কমিটিগুলিকে কেবল ভিড় নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে কিছু নির্দেশ পালন করতে বলা হয়েছে। নয়ডা কালিবাড়ির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “অন্যান্য বারের ১৪ ফুট ঠাকুরের তুলনায় এ বারে পাঁচ ফুটের প্রতিমা করা হয়েছে। নজর রাখা হবে যাতে মণ্ডপ প্রাঙ্গণে এক সঙ্গে ১০০-১৫০ জনের বেশি ভিড় না করেন। ভোগ বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ ইন্দিরাপুরমের প্রান্তিক পুজো কমিটি করোনা আবহেও থিমে ভরসা রেখেছে। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে জীবনোৎসব-লেটস সেলিব্রেট লাইফ। টিকাকরণে উৎসাহ দিতে যাঁরা দু’টি টিকা নিয়েছেন, তাঁরা প্রমাণ পত্র দেখালে দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন ব্যাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy