ছবি: পিটিআই।
প্রথমে শিক্ষায়। তার পর সর্বস্তরে। দেশজুড়ে হিন্দি ভাষা ব্যবহারের প্রশ্নে চাপ বাড়াচ্ছে শাসক শিবির। বিরোধীরা মনে করছেন, বিজেপির এই হিন্দি-সক্রিয়তার মধ্যে পরিকল্পিত ছক আছে। অনেকের মতে, হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান— সঙ্ঘ পরিবারের এই নীতিকে বাস্তবায়িত করতে এখন জল মাপছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। এরই মধ্যে গত কালই সংস্কৃতি মন্ত্রকের ‘হিন্দি রাষ্ট্রভাষা’ বলে করা একটি ফেসবুক পোস্ট গোটা বিতর্ককে উস্কে দিয়েছে। পোস্টের বিষয়টি তাদের অজানা বলে মন্ত্রক অবশ্য পরে সেটি মুছে দেয়।
হিন্দি নিয়ে বিজেপির এমন প্রচারের সঙ্গে অনেকেই মিল পাচ্ছেন অনুচ্ছেদ ৩৭০ রদের। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘অনেকেই ভেবেছিলেন ৩৭০ প্রত্যাহার বিজেপি আদর্শগত বিশ্বাস। বাস্তবে হবে না। কিন্তু হল তো!’’ বিরোধীদের আশঙ্কা, হিন্দি চাপানোর পরিকল্পনার অন্যতম অঙ্গ হল, জাতীয় শিক্ষা নীতিতে হিন্দি শেখাকে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব। মূলত দক্ষিণের রাজ্যগুলির চাপে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র পিছিয়েছে। সঙ্ঘ পরিবারের একটি অংশ দীর্ঘ দিন ধরেই ইংরেজি শিক্ষার বিরুদ্ধে। অনেকের আশঙ্কা, প্রথমে ইংরেজি ও পরে আঞ্চলিক ভাষাশিক্ষাকে ঐচ্ছিক করে আবশ্যিক ভাষা হিসেবে শুধু হিন্দিকেই প্রাধান্য দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির।
হিন্দির উপরে জোর দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশকে এক সূত্রে বাঁধার কথা বলেছেন। কোনও ভাষা ব্যবহারের প্রশ্নে তা কার্যকর করার অধিকার তাঁর মন্ত্রকের হাতেই। কংগ্রেসের এক নেতার আশঙ্কা, ‘‘এমনও হতে পারে শাসক শিবির দেখে নিতে চাইছে, কোথায় বিতর্কের ঢেউ উঠছে। তার পর কাশ্মীর মডেল প্রয়োগ করবে।’’ তবে গো-বলয়ের রাজ্যগুলি ছাড়া মহারাষ্ট্র কিংবা কর্নাটকের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে হিন্দি আবশ্যিক করার সিদ্ধান্তে প্রতিবাদের ঝড় ওঠার আশঙ্কা রয়েছে বিজেপিতেই। তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়ানের মতে, ‘‘অর্থনীতি গাড্ডায়। চাকরির সঙ্কট। তাই এ হল বিজেপির নজর ঘোরানোর চেষ্টা।’’ বিজেপির এক নেতা পাল্টা বলেন, ‘‘এ হল রজ্জুতে সর্পভ্রম! হিন্দি দিবসে সেই ভাষা শেখার উপরে জোর দেওয়া হবে, সেটাই তো বাস্তব।’’ আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে ‘বিষয়টি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা’র দায় চাপিয়েছে দক্ষিণের কিছু চ্যানেলের উপরে!
বিতর্ক বেড়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রকের একটি ফেসবুক পোস্টেও। যাতে বলা হয়, ‘বিশ্বের ৭৭০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ভারতীয়দের আলাদা পরিচিতি দিয়েছে রাষ্ট্রভাষা হিন্দি।’ আজ মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, ওই পোস্টের বিষয়ে তাঁর ধারণাই নেই! তিনিও বলেন, ‘‘পোস্টে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা লেখা হলে, তা ঠিক নয়।’’ রাতে পোস্টটি মুছে দেয় মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy