ভারতের সঙ্গে গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তির নবীকরণ করতে চায় বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘সার্ক’কে পুনরুজ্জীবিত করতেও ভারতকে পাশে চায় তারা। সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কটে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক হয় বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি এই দু’টি বিষয়ও উঠে এসেছে।
গত রবিবার অষ্টম ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন আয়োজিত হয়। ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জয়শঙ্কর এবং তৌহিদ। সম্মেলেনের পার্শ্ববৈঠকে রবিবার দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় তাঁদের। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দু’জনের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানান, আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলির আন্তর্জাতিক মঞ্চ বিমসটেক নিয়েও আলোচনা হয় উভয়ের। পরে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক থেকে এই বৈঠক প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। ঢাকার বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৯৯৬ সালের গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তির নবীকরণ নিয়ে আগামী দিনে আলোচনার কথা বলেন তৌহিদ। পাশাপাশি সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ডাকা নিয়েও নয়াদিল্লিকে পাশে চাইছে ঢাকা।
প্রসঙ্গত, গঙ্গার জলবণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে। গত বছরে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের আগে দিল্লি সফরে আসেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয় সেই সময়ে। সেখানে ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরি করা হয়। তবে এখন বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এই আবহে রবিবার ফের এক বার ওই চুক্তি নবীকরণ নিয়ে আলোচনা শুরু করতে ভারতকে অনুরোধ করল ঢাকা।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। কখনও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে, কখনও ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ইউনূসের প্রশাসনও বুঝিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের মন্তব্য তারা পছন্দ করছে না। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন বিবৃতি এবং পাল্টা বিবৃতির নজির অতীতে দেখা যায়নি। তবে ভারত এবং বাংলাদেশ দু’দেশের বর্তমান প্রশাসনই অতীতে জানিয়ে দিয়েছে, তারা একে অন্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই চলতে আগ্রহী।