Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Teesta Water Treaty

তিস্তা নিয়ে ভারতকে চাপ বাংলাদেশের! চুক্তি না হলে আন্তর্জাতিক আইনের দ্বারস্থ হবে ইউনূস সরকার

শীতকালে তিস্তা নদীর জলের একটি অংশ বাংলাদেশকে দেওয়ার ব্যাপারে দীর্ঘ দিন ধরেই আলোচনা চলছে ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে। কিন্তু সেই চুক্তি কখনওই কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪
Share: Save:

এক মাসও হয়নি বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা হাতে নিয়েছে। এর মধ্যেই তিস্তা নিয়ে ভারতের উপর চাপ তৈরি করতে শুরু করল তারা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, তিস্তা জলচুক্তি বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হবে, এমন আশা প্রকাশ করার পাশাপাশি বাংলাদেশ এ-ও জানিয়েছে, চুক্তি না হলে আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে মাঠে নামবে তারা।

শীতকালে তিস্তা নদীর জলের একটি অংশ বাংলাদেশকে দেওয়ার ব্যাপারে দীর্ঘ দিন ধরেই আলোচনা চলছে ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে। কিন্তু সেই চুক্তি কখনওই কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তিস্তাচুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকারের বহু আলোচনা হলেও উত্তরবঙ্গের মানুষের অসুবিধার কথা জানিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর জলবণ্টনের চুক্তি চলে গিয়েছে বিশ বাঁও জলে। কিন্তু বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার আবার নতুন করে ওই চুক্তি কার্যকর করার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী। তবে একই সঙ্গে তারা এ-ও জানিয়েছে, চুক্তি না হলে, আন্তর্জাতিক জলবণ্টনের নিয়ম না মানা হলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনি নথিপত্রের শরণাপন্ন হতে পারে।

বাংলাদেশের জলসম্পদ সংক্রান্ত উপদেষ্টা সইদা রিজওয়ানা হাসান সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘‘আমি তিস্তার জলবণ্টনের বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট পদাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের সকলেরই তিস্তার চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা উচিত।’’ রিজওয়ানাই জানিয়েছেন, তাঁদের আশা, ওই চুক্তি দু’পক্ষই বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে কথা বলে মিটিয়ে নিতে পারবেন। আন্তর্জাতিক জলবণ্টন আইন অনুযায়ী নদীর উপরের পার এবং নীচের পার সংলগ্ন দুই দেশের মধ্যে জল ভাগ করে নেওয়ার যে নিয়ম রয়েছে, তা মানা হবে সেই চুক্তিতে। কিন্তু চুক্তি যদি না হয়, তবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনি নথিপত্র এবং নিয়মনীতির শরণাপন্ন হতে পারে বলেও জানিয়েছেন রিজওয়ানা।

তিস্তা নদীর জল বাংলাদেশ শীতকালে পায় না বলে অভিযোগ বাংলাদেশের মানুষের। সেই সময় তাদের চাষের জন্য জলের প্রয়োজন হয়। বদলে তিস্তার জল বাংলাদেশে যায় বর্ষায়। যখন গোটা দেশ বানভাসি। তিস্তার জলের সুষম বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েই এর পর একটি চুক্তির কথা বলা হয়। ২০১১ সালে সেই চুক্তি স্বাক্ষর করার কথা ছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বাধা দেন। ওই চুক্তির প্রস্তাব ছিল, ‘ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তিস্তার জলের ৪২.৫ শতাংশ পাবে ভারত। ৩৭.৫ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ।’ কিন্তু মমতা জানিয়ে দেন, উত্তরবঙ্গের মানুষের ক্ষতি করে তিনি তিস্তার জল দিতে পারবেন না। বাংলাদেশ চাইলে তোর্সা, রঙ্গিত থেকে তিনি কিছু জল দিতে পারেন। শেষ পর্যন্ত যার সমাধান হয়নি।

পরে কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার এলে তাঁর সঙ্গেও কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তিস্তা চুক্তি নিয়ে কথা হয়নি। অবশেষে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হল। সেই সময়ে যখন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারত কী অবস্থান নেয়, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teesta River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE