— ফাইল চিত্র।
ন’বছর ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে রায়পুর বিমানবন্দরে। পাখিরা বাসা বেঁধেছে, ইঞ্জিনের গা বেয়ে মাথা তুলেছে লতানো গাছ। তবু রোদ বৃষ্টি ঝড় মাথায় নিয়ে একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে ম্যাকডোনেল ডগলাস ৮৩!
আদতে বাংলাদেশের বিমান। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ় নামে সংস্থার এই বিমান ২০১৫ সালে ঢাকা থেকে মাস্কাট যাওয়ার পথে ভাগ্যের ফেরে নামে রায়পুর বিমানবন্দরে। আচমকা বিমানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় রায়পুর বিমানবন্দরে ১৭৩ জন যাত্রী-সহ জরুরি অবতরণ করেছিল সেটি। সেই থেকে রায়পুর বিমানবন্দরই তার সাকিন।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ৭ অগস্ট ৩২ হাজার ফুট উঁচুতে ওড়ার সময় হঠাৎই বিকল হয়ে যায় বিমানের ইঞ্জিন। এর পরেই নিকটবর্তী রায়পুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। বিমানে থাকা ১৭৩ জন যাত্রীকে অন্য একটি বিমানে পাঠানো হয় মাস্কাটে।
রায়পুরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিভাগের কর্তা এইচডি শর্মা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, বিমানটি নিয়ে ভবিষ্যতে কী করা হবে, জানেন না কেউই। কারণ এই ধরণের ঘটনা ভারতে এই প্রথম। কোনও স্পষ্ট নিয়ম নেই। গত ন’বছরে একাধিকবার বাংলাদেশের ওই বিমান সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা এসে বিমানটি সারানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু লাভ হয়নি। শেষমেশ হাল ছেড়েছেন তাঁরাও। তার পর থেকে ভিন দেশের বিমানবন্দরে এভাবেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ডগলাস ৮৩!
বিমানটিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য উপরমহলে একাধিক চিঠি লিখেছে রায়পুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি চিঠি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ়কেও। কিন্তু সাড়া মেলেনি। ঘণ্টা প্রতি ৩২০ টাকা হিসাবে ন’বছরে বিমানবন্দরে পার্কিং ফি বাবদ বকেয়া চার কোটি টাকা। মেটাবে কে? জানা নেই। কারণ, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সংস্থাটি। ফলে কী আছে ওই বিমানের ভাগ্যে, কারও জানা নেই।
এত দিনে ডগলাসের কেবিনে বাসা বেঁধেছে পাখিরা। ককপিটের গা বেয়ে গজিয়ে উঠেছে চারাগাছ। এক কালের যাত্রীবাহী বিমান এখন ভিন দেশে একলা বসে দিন গুনছে ঘরে ফেরার!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy