অমিত শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদ। সোমবার কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হিন্দি-সওয়ালের পরে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র ও কর্নাটক থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল গৈরিক শিবিরের অন্দরে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা আজ অমিতের বক্তব্যকে সরাসরি খারিজ করে দিলেন। জানালেন, ভাষার প্রশ্নে কোনও আপস করবেন না তাঁরা। কর্নাটকের নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়াও জানিয়েছেন, হিন্দির ‘দাদাগিরি’ বরদাস্ত করা হবে না। অমিতের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন অভিনেতা তথা মাক্কাল নিধি মাইয়াম (এমএনএম)-এর প্রতিষ্ঠাতা কমল হাসনও।
লোকসভা ভোটে বিপুল সাফল্য পেলেও কর্নাটক ছাড়া দক্ষিণের কোনও রাজ্যেই তেমন সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি। সেই কর্নাটকের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীই আজ দলীয় সভাপতির হিন্দির পক্ষে সওয়াল উড়িয়ে দিয়েছেন। টুইটারে ইয়েদুরাপ্পা লিখেছেন, ‘‘দেশের সমস্ত সরকারি ভাষাই সমান। কর্নাটকের প্রশ্নে, কন্নড়ই প্রধান ভাষা। এই ভাষার গুরুত্বের সঙ্গে কখনওই আপস করব না। কন্নড় ভাষা ও রাজ্যের সংস্কৃতি তুলে ধরতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
কেন্দ্রীয় সার ও রসায়ন মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়াও হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। স্কুল শিক্ষায় ত্রি-ভাষা ব্যবস্থার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘আঞ্চলিক ভাষাগুলির উপর হিন্দি দাদাগিরি করতে পারবে না। ত্রি-ভাষা পদ্ধতি সকলেই মেনে নিয়েছেন। এমনকি, সংসদে প্রধানমন্ত্রীও জানিয়েছেন সব আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান জানানো হবে।’’ অমিতের হিন্দি-সওয়ালের প্রতিবাদে ২০সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুতে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন।
ভাষা-বিতর্ক নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কমল। তিনি বলেন, ‘‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য— ভারত প্রজাতন্ত্র গঠিত হওয়ার সময়েই আমরা শপথ নিয়েছিলাম। কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাট ওই শপথকে ভাঙতে পারবেন না।’’ জাতীয় সঙ্গীতের প্রসঙ্গ টেনে ওই অভিনেতার মন্তব্য, ‘‘বাংলায় লেখা জাতীয় সঙ্গীতকে দেশ খুশি মনে মেনে নিয়েছে। কারণ, যিনি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) জাতীয় সঙ্গীত লিখেছিলেন, তিনি ওই গানের মাধ্যমে সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান দিয়েছেন।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মতে, হিন্দিকে ‘রাষ্ট্র ভাষা’ হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। যা সঙ্ঘ পরিবারের মতাদর্শ।
দক্ষিণী বিজেপি হিন্দির বিরুদ্ধে সরব হলেও দলের ত্রিপুরা ও বাংলার নেতারা অবশ্য অমিতের সুরেই সুর মিলিয়েছেন। কলকাতায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘মাতৃভাষার স্থান সবার উপরে। হিন্দি যে হেতু বহুল ব্যবহৃত ভাষা, তাই যোগাযোগের স্বার্থে তাকে আলাদা জায়গা দেওয়া যেতেই পারে। এটা নিয়ে রাজনীতির জায়গা নেই।’’ বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব মনে করেন, যাঁরা হিন্দির বিরোধিতা করছেন তাঁরা ‘রাষ্ট্রবিরোধী’। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা রাষ্ট্রের ধারণায় বিশ্বাসী নন, তাঁরাই এর বিরোধিতা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy