Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Ram Temple Ayodhya

হাজার বছর আয়ু দিতে রামমন্দিরে বসবে তামার পাত

জং ধরার সম্ভাবনা থাকায় লোহা থাকবে না এক ইঞ্চিও। আর ভূমিকম্পেও যাতে ভিত কেঁপে না-যায়, তা নিশ্চিত করতে মাটি পরীক্ষায় আইআইটি-চেন্নাইয়ের গবেষকরা হাজির। সঙ্গী রুরকির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞেরাও।

রূপার ইট দিয়ে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের সূচনা করলেন নরেন্দ্র মোদী।  এ বার ‘রামভক্তদের’ কাছ থেকে মন্দির নির্মাণের প্রণামী হিসেবে তামার পাত চেয়েছে ট্রাস্ট।

রূপার ইট দিয়ে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের সূচনা করলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার ‘রামভক্তদের’ কাছ থেকে মন্দির নির্মাণের প্রণামী হিসেবে তামার পাত চেয়েছে ট্রাস্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

অন্তত হাজার বছর! রামমন্দিরের এই দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করতে সাজ সাজ রব অযোধ্যায়।

ঝড়, বৃষ্টি, ভয়াল প্রাকৃতিক দুর্যোগও যাতে রামলালার মন্দিরে আঁচড় কাটতে না-পারে, তার জন্যই পরিকল্পনা শুধু পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে মন্দির। আর পাথরের এক খণ্ডের সঙ্গে আর একটিকে জুড়তে ব্যবহার হবে সিমেন্ট এবং তামার সরু পাত ও রড। জং ধরার সম্ভাবনা থাকায় লোহা থাকবে না এক ইঞ্চিও। আর ভূমিকম্পেও যাতে ভিত কেঁপে না-যায়, তা নিশ্চিত করতে মাটি পরীক্ষায় আইআইটি-চেন্নাইয়ের গবেষকরা হাজির। সঙ্গী রুরকির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞেরাও।

বৃহস্পতিবার এক গুচ্ছ টুইটে মন্দির তৈরির এমন হাজারো খুঁটিনাটি জানিয়েছে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। প্রধানমন্ত্রীর হাতে শিলান্যাসের পরে তিন-সাড়ে তিন বছরের মধ্যে মন্দির নির্মাণ এবং তার পরে তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যাদের কাঁধে। তারা জানিয়েছে, মন্দির নির্মাণের জন্য মাটি সমান করার কাজ আগেই সেরে ফেলেছে নির্মাণ সংস্থা লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। এর পরে মন্দির তৈরির কাজে হাত দেবে তারা।

আরও পড়ুন: ‘১৭০ কোটি লাভ, তিরুঅনন্তপুরম তবু কেন আদানির’​

রামমন্দির ন্যাসের অন্যতম কর্তা শরদ শর্মার দাবি, “প্রবল ভূমিকম্পেও যাতে মন্দিরের ভিত না-নড়ে, তার জন্য ১৫০-২০০ ফুট নীচ থেকে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হতে পারে। তবে

মন্দিরে লোহা থাকবে না এক চুলও।” ট্রাস্টের বক্তব্য, মূলত ভূমিকম্পে অটল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এসেছেন দুই প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞেরা। মাটির নমুনা নিয়ে যাবে আইআইটি-চেন্নাই।

ঝড়-জল সামলে হাজার বছর মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা মুখের কথা নয়। তাই গোড়া থেকেই মন্দির তৈরির কথা হয়েছে নাগারা শৈলী মেনে। পুরোপুরি পাথর কেটে। স্তম্ভ-সহ মন্দিরের বিভিন্ন অংশ তৈরি করা শুরু হয়েছে বহু আগে থেকেই। কিন্তু সেগুলিকে জোড়া লাগাতে ব্যবহার হবে শুধু সিমেন্ট আর তামা। কারণ, বছরের পর বছর অবিকৃত থাকার ক্ষেত্রে তামার নাকি জুড়ি নেই। এ জন্য ‘রামভক্তদের’ কাছ থেকে মন্দির নির্মাণের প্রণামী হিসেবে তামার পাতও চেয়েছে ট্রাস্ট।

টুইটে দাবি, মন্দির নির্মাণে ১০ হাজার তামার সরু পাত ও রড লাগবে। ট্রাস্ট চায়, তা আসুক সারা ভারত থেকে। ঠিক যে ভাবে শিলান্যাসের আগে দেশের সমস্ত প্রান্ত থেকে আনা হয়েছিল বিভিন্ন নদীর জল আর মাটি। ভক্তদের কাছে এ বার তাদের আবেদন, মন্দিরের জন্য দেশের সমস্ত প্রান্ত থেকে তামার পাত পাঠান তাঁরা। ১৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ৩০ মিলিমিটার প্রস্থ, ৩ মিলিমিটার উচ্চতার ওই পাতে তাঁরা

আরও পড়ুন: ট্রায়াল শেষের আগেই ছাড় কি দেশেও!​

লিখে দিতে পারেন নিজের ও পরিবারের নাম, বাসস্থান, এমনকি এলাকার মন্দিরের নামও। যাতে এক ঝলক দেখলেই মনে হয়, মন্দির তৈরি হয়েছে সারা ভারত থেকে আসা অর্থে। তার দেওয়াল হয়ে উঠতে পারে এক টুকরো ভারতবর্ষ।

তবে অনেকেরই প্রশ্ন, করোনায় জর্জরিত, বিধ্বস্ত অর্থনীতির ভারতের কি এখন অনেক বেশি করে প্রয়োজন ছিল না হাসপাতাল, ভেন্টিলেটর আর আইসিইউ বেড? অনেকে বলেছেন, ভারত-সহ সারা পৃথিবীতেই মন্দির, মসজিদ, গির্জা ইত্যাদি ধর্মস্থলগুলি নিজেদের বিপুল সম্পত্তির কিছুটা কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করলে বেশ খানিকটা আলাদা হতে পারত করোনা মোকাবিলার ছবি। আবার উল্টো পক্ষের দাবি, শারীরিক সুস্থতার থেকে কম দামি নয় মনের বিশ্বাসও।

মন্দির প্রাঙ্গণে এক খণ্ড ভারতকে হাজির করা প্রসঙ্গে শরদের বক্তব্য, “মন্দিরের দরজার চৌকাঠ, পাল্লার মতো বেশ কিছু অংশ তৈরি হয় রাজস্থানের মাকরনে। সেখানে কাজ করেন মুসলিম শিল্পীরাও।” সে কথা মনে করিয়ে দিলে অযোধ্যার এক স্থানীয় মুসলিম শুধু বললেন, “এটুকু জানি, যেখানে মন্দির হচ্ছে, সেখানেই পুরুষানুক্রমে নমাজ পড়েছে আমাদের পরিবার। আমি বা আমার পরের প্রজন্ম তা আর পারব না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Ram Temple Babri Masjid Ram Mandir Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy