রবিবার ভোরে দিল্লির রাস্তায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল অঞ্জলির। — ফাইল ছবি।
আপ আগেই দাবি করেছিল, ঘাতক গাড়িতে এক জন ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা। তার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন। দিল্লিতে দুর্ঘটনায় তরুণীর মৃত্যু ঘিরে রাজনীতির টানাপোড়েন ক্রমেই বাড়ছে। মৃত তরুণীর জন্য ‘সেরা আইনজীবী’ নিয়োগ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আপ বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ‘‘নির্যাতিতার মায়ের কিডনির সমস্যা রয়েছে। তাঁকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করা হবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী নির্যাতিতার পরিবারকে সেরা আইনজীবী দেওয়ার জন্য রাজ্যের আইনবিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।’’ মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশ কমিশনার সঞ্জীব অরোরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার সঙ্গে দেখা করে একটি রিপোর্ট দিয়েছেন।
সৌরভ বলেন, ‘‘পুলিশে যিনি ফোন করেছিলেন, তাঁর ভাই আমাকে ফোনে জানান যে, প্রথম বার ফোন করা হয় রাত ২টো ১৮ নাগাদ। কিন্তু পুলিশ দাবি করেছে ওরা ফোন পায় ৩টে ২২ মিনিটে। পুলিশ কমিশনারকে সময়ের ব্যবধান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-তে কোনও উত্তর দেননি। বলেছিলেন, পিসিআরের সব কল রেকর্ড করা হয়।’’
মঙ্গলবারই প্রকাশ্যে এসেছে ওই তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্টও। সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অঞ্জলি সিংহের মা। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়ালও প্রথমে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, দিল্লির ওই তরুণীর উপর যৌন নির্যাতন হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সেই সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, মৃত তরুণীর ‘যৌনাঙ্গে ক্ষত নেই’। এমনটাই দাবি করেছে পুলিশের একটি সূত্র।
রবিবার ভোরে দিল্লির রাস্তায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল অঞ্জলির। মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের একটি বোর্ড তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত করে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর ২টোর সময় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে এখনও সরকারি ভাবে কিছু বলেনি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে পরবর্তী কালে আরও পরীক্ষার জন্য তরুণীর লালারসের নমুনা এবং জিন্সের ছেঁড়া অংশ সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে যে পাঁচ জন ছিলেন, তাঁদের আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের জেরায় অভিযুক্তেরা স্বীকার করেছেন, তাঁরা মত্ত অবস্থায় ছিলেন। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। যদিও অঞ্জলির মা মনে করেন, দুর্ঘটনাতে মৃত্যু হয়নি অঞ্জলির। রবিবার সকালে অঞ্জলির স্কুটিতে ধাক্কা দেয় একটি মারুতি ব্যালেনো গাড়ি। তার পর তাঁকে ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। মৃত্যু হয় অঞ্জলির। স্কুটিতে যখন ধাক্কা দেয় গাড়ি, তখন অঞ্জলির সঙ্গে ছিলেন এক বন্ধু নিধি। নিধি ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। যদিও গাড়িতে আটকে পড়ে ২০ বছরের অঞ্জলির পা। পুলিশ জানিয়েছে, নিধি এখন ওই ঘটনার অন্যতম প্রধান সাক্ষী।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ি চালাচ্ছিলেন দীপক। পাশে বসেছিলেন মিঠুন। পিছনে ছিলেন তিন জন। গাড়িটি আশুতোষ নামে এক যুবক তাঁর বন্ধু অমিত এবং দীপককে চালানোর জন্য দিয়েছিলেন। গাড়ির আসল মালিক লোকেশ। তাঁর কাছ থেকেই গাড়িটি বন্ধুদের জন্য নিয়েছিলেন আশুতোষ। অভিযুক্তদের মধ্যে মনোজ স্থানীয় বিজেপি নেতা। পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক কিলোমিটার গাড়ি ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর একটা জায়গায় মোড় নিতেই গাড়ির নীচে আটকে থাকা একটি হাত দেখতে পেয়েছিলেন পিছনের আসনে বসে থাকা মিঠুন। তত ক্ষণে তাঁরা খাঞ্জাওয়ালার জন্টি গ্রামের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন। সেখানেই গাড়ি থেকে নামেন অভিযুক্তেরা। অঞ্জলির তালগোল পাকানো দেহ ফেলে রেখে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। তার পর গাড়িটি আশুতোষকে ফেরত দিয়ে আসেন। জন্টি গ্রামের কাছে অঞ্জলির নগ্ন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy