Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Atiq Ahmed

বন্দি আতিক আহমেদ ও তার ভাইকে গুলি করে খুন যোগীর পুলিশের সামনেই, দু’দিন আগেই নিহত ছেলে

আতিককে মেডিক্যাল কলেজের ভিতরে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আচমকা আতিকের মাথা লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু হয় আতিক ও তাঁর ভাইয়ের।

File image of Atiq Ahmed

প্রয়াগরাজে পুলিশের চোখের সামনে খুন হয়ে গেলেন আতিক আহমেদ। — ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
প্রয়াগরাজ শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:১২
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে পুলিশের সামনে আততায়ীদের হাতে খুন হয়ে গেলেন ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফ। যোগী সরকার নির্দেশ দিয়েছে, এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করবে তিন সদস্যের কমিটি। প্রয়াগরাজ-সহ উত্তরপ্রদেশের সব জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

শনিবার রাতে আতিক এবং আশরফকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। হাসপাতালের পথে হাঁটতে হাঁটতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আতিক। সেই সময়ই আচমকা আতিকের মাথায় গুলি লাগে। লুটিয়ে পড়েন আতিক। তার পর তাঁকে ও আশরাফকে ঘিরে ধরে গুলি চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। সেখানেই দু’ভাইয়ের মৃত্যু হয়। পুলিশ তিন দুষ্কৃতীকে ধরেছে। উদ্ধার হয়েছে খুনে ব্যবহৃত বন্দুকটিও। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, আততায়ীরা সাংবাদিকের ছদ্মবেশে এসেছিলেন। আতিক এবং তাঁর ভাইকে খুনের পর তিন দুষ্কৃতী স্লোগান দিতে থাকে। তখন পুলিশ তাঁদের ধরে ফেলে।

শনিবার ছেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন আতিক। কিন্তু তাঁর আইনজীবী মণীশ খন্না পিটিআইকে জানান, ১৪ এপ্রিল অম্বেডকর জয়ন্তীর ছুটি থাকার কারণে আতিকের আবেদনপত্রটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। শনিবার ওই আবেদন মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। তার আগেই অবশ্য আসাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। আসাদ ছিলেন আতিকের তৃতীয় পুত্র। উমেশ পাল হত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আসাদ এবং তাঁর সঙ্গী গুলাম উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে হত হয়।

অন্য দিকে, প্রয়াগরাজে এই ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল। আতিকের মতো এ রকম ‘হাই প্রোফাইল’ বন্দিকে হাসপাতালে মেডিক্যাল করাতে নিয়ে যাওয়ার পথে এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। টুইটে তিনি লিখেছেন, “উত্তরপ্রদেশ অপরাধের পরাকাষ্ঠা হয়ে উঠেছে। অপরাধীদের মনোবল আরও মজবুত হচ্ছে। যখন পুলিশের ঘেরাটোপে থাকা এক জনকে এ ভাবে খুন করা যেতে পারে তা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? মানুষের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে, কিছু মানুষ সব জেনেবুঝে এমন বাতাবরণ তৈরি করছেন।”

এসপির প্রাক্তন সাংসদ আতিকের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন থানায় ছিল শতাধিক মামলা। ২০০৫ সালে বিএসপি বিধায়ক রাজু পালের খুনে নাম জড়িয়েছিল আতিকের। ফেব্রুয়ারিতে রাজু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী উমেশ পালের হত্যাকাণ্ডেও মূল অভিযুক্ত ছিলেন আতিক।

গত বৃহস্পতিবার আতিকের পুত্র আসাদ এবং তাঁর এক সঙ্গীকে গুলি করে পুলিশ। আতিকের কনভয়ে হামলা করার পরিকল্পনা ছিল আসাদের, এমনটাই পুলিশ সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে। মামলার কারণে আতিককে ঘনঘন গুজরাতের সাবরমতী জেল থেকে প্রয়াগরাজে, আবার প্রয়াগরাজ থেকে সাবরমতী নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, সাবরমতী জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় আতিকের কনভয়ে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন আসাদ। ফলে কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও কী ভাবে আতিকের কনভয়ে হামলা হল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। শুধু তাই-ই নয়, এই হামলার জেরে আতিককে সাবরমতী জেলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও ভেস্তে যাবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছিল পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Atiq Ahmed Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE