প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। -ফাইল ছবি।
১৯৬২-র যুদ্ধে জেতার তিন বছর পর ভারতের এক ঝানু রাজনীতিকের বুদ্ধিমত্তা আর রসবোধের কাছে ‘গোহারান’ হতে হয়েছিল চিনকে। দিল্লির সঙ্গে ফের বিরোধ বাধানোর লক্ষ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভেড়া চুরির অভিযোগ এনেছিল বেজিং। তার জবাবে দিল্লির চিনা দূতাবাসে একটি ট্রাকে চাপিয়ে ৮০০টি ভেড়া পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জনসঙ্ঘের সেই সময়কার তরুণ তুর্কি নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী। সেটা ১৯৬৫। তখন বাজপেয়ী জনসঙ্ঘের নেতা। ভেড়াগুলির গায়ে লেখা ছিল, ‘‘আমাদের খাও, কিন্তু যুদ্ধের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাও’’। বাজপেয়ী বেজিংকে বোঝাতে চেয়েছিলেন, অযথা ছল-ছুতোয় যুদ্ধ বাধানোটা উচিত হবে না।
তার পরেও বেজিংয়ের স্বভাব বদলায়নি অবশ্য। দিল্লির ‘পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া’ করার উদ্দেশে দু’বছর পরেও, ’৬৭-তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভেড়া চুরিরই অভিযোগ তুলেছিল বেজিং।
চিনের তখন আগ্রাসনের ক্ষুধা। সিকিমে চলছে রাজশাসন। পিছনে ভারতের সমর্থন। বেজিং সিকিমকে পেতে চেয়েছিল। ভারত তখন কাশ্মীরে পাকিস্তান থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীর সমস্যায় ব্যাতিব্যস্ত।
ওই সময়েই ’৬৫-র অগস্ট-সেপ্টেম্বরে ভারত ও চিনের মধ্যে ফের উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। ভারতের সেনাবাহিনী ৮০০টি চিনা ভেড়া আর ৫৯টি ইয়াক চুরি করেছে বলে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানায় বেজিং। ভারতের তরফ থেকে সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাবে চিনের অভিযোগকে উড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ডিবিও সড়ক লক্ষ্য চিনের, প্রহরায় সেনা
আরও পড়ুন: লাদাখ ঘুরে এসে রিপোর্ট দিচ্ছেন নরবণে, তার পর স্থির পরবর্তী পদক্ষেপ
ওই সময়েই বেজিংয়ের এই ঝগড়া বাধানোর অছিলাকে কটাক্ষ করতেই দিল্লির চিনা দূতাবাসে একটি ট্রাকে চাপিয়ে ৮০০টি ভেড়া পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জনসঙ্ঘের ৪২ বছর বয়সী নেতা বাজপেয়ী। যা বেজিংকে রীতিমতো চটিয়ে দিয়েছিল।
‘‘তাদের সঙ্গে মস্করা করা হচ্ছে নাকি?’’ প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর কার্যালয়ে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিল বেজিং। সেই চিঠিতে বেজিংয়ের বক্তব্য ছিল, ‘‘বাজপেয়ী চিনের জনগণকে অপমান করেছেন। আর এ ব্যাপারে তাঁর পিছনে মদত রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শাস্ত্রীর সরকারের।’’
সেই চিঠির জবাবে ভারতের তরফে জানানো হয়েছিল, ‘‘বেজিং সম্পর্কে এটা কিছু মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত আবেগ। এর সঙ্গে সরকারের কোনও যোগসাজশ নেই। এটা শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছিল আর এটার মধ্যে রসবোধ ছাড়া আর কিছুই ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy