শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকে মোদী। ছবি: পিটিআই।
কিছু দেশ সীমান্ত পারের সন্ত্রাসের নিরাপদ ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। নাম না করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে এই ভাষাতেই খোঁচা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রী মোদী। শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর শীর্ষ বৈঠকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উপস্থিতিতে এই মন্তব্য করেন তিনি। প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সাম্প্রতিক ‘ওয়াগনার বিদ্রোহের’ পর এই প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেখা গেল পুতিনকে।
এসসিও বৈঠকে এই প্রথম বার সভাপতিত্ব করলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ওই ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন পাকিস্তান-সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। সেখানে মোদী বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হল সন্ত্রাসবাদ। আমাদের তার বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’’ এর পরেই পাকিস্তানের নাম না-করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কিছু দেশের নীতিই হল সীমান্ত পারের সন্ত্রাসকে মদত দেওয়া। তাদের নিন্দা করার ক্ষেত্রে কোনও দ্বিধা থাকা উচিত নয়।’’
মে মাসে গোয়ার পানাজিতে এসসিও বিদেশমন্ত্রী স্তরের বৈঠকে পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টোর উপস্থিতিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘এখানকার কিছু দেশ সন্ত্রাস-বাণিজ্যের সমর্থক, মদতদাতা এবং মুখপাত্র।’’ মঙ্গলবার একই ভাবে নাম না-করে ইসলামাবাদকে নিশানা করে মোদীর মন্তব্য, ‘‘সন্ত্রাসের মোকাবিলায় ক্ষেত্রে কোনও দ্বিচারিতা থাকা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হবে মূল উদ্দেশ্যই।’’ এ প্রসঙ্গে আফগানিস্তান পরিস্থিতিও এসেছে তাঁর বক্তৃতায়। সরাসরি তালিবানের নাম না-করে মোদী বলেছেন, ‘‘আফগান পরিস্থিতির প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে আমাদের নিরাপত্তার উপর।’’
এসসিও-র মতো ‘বেজিং প্রভাবিত’ একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে মোদীর মঙ্গলবারের বক্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ৩টি দেশ, কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান এবং তাজিকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে চিন একটি নতুন জোট গড়েছিল। ওই দেশগুলির সঙ্গে চিনের প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে। কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, প্রাথমিক ভাবে চিনের লক্ষ্য ছিল মধ্য এশিয়ার ওই নতুন দেশগুলিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং ইসলামি কট্টরপন্থার প্রসার প্রতিরোধ। পরে নিজের শিনজিয়াং প্রদেশের আন্দোলন দমনে মুসলিম প্রধান ৩ দেশের আপত্তি এড়ানো এবং ওই অঞ্চলে মজুত প্রাকৃতিক সম্পদের উপর দখলদারিও বেজিংয়ের ‘লক্ষ্য’ হয়ে দাঁড়ায়।
সেই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৬ সালে শান্তি, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবং ব্যবসাবাণিজ্য বাড়াতে চিন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান এবং তাজিকিস্তান যৌথ ভাবে ‘সাংহাই ফাইভ’ গড়ে তোলে। ২০০১-এ উজবেকিস্তান এই জোটে যোগ দেয় এবং সংস্থাটির নাম বদলে হয় শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। ২০১৫-য় মূলত মস্কোর উদ্যোগে ভারত এই প্রভাবশালী আঞ্চলিক রাষ্ট্রগোষ্ঠীর সদস্য হতে পারলেও, নয়াদিল্লিকে চাপে রাখতে চিন একই সঙ্গে পাকিস্তানকে ওই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy