অশোক গহলৌত। —ফাইল চিত্র।
অশোক গহলৌতের যাদু? নাকি নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা?
কার দিকে ঝুঁকবেন মরুরাজ্যের মানুষ, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই শনিবার রাজস্থানের ১৯৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ মোটামুটি নির্বিঘ্নেই শেষ হল। দিনের শেষে ভোট পড়ল ৬৮ শতাংশেরও বেশি। কংগ্রেসের আশা, গত তিন দশকের ধারা ভেঙে এ বারে ফের ক্ষমতায় ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। অন্য দিকে বিজেপি আশা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তায় ভর করে তারা ফের দখল নেবে মরুরাজ্যের।
দিনভর ভোটদানের হার এবং জনতার মেজাজ দেখে গহলৌত আশাবাদী, তাঁর নেতৃত্বে রাজস্থানে ফের সরকার গড়বে কংগ্রেস। এ দিন ভোটপর্বের মধ্যেই এক সাক্ষাৎকারে সে কথা জানান তিনি। গহলৌত বলেন, এই সরকারই ফিরবে, আমি নিশ্চিত। কিন্তু কোন যুক্তিতে তিনি এমন দাবি করলেন? তারও জবাব ওই সাক্ষাৎকারে দিয়েছেন কংগ্রেসের যাদুকর-নেতা। এ প্রসঙ্গে কেরালার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘‘৭০ বছর ধরে কেরালায় পাঁচ বছর অন্তর কখনও সিপিএম, কখনও কংগ্রেস সরকার গড়েছে। কিন্তু সিপিএম ভাল কাজ করেছে বলেই সেখানকার মানুষ ২০২১ সালে তাদের দ্বিতীয় বারও ভোট দিয়ে জিতিয়েছে।’’ তাঁর সরকার ভাল কাজ করেছে বলেই মানুষ তাঁদের দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরাবে বলে আত্মবিশ্বাসী গহলৌত এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব। রাজস্থানের কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, গহলৌতের নিজস্ব জনপ্রিয়তার সঙ্গেই যোগ হয়েছে চিকিৎসা বিমা, কম দামে গ্যাস সিলিন্ডার, মহিলাদের জন্য বিনামূল্যে স্মার্টফোন, জাতগণনার প্রতিশ্রুতির মতো বিষয়, যা দলের জয় নিশ্চিত করবে। যদিও গহলৌত বনাম সচিন পাইলটের দ্বন্দ্ব এবং শেষ বেলার কানহাইয়া লাল খুনের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির ঝোড়ো প্রচার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে দলের একাংশের মধ্যে। কংগ্রেসকে ভাবাচ্ছে রাজস্থানের গত তিন দশকের সরকার বদলের ইতিহাসও।
অন্য দিকে বিজেপির ভরসা বলতে মোদীর জনপ্রিয়তা, মেরুকরণের তাস এবং গহলৌত-পাইলটের দ্বন্দ্ব। তাতে ভর করেই এ বারে ম্যাজিক সংখ্যা ১০০ পেরনোর আশা তাদের। কিন্তু তাদেরও কাঁটা রয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজেকে যে ভাবে মোদী-অমিত শাহেরা ব্রাত্য করে রেখেছেন, তার প্রভাব পড়তে পারে ইভিএমে, এমন আশঙ্কা রয়েছে দলেরই অনেকের।
এ দিন ভোটপর্বের মধ্যেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ করেছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, রাজস্থানে ভোটপর্বের মধ্যেই সমাজমাধ্যমে প্রচার চালিয়েছেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কা। যা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের সামিল। গত মঙ্গলবার রাজস্থানেরই জালোরে এক জনসভায় রাহুল বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের হারের জন্য স্টেডিয়ামে ‘অপয়া মোদী’র উপস্থিতিকে দায়ী করেছিলেন। এর পরেই বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ করলে তাঁকে শো-কজ নোটিস পাঠায় নির্বাচন কমিশন।
শনিবার রাহুল তাঁর এক্স হ্যান্ডলে হিন্দিতে লেখা একটি পোস্টে বলেন, ‘‘রাজস্থান বেছে নেবে বিনামূল্যে চিকিৎসা। রাজস্থান বেছে নেবে সস্তা গ্যাস সিলিন্ডার। রাজস্থান বেছে নেবে সুদমুক্ত কৃষিঋণ। রাজস্থান বেছে নেবে ইংরেজি শিক্ষা। রাজস্থান বেছে নেবে পুরনো পেনশন প্রকল্প(ওপিএস)। রাজস্থান বেছে নেবে জাতগণনা।’’ অন্য দিকে প্রিয়ঙ্কা তাঁর পোস্টে রাজস্থানের জনতাকে ভোট দেওয়ার আবেদন করে জানান, ‘‘আপনার ভোট একটা সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য, অধিকারের জন্য, কংগ্রেসের দেওয়া নিশ্চয়তার জন্য।’’ বিজেপির অভিযোগ, ভোটপর্বের মধ্যে এ ভাবে প্রচার চালিয়ে বিধি ভেঙেছেন রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা। তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট বাতিল করার পাশাপাশি অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করেছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy