অমৃতপাল সিংহ। — ফাইল চিত্র।
জেলের মধ্য থেকে খলিস্তানি নেটওয়ার্ককে সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন অসমের ডিব্রুগড় কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার নৃপেন দাস। খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’-র প্রধান অমৃতপাল সিংহ এই জেলেই বন্দি।
গত মাসে অমৃতপালের সেলে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছিল স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, ফিচার ফোন, স্পিকার, রিমোট, স্পাইক্যাম, পেন ড্রাইভ-সহ বেশ কিছু আপত্তিকর সামগ্রী। পুলিশ সুপার ভি ভি রাকেশ রেড্ডি জানান, এর পরেই তাঁরা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালান। তাতেই বন্দিদের সঙ্গে সুপারের যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়া যায়। পুলিশের বক্তব্য, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বন্দিদের সঙ্গে জেল সুপারের এই যোগাযোগে জেল প্রোটোকল ভঙ্গ হয়েছে। তার চেয়েও বড় কথা, বিষয়টি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
জেল সুপারের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) এবং অসম কারা আইনে মামলা করা হয়েছে। কারাকক্ষে বাজেয়াপ্ত সামগ্রী আগেই ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ সুপার রেড্ডি আশাবাদী, পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে জেল সুপারের সঙ্গে বন্দিদের অবৈধ কাজকর্মের আরও কিছু প্রামাণ্য নথি তাঁদের হাতে আসবে।
বন্দি খলিস্তানপন্থীদের সেলে কী ভাবে এত সব বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি পৌঁছেছিল, বা ধৃত সুপার নৃপেন কী ভাবে এতে সহায়তা করেছিলেন, তা নিয়ে পুলিশকর্তারা এখনই বিস্তারিত জানাতে চাইছেন না। তাঁরা শুধু জানিয়েছেন, অমৃতপাল ও তার সঙ্গীদের রাখার জন্য পঞ্জাব পুলিশ অসমের উপরে আস্থা রাখায় তাদের ডিব্রুগড় কেন্দ্রীয় কারাগারে এনে রাখা হয়েছিল। তার পরেই কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নানা পর্যায়ে খতিয়ে দেখা হয়েছিল। বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছিল অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা। কারাগারের ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তাকে একেবারে নিশ্ছিদ্র করে তোলা হয়েছিল। এর পরেও অমৃতপালের মতো ‘হাই প্রোফাইল’ বন্দির নাগালে বৈদ্যুতিন যন্ত্র পৌঁছে যাওয়া যে জেলকর্মীদের সহযোগিতা ছাড়া অসম্ভব, গোড়া থেকে এই বিষয়টিকে ধরেই তদন্ত চালানো হয়েছে। সেই তদন্তে পাওয়া সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয়েছে জেলার নৃপেনকে।
কারাগারে এখন অনশন করছে অমৃতপাল ও তার সঙ্গীরা। কয়েক জন অসুস্থ হওয় হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছে। সকলেরই নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে পুলিশ সুপার রেড্ডি বলেন, বন্দিদের ভাল-মন্দ দেখার সঙ্গে সঙ্গে আইনের শাসনেও গুরুত্ব দিতে হবে। এই জায়গায় বিন্দুমাত্র আপস করা হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy