Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Assam Border

Border Dispute: অসম-মেঘালয় চুক্তিতেও মিটছে না সীমানা বিতর্ক

দুই রাজ্যই তিনটি করে সীমানা কমিটি গড়ে, বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিল।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২২ ০৬:৪০
Share: Save:

অসম ও মেঘালয়ের মধ্যে সীমানা বিতর্ক মেটাতে মঙ্গলবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে প্রথম দফার চুক্তিতে সই করেছেন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিতর্ক কাটছে না। মেঘালয়ের বিভিন্ন দল-সংগঠন স্পষ্ট জানালো, এ ভাবে দেওয়া-নেওয়ার ভিত্তিতে এলাকা ভাগাভাগির চুক্তি মানা হবে না। স্থানীয় মানুষের মতামতই হবে শেষ কথা। তাই চূড়ান্ত চুক্তির আগে স্থানীয় বাসিন্দা, সব গ্রাম সভা, জেলা পরিষদ, জমির মালিকের মত নিতে হবে।

যদিও দুই রাজ্যই তিনটি করে সীমানা কমিটি গড়ে, বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিল। সংগঠনগুলির দাবি, সেই শুনানিগুলি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে পরিচালিত হয়নি। খাসি ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ল্যাম্বকস্টার মার্নগার জানান, রাজ্য সরকার দুই দফায় তাঁদের আলোচনায় ডাকলেও কমিটি শেষ পর্যন্ত কী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে— তা জানানো হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সেই সব নথি গোপনীয়। কিন্তু যেখানে বাসিন্দাদের রাজ্য বদল হয়ে যাচ্ছে, তা কেন সকলকে জানিয়ে করা হবে না? খাসি স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যবাহী সদস্য টিটোস্টারওয়েল চাইনে জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত, গ্রামসভার আপত্তির কথা রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। হিন্নেইত্রেপ ন্যাশনাল ইয়ুথ ফ্রন্টের দাবি, শুনানির সময় অনেক ক্ষেত্রেই অসমের মানুষদের বক্তব্যই নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, চুক্তি সই করেই সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা অসাংবিধানিক। তা লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ করাতে হবে। প্রধান বিরোধী দল তৃণমূলও চুক্তির বিপক্ষে। বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা বলেন, এই চুক্তি ঐতিহাসিক সমাধানসূত্র নয়, ঐতিহাসিক বিপর্যয়। বিরোধী ও স্থানীয় মানুষের আপত্তি উড়িয়ে করা এই চুক্তি অনৈতিক, অমানবিক। তাড়াহুড়ো করে চুক্তি করে, বলপূর্বক বিতর্ক চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এর ফল ভাল হবে না। কী ভাবে সীমানা নির্ধারণ হল, কী ভাবে এক রাজ্যের
মানুষকে অন্য রাজ্যে ঠেলে দেওয়া হল, সেই প্রক্রিয়া নিয়ে কোথাও স্বচ্ছতা নেই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভিনসেন্ট পালা বলেন, মেঘালয়ের অনেক বাসিন্দা এর ফলে এসটি-র মর্যাদা হারাতে পারেন। এমনকি মেঘালয় বিজেপির একাংশও চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ।

সীমানা চুক্তি প্রসঙ্গে বুধবার অসম বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, বিতর্কিত এলাকার দুই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের নিয়ে সর্বদলীয় কমিটি তৈরি করে পাঁচ দফা পর্যালোচনা ও জনশুনানি চালানো হয়েছে। দুই রাজ্যের সীমানা অঞ্চলের ঐতিহাসিক প্রেক্ষপট, নৃতাত্ত্বিক গঠন বিচার করে, স্থানীয় মানুষের মত নিয়েই হয়েছে চুক্তি। গোটা দেশ এখন অসম-মেঘালয় মডেল অনুসরণের কথা ভাবছে। এর পর নতুন করে সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি সংসদে যাবে। পাশ করার আগে বিধানসভার মত চাওয়া হবে। তিনি আরও জানান, একই পথে অরুণাচলের সঙ্গেও সীমানা বিবাদ মেটানো হবে। স্বাধীনতার পরে অরুণাচলের ৩০০০ বর্গ কিলোমিটার সমতল এলাকা অসম পেয়েছিল। তখন থেকেই বিতর্কের জন্ম। সুপ্রিম কোর্টে মামলাও চলছিল।
এখন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মোট ১২২টি গ্রামের ৮৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। দুই রাজ্যের স্থানীয় বিধায়ক, স্থানীয় সংগঠনদের নিয়ে তৈরি আঞ্চলিক সর্বদলীয় কমিটি সরেজমিনে জরিপ চালাবে। তার ভিত্তিতে নেওয়া হবে সিদ্ধান্ত।

অন্য বিষয়গুলি:

Assam Border meghalaya border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE