অশোক লাভাসা.
তাঁর নেতৃত্বেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অশোক লাভাসা। সেপ্টেম্বরেই এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন তিনি। লাভাসার সঙ্গে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সংঘাত চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, এই কারণেই কি কমিশন থেকে সরে গেলেন তিনি?
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে তাঁর ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন লাভাসা। অনুরোধ করেছেন যাতে আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০২২ সালের অক্টোবরে অবসর নেওয়ার কথা ছিল লাভাসার। আগামী এপ্রিলে বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার অবসরের পরে তাঁর নামই পরবর্তী মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সামনে আসছিল। অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, মণিপুর, গোয়ার মতো রাজ্যগুলির বিধানসভা ভোট লাভাসার নেতৃত্বেই হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু করোনা অতিমারির সময়ে কমিশন যখন বিহারের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি চালাচ্ছে, তখনই ইস্তফা দিলেন লাভাসা। এ বার তাঁর জায়গায় বসার সম্ভাবনা আর এক নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রের।
লাভাসা হলেন দেশের দ্বিতীয় নির্বাচন কমিশনার যিনি মেয়াদ শেষের আগেই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। এর আগে ১৯৭৩ সালে নগেন্দ্র সিংহ হেগ-এর আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারপতি নিয়োগ হওয়ায় মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
তবে লাভাসার সঙ্গে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির সংঘাত গত বছর থেকেই সামনে এসেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা ও আর এক নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র ক্লিনচিট দিয়েছিলেন মোদী-অমিতকে। কিন্তু তাতে রাজি হননি লাভাসা, অন্তত ছ’বারের বৈঠকে বিরুদ্ধ মত রেখেছিলেন তিনি। বাকি দুই নির্বাচন কমিশনার রাজি না-হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মোদী-অমিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ছাড়া, ভোটের পরেই লাভাসার স্ত্রী, ছেলে ও বোনের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগ আনে আয়কর দফতর। বৈদেশিক মুদ্রা আইন ভাঙার অভিযোগে ছেলে আবিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। লাভাসার পরিবারের সদস্যরা অবশ্য সম্পত্তি নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
হরিয়ানা ক্যাডারের আমলা লাভাসা কেন্দ্রীয় অর্থসচিবের পদ থেকে অবসরের পরে ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনে যোগ দিয়েছিলেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতের কারণেই কি সরে গেলেন তিনি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy