Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Gyanvapi Mosque

জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল, রিপোর্টে বলছে এএসআই! দাবি হিন্দু পক্ষের আইনজীবীর

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন। তিনি দাবি করেন, এএসআই-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান কাঠামোর আগে ওই চত্বরে বড় হিন্দু মন্দিরের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছে।

An image of Gyanvapi Mosque

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৩৬
Share: Save:

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে বড় হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্বের হদিস মেলার কথা বলা হয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর সমীক্ষার রিপোর্টে। বৃহস্পতিবার এমনটাই দাবি করলেন হিন্দু পক্ষের এক আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন। তিনি দাবি করেন, এএসআই-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান কাঠামোর আগে ওই চত্বরে বড় হিন্দু মন্দিরের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছে। জৈনের দাবি, বর্তমান কাঠামোটি ওই আগের কাঠামোর উপরেই তৈরি। তাঁর কথায়, ‘‘এএসআই-এর রিপোর্ট বলছে, মসজিদ তৈরির সময় কিছু বদল আনা হয়েছিল কাঠামোয়। সামান্য বদল এনে একই পিলার ও প্লাস্টার ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন কাঠামো তৈরি করতে হিন্দু মন্দিরের পিলারের চরিত্রে সামান্য বদল আনা হয়েছিল।’’

শুধু তা-ই নয়, জৈন দাবি করেছেন, যে সব লিপি উদ্ধার হয়েছে, দেবনগরী, তেলুগু, কন্নড় ভাষায় লেখা সেই সব লিপি সাধারণ প্রাচীন হিন্দু মন্দিরেই দেখা যায়। জৈনের কথায়, ‘‘এএসআই রিপোর্ট বলছে, বর্তমান ও প্রাচীন কাঠামোয় বেশ কয়েকটি লিপি নজরে এসেছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষা চালানোর সময় এ রকম ৩৪টি লিপির হদিস মিলেছে। প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের গায়ে সেই সব লিপি খোদাই করা হয়েছিল। পরে সেই সব পাথর নতুন কাঠামো তৈরিতে কাজে লাগানো হয়। সেই সব লিপিতে জনার্দন, রুদ্র এবং উমেশ্বর এই দেবতার নাম পাওয়া গিয়েছে।’’

গত ১৮ ডিসেম্বর বারাণসী জেলা আদালতে মুখবন্ধ খামে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করেছিল এএসআই। তার পরেই হিন্দুত্ববাদী পক্ষের তরফে সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই মামলায় আদালত নির্দেশ দেয়, জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র রিপোর্ট হিন্দু এবং মুসলিম পক্ষকে দেওয়া হবে। এর পরেই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে এই দাবি করলেন হিন্দু পক্ষের আইনজীবী।

২০২৩ সালের ২১ জুলাই বারাণসী জেলা আদালতের বিচারক বিশ্বেস হিন্দু পক্ষের আবেদন মেনে জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘সিল’ করা এলাকার (ওজুখানা এবং ভূগর্ভস্থ জলাধারের তথাকথিত শিবলিঙ্গ) বাইরে এএসআই-কে সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মসজিদ কমিটি। গত ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার জন্য বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশের (জ্ঞানবাপী চত্বরে পুরাতাত্ত্বিক সমীক্ষা) উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। ওই সময়সীমার মধ্যে এ বিষয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। ইলাহাবাদ হাই কোর্ট গত ৩ অগস্ট ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র আবেদন খারিজ করে এএসআই সমীক্ষায় ছাড়পত্র দিয়েছিল। ৪ অগস্ট থেকে মসজিদ চত্বরের ‘সিল’ করা এলাকার বাইরে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছিল এএসআই-এর বিশেষজ্ঞ দল। আদালত ৫ অক্টোবরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও এর আগে দু’দফায় আবেদন জানিয়ে সমীক্ষার সময়সীমা বাড়িয়েছে এএসআই। ২ নভেম্বর বারাণসী আদালতকে এএসআই জানায়, সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হলেও রিপোর্ট তৈরির জন্য তাদের সময় চাই। শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরের ১৮ তারিখে রিপোর্ট জমা পড়ে আদালতে।

২০২১ সালের অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের মে মাসে মসজিদের অন্দরের ভিডিয়ো সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর। সেই সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির কাজ শেষ হওয়ার পরে ২০২২ সালের ২০ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পেয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত।

অন্য বিষয়গুলি:

Gyanvapi Mosque varanasi Hindu temple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE