প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পরীক্ষা পে চর্চা’-র খরচ তিন থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে। কিন্তু মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের খুঁজে তাঁদের আর্থিক সাহায্য করার জন্য ‘ন্যাশনাল ট্যালেন্ট সার্চ’ পরীক্ষার জন্য খরচ কমিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। আজ কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকই এই তথ্য
সংসদে দিয়েছে।
প্রতি বছরই জানুয়ারিতে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’-য় মোদী কীভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে, চাপ সামলাতে হবে তা নিয়ে স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিরোধীদের অভিযোগ, এ হল স্কুলপড়ুয়াদের সামনে মোদীর আত্মপ্রচারের কৌশল। আজ শিক্ষা মন্ত্রক লোকসভায় জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে ‘পরীক্ষা পেচর্চা’-য় মোট ৬৪.৩৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ২০২০-তে এই অনুষ্ঠানে খরচ হয়েছিল ৫.৬৯ কোটি টাকা। লোকসভা ভোটের আগের বছর, ২০২৩-এ প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান আয়োজন করতে শিক্ষা মন্ত্রক ২৭.৭০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে— একেবারে পাঁচ গুণের বেশি অর্থ। ২০২৪-এ লোকসভা ভোটের বছরে জানুয়ারিতে এই অনুষ্ঠানে খরচ হয়েছে ১৬.৮৩ কোটি টাকা।
চলতি বছর বা ২০২৫ সালে কত টাকা খরচ হয়েছিল, সেই তথ্য অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রক দেয়নি। এর আগে তথ্যের অধিকার আইনে জানা গিয়েছিল, ‘পরীক্ষা পে চর্চা’-র পরে যে শংসাপত্র বিলি হয়, শুধু তার পিছনেই সাত বছরে ৬.১৯ কোটি টাকা খরচ করেছে। ‘ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট’-কে দিয়ে সেই খরচ করানো হয়েছে।
অথচ ‘ন্যাশনাল ট্যালেন্ট সার্চ’-এ খরচ প্রতি বছর দফায় দফায় কমছে। ২০২২-২৩-এ এই পরীক্ষায় খরচ হয়েছিল ২০ কোটি টাকা। তারপরে দু’বছরে এর পিছনে খরচ কমে ১৫ কোটি টাকা এবং ১১.৫০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এই পরীক্ষায় মেধাবী পড়ুয়াদের বাছাই করে পিএইচডি পর্যন্ত বৃত্তির ব্যবস্থা করা হত।
তৃণমূল সাংসদ মালা রায়, কংগ্রেস সাংসদ মাণিকম টেগোর সংসদে জানতে চেয়েছিলেন, মোদী সরকার কি ‘পরীক্ষা পে চর্চা’-র বদলে ‘ন্যাশনাল ট্যালেন্ট সার্চ’-এ নজর দেবে? কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধরি লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রকের অর্থের অভাব নেই। তবে ‘ন্যাশনাল ট্যালেন্ট সার্চ’ পরীক্ষায় কিছু খামতি থাকায় এর পর্যালোচনা করে জাতীয় শিক্ষা নীতির অনুরূপ পরীক্ষা ব্যবস্থা তৈরির কাজ চলছে।
আর ৫ কোটির বেশি পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষকদের যোগদান থেকেই ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট। বিরোধীরা যদিও বলছেন, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের মতো স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মোদীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)