দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের পর দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতেও স্বস্তি পেলেন না অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে সোমবার আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানকে আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয়। শুনানি শেষে বিচারক কেজরীওয়ালের জেল হেফাজতের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করলেন।
গত ২১ মার্চ আবগারি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। দু’দফায় ইডি হেফাজত শেষে গত ১ এপ্রিল দিল্লির আদালত কেজরীকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সেই থেকে তিহাড় জেলেই রয়েছেন তিনি। কেজরীর গ্রেফতারি বেআইনি বলে দাবি তুলেছে আপ-সহ দেশের বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।
দিল্লি হাই কোর্টে এই মর্মে মামলাও করেন কেজরীওয়াল। দিল্লির আবগারি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এর পরেই তাঁর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন আপ প্রধান। গত ৯ এপ্রিল সেই মামলার শুনানিতে রায়দানের সময় দিল্লি হাই কোর্ট জানিয়েছিল, কেজরীর গ্রেফতারি বেআইনি ভাবে হয়নি। ইডি আদালতে জানিয়েছে, কেজরীর বিরুদ্ধে তাদের হাতে প্রমাণ রয়েছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে আবগারি মামলার ‘মূলচক্রী’ হিসাবে দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পাশাপাশি, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী যে আবেদন করেছেন, তা ‘ধোপে টিকছে না’ বলেই হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ।
গত বুধবার মামলার শুনানিতে ইডি আদালতে জানিয়েছিল, আবগারি মামলায় আপের কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চায় তারা। আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালের ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়ে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি বলে আদালতে জানিয়েছিল ইডি। পাশাপাশি, কেজরীওয়াল ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যে আবেদন করেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘এই আবেদন এমন ভাবে করা হয়েছে, যেন এটি গ্রেফতার বাতিলের আবেদন নয়, জামিনের আবেদন।’’
দিল্লি হাই কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আপ প্রধান। সোমবার বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে কেজরীর মামলা। সওয়াল করার সময় কেজরীর পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে বলেন, ‘‘আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আর্জি জানাচ্ছি। ইডির গ্রেফতারি ছিল নির্বাচনী প্রচার থেকে কেজরীওয়ালকে দূরে রাখার জন্য।’’ তবে বিচারপতি খন্নার বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, এত তাড়াতাড়ি মামলার তারিখ দেওয়া সম্ভব নয়। আগামী ২৭ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিনই ইডিকে তাদের রিপোর্ট জমা করতে হবে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
অন্য দিকে, সোমবারই তিহাড়ে গিয়ে কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে যান পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবত মান। একে অপরকে দেখতে পেলেও তাঁরা কথা বলেন ইন্টারকমের মাধ্যমে। কেজরীর সঙ্গে দেখা করার পর তিহাড় থেকে বেরিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মান। বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যের যে, এক জন দাগী আসামিকে যে সমস্ত সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়, কেজরীওয়ালকে সেটুকুও দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর দোষটা কোথায়?” সম্প্রতি আম আদমি পার্টি (আপ)-র তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, স্ত্রী সুনীতা কেজরীওয়ালের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না তিহাড় জেলে বন্দি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। শুধু তা-ই নয়, জেলে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ বার করে কেজরীকে তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হোক, এই আবেদন জানিয়ে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে মামলা হয়েছিল। সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy